শীতকাল আসলেই সব মেয়েদের হাত ব্যাগে একটি নতুন পণ্য লক্ষ্য করা যায়। নতুন নতুন মোড়কে বাজারে পাওয়া যায়। আমরা তাকে লিপবাম বা লিপজেল বলি। এটা কী আর কেনই বা শীতে ব্যবহার জরুরী তা আমরা অনেকেই জানি না। লিপবাম এক ধরনের তৈলাক্ত মলম যা আমাদের ঠোঁটকে সুরক্ষা দেয়। লিপবামে এক বিশেষ ধরনের ময়েশ্চারাইজিং উপাদান থাকে ( যেমনঃ তেল, পেট্রোলিয়াম জেলি) যা ত্বককে অতিরিক্ত পানি হারিয়ে শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
লিপবামে মোমের ন্যায় বিশেষ পদার্থ যোগ করা হয় যাতে তা ঠোঁটের সাথে লেগে থাকে। লিপবাম ঠোঁটকে শুধু শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষায় করে না, কিছুটা প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে। এই মোমের মতো পদার্থটি লিপবামকে বর্ণহীন করে যেন চকচকে লিপষ্টিক বা লিপগ্লস থেকে তাকে আলাদা করে চেনা যায়। অনেক সময় এতে কর্পূর ও মেনথল যোগ করা হয়। ফলে লিপবাম ফেটে যাওয়া ঠোঁটে মৃদু চুলকানি ও বেদনা নাশক হিসেবে কাজ করে, ঠোঁটকে মসৃন করে এবং আনন্দদায়ক অনূভুতি দেয়।
শরীরের অন্য অঙ্গের মতো আমাদের ঠোঁটের-ও রোদ থেকে সুরক্ষা প্রয়োজন। কিছু লিপবামে রোদ সুরক্ষাকারী উপাদান (SPF 30এরউপরে), অ্যান্টিঅক্সিডেন্টকোএনজাইম Q-10থাকে। এছাড়াও ভিটামিন সি, ভিটামিন ই থাকে যা স্কিন ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে ঠোঁটকে কে সুরক্ষা দেয়।
কিছু বিশেষ লিপবাম আছে যেগুলোতে পরিমিত মাত্রার অ্যান্টি এজিং উপাদান থাকে যেমন – হায়ালিউরোনিক এসিড, অ্যাটিলোকোলাজেন(ময়েশ্চারাইজার) এবং ডাইপালমিটাইল হাইড্রোক্সিপ্রলিন( বলিরেখা দূরকারী উপাদান)। এ সকল উপাদান ঠোঁট মসৃন ও টানটান রাখে, ঠোঁটের কুঞ্চন রোধ করে।
ঠোঁটের সুরক্ষা ছাড়াও আমরা আরও নানা কাজে লিপবাম ব্যবহার করি। আমরা লিপবাম হাতের কনুঁই, পায়ের গোঁড়ালি, এলোমেলো চোখের পাতাকে নরম করতে, ও ত্বকের যে সকল অংশ দ্রুত শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে পড়ে সে সকল অংশেও ব্যবহার করি। এটি খুব সহজেই লিপষ্টিক বা লিপগ্লসের সাথে ব্যবহার করা যায়।
তাই শীতের রাতে জমকালো পার্টি সাজের সময় গাঢ় লিপষ্টিক ব্যবহারের পূর্বে লিপবাম দিয়ে ঠোঁটের চার কোণায় সুরক্ষা লাইন টেনে নিন। এতে ঠোঁট শুকিয়ে বা ফেঁটে যাবে না। চাইলে আপনি স্বাভাবিক লিপগ্লসের উপরেও লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন। কারণ লিপগ্লস ঠোঁটের শুষ্কতা রোধ করলেও সঠিক পুষ্টি দিতে পারবে না। তবে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ব্র্যান্ড, মেয়াদ উত্তীর্নের তারিখ ও উপকরণ তালিকা দেখে নিবেন।
লিখেছেনঃ বৈশাখী
ছবিঃ এনিথিংইউলাভ.কম