ডিজিটাল ফটোগ্রাফির ৯ টি গাইড-লাইন!! - Shajgoj

ডিজিটাল ফটোগ্রাফির ৯ টি গাইড-লাইন!!

Dp

ছবি তুলতে কেনা পছন্দ করেন! পারিবারিক উৎসব, জন্মদিন, কলেজ বা ভার্সিটির নবীন-বরণ বা যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়র বিয়ে কিংবা বনভোজন বা স্টাডি ট্যুর অথবা ফ্যামিলি হলিডের বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দের আর অসংখ্য অমূল্য স্মৃতি আমরা সবাই চাই ধরে রাখতে আর নিজের যথাসাধ্য চেষ্টাও করি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই হয়ত আমাদের তোলা ছবি গুলো আশানুরূপ ভালো আসে না। নিজের ক্লিক করা ছবি দেখে আমাদের নিজেদেরই পছন্দ হয় না! দোষ হয় আমাদের সাধের ক্যামেরার! ডিজিটাল ফটোগ্রাফি তে খুব সহজেই কিছু গাইড লাইন ফলো করে আমরা আমাদের ছবির মান অনেক ভালো করতে পারি। এই গাইড লাইন বা টিপস গুলো আসলে সবার জন্যেই, তবে বিগিনার, অ্যামেচার বা হবিস্ট বা ট্যুরিস্টদের জন্যে গাইড-লাইন গুলো বেশি উপকারী।

০১. ক্যামেরা কে জানুনঃ

Sale • Sun Protection, Nail Art Kits, Buy 1 Get 1

    সবার আগে নিজের ক্যামেরা কে ভালো মত জানতে হবে। ডিএসএলআর (DSLR), ব্রিজ় (Bridge) কিংবা পয়েন্ট এন্ড শুট (Point & Shoot/PNS) ক্যামেরা – এগুলোর প্রত্যেকটির নির্দিষ্ট ক্ষমতা এবং নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। ডিএসএলআর দিয়েই যে শুধু ভালো ছবি তোলা যায় এই ধারণা একেবারেই ঠিক না। ব্রিজ বা পিএনএস দিয়েও অসাধারণ সব ছবি তোলা যায়। ক্যামেরার প্রয়োজনীয় ফাংশান এবং মোড গুলো সম্পর্কে ভালো আইডিয়া থাকলে ছবি তোলা একেবারেই সহজ হয়ে যায়। এর জন্যে ক্যামেরার ম্যানুয়ালটা ভালো ভাবে পড়তে হবে। বর্তমানে প্রায় সব মডেলের ক্যামেরার আনবক্সিং, রিভিউ বা ক্যামেরা টিউটোরিয়াল পাওয়া যায় ইউটিউবে। এই ভিডিও গুলো ক্যামেরা কে জানতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে।

    ০২. মোড (Mode) সিলেক্ট করুনঃ

    হাই এন্ড ডিএসএলআর থেকে শুরু করে একেবারে বেসিক পিএনএস ক্যামেরাতেও মোড ডায়াল থাকে। DSLR গুলাতে অপশান একটু বেশি থাকে আর ৩টা অপশান আছে যেটা সব DSLR এই থাকে, Manuel, Aperture Priority, Shutter Speed Priority. ক্যামেরার ব্র্যান্ড ভেদে এগুলোর সিম্বল ভিন্ন হতে পারে। এছাড়া প্রায় সকল ডিজিটাল ক্যামেরাতেই অটো, ক্রিয়েটিভ অটো, নাইট মোড, পোরট্রেইট, ল্যান্ডস্কেপ, ম্যাক্রো, স্পোর্টস ইত্যাদি মোড থাকে মোড ডায়ালে। অটোতে ক্যামেরা নিজেই সবকিছু (আপার্চার, শাটার স্পীড, ISO ইত্যাদি) ঠিক করে। কারও পোর্ট্রেইট তোলার জন্য পোর্ট্রেইট মোড ব্যবহার করা ভালো। খুব ছোট জিনিস কে বড় করে দেখানোর নাম ম্যাক্রো। অতি ক্ষুদ্র সাবজেক্টের ছবি তোলার জন্য এই মোড ক্যামেরাতে দেয়া থাকে। ব্রিজ ক্যামেরা গুলাতেও এখন ম্যানুয়াল কন্ট্রোলের সুবিধা দেয়া থাকে। ধীরে ধীরে প্রত্যেকটা মোডেই ছবি তোলার প্র্যাক্টিস করলে খুব দ্রুত কখন কোন মোড ব্যবহার করতে হবে সেই স্কিল চলে আসে।

    photo 1

    ০৩. ক্যামেরা শেক (Shake) না করাঃ

    photo2

    আমরা অনেক সময় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে ক্যামেরা শেক করে ফেলি যা আমাদের তোলা ছবিতেও প্রভাব ফেলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছবি ব্লারড (Blurred) বা ঝাপসা আসে। সাধারণত ঘরোয়া অনুষ্ঠান বা ট্যুরে ফটো তোলার সময় ফটো ব্লার আসলে তা আমাদের মন খারাপের কারণ হয়ে যায়। তাজমহল বেড়াতে গিয়ে তাজমহলে ছবি তুলে যদি দেখি তাজমহল ঝাপসা তাহলে পুরা ট্যুরই বৃথা !! সুতরাং ক্যামেরা শেকিং যত কম হবে ছবির মান ততই ভালো আসবে। বর্তমানে প্রায় সব ব্রিজ আর PNS ক্যামেরাতে এন্টি-শেকিং (Anti-Shaking) অপশান দেয়া আছে। আর DSLR এর ক্ষেত্রে এটা লেন্সের উপর নির্ভর করে। তবে ক্যামেরা হোল্ডিং এর উপরেও শেক করা নির্ভর করে।

    ০৪. দ্যা রুল অব থার্ডঃ

    রুল অব থার্ড (Rule of Third) ফটোগ্রাফির একটা বেসিক কম্পোজিশনাল রুল। কোন ছবি তোলার পর তার অনুভূমিক এবং লম্বিক বরাবর তিন ভাগে ভাগ করলে অনুভূমিক এবং লম্বিক লাইন গুলো যে জায়গায় ছেদ করে ছবির সাবজেক্ট বা মূল বিষয় তার আশেপাশে থাকলে ছবি অনেক বেশি সুন্দর হয়। এটা রুল অব থার্ড। তবে এ নিয়ম যে সব সময়ই মানতে হবে তা নয়, তবে সাধারাণত সিঙ্গেল সাবজেক্টের ফটো বা পোর্ট্রেইট এই রুলে তুললে ভালো ছবি উঠে। রুল অব থার্ড বোঝার জন্যে আর প্র্যাকটিস করার জন্য ক্যামেরার ডিসপ্লে মেন্যু থেকে গ্রিড ভিউ অন করা যেতে পারে।

    photo 3

    ০৫. এঙ্গেল ও ফ্রেমিং

    ফটো তোলার ক্ষেত্রে একই সাবজেক্টের জন্যে সব সময় একই ফ্রেমে ফটো তুললে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বোরিং লাগে। সেক্ষেত্রে ফ্রেমিং-এ বৈচিত্র্য আনলে ফটো দেখতে ভালো লাগে। পোর্ট্রেইট তোলার সময় বা সিঙ্গেল সাবজেক্ট ফটোর ক্ষেত্রে টিল্টেড ফ্রেমিং-এ ফটো তোলা যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে লো-এঙ্গেল, ফটোকে আলাদা বৈচিত্র্য এনে দেয়। আবার ফটো তোলার সময় সাবজেক্ট কে কোণাকুণি তথা ডায়াগোনালি ফ্রেমে সেট করলে তা ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

    1240178_10152202438149815_1239601162_n(1)

    ০৬. পয়েন্ট অব ইন্টারেস্টঃ

    “Point of interest” আর “Center of interest”একই জিনিস। Center of interest হচ্ছে একটি ফটোর মূল আগ্রহের কেন্দ্র। তবে তার মানে এটা না যে Center of interest শুধু মাত্র ছবির একেবারে সেন্টারে বা মধ্যখানেই অবস্থান করে। “Point of interest” দ্বারা এ ব্যাপারটা কে একটু ক্লিয়ার করা হয়। একটা ফটোতে একাধিক সাবজেক্ট থাকতে পারে। সুতরাং ছবি তোলার সময় আমাদের সাবজেক্ট কে নির্দিষ্ট করতে হবে এবং তাকে “Point of interest” মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। যেমন একাধিক ব্যক্তি একটি ফটোতে আছেন, কিন্তু যেই ব্যাক্তি সরাসরি ক্যামেরা এর দিকে তাকিয়ে আছেন তিনিই পয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট। আবার কোন অনুষ্ঠান, যেমন বিয়ে বাড়িতে গ্রুপ ফটোতে অনেক ব্যক্তি থাকলেও সেন্টার অব ইন্টারেস্ট কিন্তু বর এবং কনে। তবে ফটো তে যে সেন্টার অব ইন্টারেস্ট বা পয়েণ্ট অব ইন্টারেস্ট থাকতেই হবে এমন কোন কথা নেই।

    photo 5

    ০৭. ISO এর ব্যবহারঃ

    ISO ক্যামেরার সেন্সরের সেন্সেটিভিটি নির্দেশ করে। ISO যত বাড়ানো হয় ততই ছবি উজ্জ্বল হতে থাকে আর ছবিতে গ্রেইন বা নয়েজ দেখা দেয়। তবে, ইনডোর ইভেন্টে, লো-লাইটে বা রাতের বেলা ISO বাড়িয়ে বা কমিয়ে ফ্লাশ ছাড়াই ছবি তোলা যায়। ISO বাড়িয়ে অনেকেই ছবিতে একটি গ্রেইনি ইফেক্ট তৈরি করেন, যা ছবি কে আলাদা একটা বৈচিত্র দেয়। তবে অতিরিক্ত আলোতে বা দিনের বেলায় (যখন সূর্যের আলো পর্যাপ্ত) অতিরিক্ত ISO ছবিকে ওভার এক্সপোজড করে দেয়। বর্তমানে প্রায় সব ক্যামেরাতেই ISO কন্ট্রোল করা যায়। PNS গুলোতে ISO 200 থেকে 1600 পর্যন্ত হতে পারে। DSLR গুলোতে ISO আরও অনেক বেশি থাকে। ক্যামেরা ভেদে ISO 50 থেকে 12800 পর্যন্ত বা এর থেকে বেশি হতে পারে। দিনের বেলা তে আউট – ডোরে সাধারণত ISO 100, 200 বা 400 ব্যবহার করা হয়। PNS ক্যামেরাতে ISO অটো রাখা ভালো।

    photo6

    photo 7

    ০৮. অটো ফোকাসিং:

    প্রায় সব ক্যামেরাতেই অটো ফোকাসিং আছে। DSLR এ তো আছেই, আর PNS ক্যামেরা গুলাতে ফোকাসিং সাধারাণত অটোমেটিক হয়। ছবি তোলার সময় চেষ্টা করতে হবে যেন ফোকাসিং টা ঠিক হয়। পোরট্রেইট তুলার সময় বা গ্রুপ ফটো তোলার সময় সাবজেক্টের চোখে ফোকাস করলে ভালো হয়। অনেক সময় সফট ফোকাসিং বা হালকা আউট অব ফোকাস ছবিকে একটি ড্রামাটিক সেন্স দেয়।

    ০৯. কন্টিনিউয়াস শুটিং:

    প্রায় সব ক্যামেরাতেই Continuous Shooting বা Continuous Firing মোড আছে। এই মোড সিলেক্ট করে শাটার বা টান ধরে থাকলেই এক সাথে অনেক গুলো ফটো তুলে ফেলে। সাধারণত কোন একশান সিকোয়েন্স, মনে ঘটতে থাকা কোন কিছুর ফটো তুলতে বেশ উপকারী। যেমন – কোন কন্সার্টে আমাদের প্রিয় গিটারিস্ট এর ফটো তুলতে এই মোড ব্যবহার করে আমরা ভালো ছবি পেতে পারি আর  ছোট বাচ্চাদের ফটো তুলতে এই কন্টিনিউয়াস শুটিং খুব ভালো কাজ দেয়।

    ছবি তোলার নির্দিষ্ট বা একেবারে ধরা বাঁধা নিয়ম নেই। অনেক ক্ষেত্রে রুল ব্রেক করেই অনেক অসাধারণ ফটো পাওয়া যায়। সুতরাং, মন খুলে ক্যামেরা হাতে নিন আর ক্লিক করুন।

    হ্যাপি ক্লিকিং!

    লিখেছেনঃ দুর্লভ

    ছবিঃ

    ফিচার ইমেজ – লাইফহ্যাকার.কো.ইন

    অন্যান্য ছবি – ইন্টারনেট ও ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে

    3 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort