অ্যারোমাথেরাপি হলো এক ধরনের উপশমক প্রক্রিয়া, যা কিনা অ্যারোমাটিক এসেনসিয়াল তেলের মাধ্যমে আপনার শারীরিক আর মানসিক উন্নতি ঘটায়। অ্যারোমা ফেসিয়ালের ফলে আপনার ত্বক আরও উজ্জ্বল কোমল হয়ে ওঠে। অ্যারোমা অয়েলগুলো খুবই ঘন, তাই ফেসিয়ালের জন্য ব্যবহার করতে হবে খুবই সাবধানে। সব স্কিন টাইপ এর নারী এই ফেসিয়াল করতে পারবেন। কিন্তু উপাদান একটু ভিন্ন হবে। যেহেতু সবই প্রাকৃতিক উপাদান তাই বয়সেরও কোন বাঁধা ধরা নিয়ম নেই। তবে ১৮ বছর বয়স হলে করা ভালো। আজ আমি বিভিন্ন ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে আলাদা যে যে উপাদান ব্যবহার করতে হবে তা দিয়েই অ্যারোমা ফেসিয়ালের পদ্ধতি বলে দেবো।
৫ ধরণের ত্বকের যত্ন নিতে অ্যারোমা ফেসিয়াল
১. তৈলাক্ত ত্বকের অ্যারোমা ফেসিয়াল
ধাপ ১ – ক্লিনজিং
১/২ চা চামচ গুঁড়ো দুধ, ২ ফোঁটা লেমন অয়েল, চন্দনের তেল, ২ চা চামচ দই দিয়ে পেস্ট বানিয়ে গলায় এবং মুখে ২ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন। তারপর টিস্যু অথবা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন।
ধাপ ২ – টোনিং
মুলতানি মাটি, ২ ফোঁটা রোজ মেরি অয়েল, পুদিনা পাতার তেল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
ধাপ – ৩ ময়েশ্চারাইজিং
সুগন্ধি বিহীন কোন ময়েশ্চারাইজার নিন। তাতে ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশান। হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ত্বকে লাগান।
২. শুষ্ক ত্বকের জন্য অ্যারোমা ফেসিয়াল
ধাপ ১ – ক্লিনজিং
১ চা চামচ গুঁড়া দুধ, ১ চিমটি চিনি, ৪ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল, ৪ ফোঁটা রোজ অয়েল মিশিয়ে বানানো পেস্ট মুখে ও গলায় ম্যাসাজ করুন। তারপর টিস্যু অথবা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন।
ধাপ – ২ টোনিং
কিছু বাদামের গুঁড়ো নিন। এর সাথে ১ ফোঁটা লেমন অয়েল আর ৩ ফোঁটা গোলাপ জল দিন। এবার এটা মুখে অ্যাপ্লাই করুন।
ধাপ – ৩ ময়েশ্চারাইজিং
সুগন্ধি বিহীন কোন ময়েশ্চারাইজার নিন। তাতে ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল আর রোজ অয়েল মিশান। হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ত্বকে লাগান।
৩. স্বাভাবিক ত্বকের জন্য অ্যারোমা ফেসিয়াল
ধাপ – ১ ক্লিনজিং
চন্দনের গুঁড়ো, বাদামের গুঁড়ো, তরল দুধ সব গুলোই ১ চা চামচ করে নিন। তারপর মুখে ও গলায় ম্যাসাজ করুন ২ মিনিট পর টিস্যু অথবা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন।
ধাপ – ২ টোনিং
১ চা চামচ বাদামের গুঁড়োর সাথে ১/২ চা চামচ মধু আর ১ ফোঁটা রোজ অয়েল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন।
ধাপ – ৩ ময়েশ্চারাইজিং
সুগন্ধি বিহীন কোন ময়েশ্চারাইজার নিন। তাতে ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল আর ২ ফোঁটা রোজ অয়েল মিশান। হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ত্বকে লাগান।
৪. মিশ্র ত্বকের জন্য অ্যারোমা ফেসিয়াল
ধাপ – ১ ক্লিনজিং
১ চা চামচ গুঁড়ো দুধ, ২ ফোঁটা রোজ মেরি অয়েল এবং ১ ফোঁটা জুনিপার অয়েল দিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর মুখে ও গলায় ম্যাসাজ করুন ২ মিনিট পর টিস্যু অথবা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন।
ধাপ – ২ টোনিং
তৈলাক্ত অংশের জন্য-১ চা চামচ মুলতানি মাটি নিয়ে তার সাথে ২ ফোঁটা রোজ মেরি আর পুদিনা অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক অংশের জন্য – ১/২ চা চামচ বাদামের গুঁড়ো, ১ ফোঁটা লেমন অয়েল, ১ ফোঁটা রোজ অয়েল একসাথে মিশিয়ে বানানো পেস্টটি মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
ধাপ – ৩ ময়েশ্চারাইজিং
ভালো কোন ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম নিয়ে তাতে ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগান।
৫. সেনসিটিভ ত্বকের জন্য অ্যারোমা ফেসিয়াল
ধাপ – ১ ক্লিনজিং
কুসুম গরম পানিতে ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল, ১/২ চা চামচ মিল্ক পাউডার মিশিয়ে পেস্ট বানান। তারপর মুখে ও গলায় ম্যাসাজ করুন ২ মিনিট পর টিস্যু অথবা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন।
ধাপ – ২ টোনিং
১ চা চামচ মুলতানি মাটি ,৩ ফোঁটা ক্যামোলি অয়েল এবং মধু দিয়ে বানানো পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে নিন। তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ধাপ – ৩ ময়েশ্চারাইজিং
সুগন্ধি বিহীন কোন ময়েশ্চারাইজার নিন। তাতে ৫ ফোঁটা রোজ অয়েল মিশিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে মুখে লাগান।
বিভিন্ন তেলের আছে বিভিন্ন গুনাগুণ। আপনার ফেসিয়াল মাস্কে কয়েক ফোঁটা অ্যারোমাটিক অয়েল আপনার ত্বককে নরম আর বিশুদ্ধ করে। এমন কি বিষণ্ণতা কমিয়ে জাগিয়ে তোলে চনমনে অনুভূতি।
ছবিঃ সংগৃহীত