স্বাস্থ্যকর পানীয় বলতে আমরা বুঝি যে সকল পানীয়তে ভিটামিন, অ্যামাইনো এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ভেষজ উপাদান থাকে যা গ্রহণের ফলে শরীর যথেষ্ট পরিমাণ পুষ্টি লাভ করে। যদিও এ সকল পুষ্টি উপাদান খাদ্যের মাধ্যমেও পাওয়া সম্ভব কিন্তু পানীয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করা সহজতর। স্বাস্থ্যকর পানীয় ত্বকে পানির চাহিদা বজায় রাখতে সাহায্য করে, ত্বকের বলিরেখা, ব্রণ, মেছতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে। ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃন ও সতেজ রাখে।
কেন স্বাস্থ্যকর পানীয়? বিশেষজ্ঞদের মতে সব সময় সুষম খাদ্য গ্রহণ করা বা কতটুকু খাবার পর্যাপ্ত তা পরিমাপ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এছাড়া নানা রকম রোগ, হজমের সমস্যা, এলার্জির সমস্যার কারণেও অনেক খাবার গ্রহণ সম্ভব হয় না। সুষম খাবার খায় এমন অনেকেই চুল, ত্বকের সমস্যায় ভোগেন। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর পানীয় পুষ্টি চাহিদা পূরনের সহজতর মাধ্যম। পানীয় বা পানযোগ্য খাদ্য শরীর সহজেই শোষণ করতে পারে, ফলে ভিটামিন, মিনারেলসের মতো পুষ্টি উপাদান দ্রুত ত্বকে ও শরীরে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, যে সকল খাদ্য উপাদান আমাদের জন্য আবশ্যক তার সবকিছুই পানীয়র দ্বারা গ্রহণ বা পূরন সম্ভব নয়। এক গ্লাস স্বাস্থ্যকর পানীয় স্বাভাবিক পানির বিকল্প হতে পারে না এবং অবশ্যই তাতে ১৫ গ্রামের বেশি চিনি যোগ করা ঠিক হবে না। এক্ষেত্রে ঘরে তৈরী পানীয়ই হতে পারে একমাত্র বিকল্প, তবে আজকাল বাজারে হরেক ব্র্যান্ডের হেলথ ড্রিংক পাওয়া যায়। নাম যাচাই করে কিনে নিতে পারেন।
আমাদের দৈনিক নূন্যতম ১২-১৫ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। শরীরে পানির অভাব না থাকলে তা ত্বক ও শরীরের অন্য কোষ কলার জন্যও উত্তম। যাদের প্রচুর পানি পানের অভ্যাস আছে তারা চাইলেই ফল বা সবজির মাধ্যমে পুষ্টি চাহিদা পূরন করতে পারেন। আমাদের দেশে প্রতিটি ঋতুতেই কোন না কোন রসালো ফল পাওয়া যায়। ফল বা সবজির তৈরি সালাদ-ও হতে পারে বিকল্প। তবে পুষ্টিবিদগণের গবেষনার ফল বলে যে, একটি অন্যতম বিকল্প পানীয় হতে পারে চা। যারা দৈনিক দুই থেকে তিন কাপ সবুজ বা কালো চা পান করেন তাদের ত্বকের ক্যান্সার হবার সম্ভবনা ২০-৩০% কমে যায়। চায়ে থাকে পলিফেনল। এটি একটি ঊদ্ভিজ্জ রাসায়নিক উপাদান।পলিফেনল ত্বক কে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। পানীয়তে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান ত্বককে ভেতর ও বাইরে দু দিক থেকেই স্বাস্থ্যকর থাকতে সাহায্য করে।
সঠিক পুষ্টি আমাদের ত্বকের জন্য শুধু উপকারী নয় বরং বলা যায় যে এটি অত্যাবশ্যক। তার মানে এই নয় যে আপনি এক কেজি শশা খেয়ে ফেললে আপনার কোমরের মেদ সব ঝরে গেল। এমনি ভাবে পানীয়তে একগাদা ভিটামিন যোগ করে পান করা মানেই ত্বকের চেহারা বদলে যাবে, এমন ভাবাটা নিশ্চিত ভাবেই বোকামি। আপনাকে সঠিক খাদ্য ও স্বাস্থ্যকর পানীয় গ্রহণ চালিয়ে যেতে হবে। ত্বকের উজ্জ্বল ভাবটা ধীরে ধীরে টের পাবেন।
লিখেছেনঃ বৈশাখী
ছবিঃ সাটারস্টক