আমরা সকলেই ভ্যাসলিনের সঙ্গে পরিচিত। এমন কেউ হয়ত নেই যে ভ্যাসলিন সম্পর্কে জানে না বা ব্যবহার করেনি। বছরের পর বছর ধরে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই ভ্যাসলিন। তবে এর গতানুগতিক ব্যবহারের বাইরেও এর আরও যেসব ব্যবহার রয়েছে সে সম্পর্কে আমরা হয়ত খুব কমই জানি। তাই ভ্যাসলিনের বিভিন্ন উপকারী দিক সম্পর্কে আপনাদের জানাতেই আজকের এই লেখা।
ভ্যাসলিনের গুণাগুণঃ
– ভ্যাসলিন ঠোঁটের জন্য খুব ভালো এক্সফলিয়েটর হিসেবে কাজ করে। নরম ও সুন্দর ঠোঁট পেতে ঠোঁটে ভ্যাসলিন লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর একটি টুথব্রাশ দিয়ে হালকা করে ঘষুন। এরপর নরম একটি কাপড় দিয়ে ঠোঁট মুছে ধুয়ে ফেলুন। এটি ঠোঁটের মরা কোষ দূর করে ঠোঁটকে নরম করে।
– ভ্যাসলিনের সাহায্যে তৈরি করতে পারেন চকোলেট লিপগ্লস। কোকোয়া পাউডার বা চকোলেটের এক টুকরার সাথে ভ্যাসলিন মিক্স করে একটি ছোট কৌটায় নিয়ে ওভেন বা চুলার সাহায্যে গরম করুন। যখন মিশ্রণটি গলে গিয়ে ভালো মত মিক্স হবে তখন ঠাণ্ডা করে সংরক্ষণ করুন।
– পারফিউম দেয়ার আগে হাতে বা গলায় ভ্যাসলিন লাগিয়ে সেখানে পারফিউম স্প্রে করুন। ভ্যাসলিন অনেকক্ষণ পর্যন্ত পারফিউমের সুগন্ধ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
– চোখের পাপড়ি ঘন ও লম্বা করতে ব্যবহার করতে পারেন ভ্যাসলিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের পাপড়িতে ভ্যাসলিন লাগান এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন।
– ভ্যাসলিনের সাহায্যে খুব সহজেই ঘরে বসে তৈরি করতে পারেন ক্রিম ব্লাশার। পছন্দের কালারের লিপস্টিকের সাথে ভ্যাসলিন ভালো মতো মিশিয়ে একটি কৌটায় সংরক্ষণ করুন। ঠিক একই ভাবে ভ্যাসলিন এবং আই শ্যাডো মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন পছন্দের কালারের আই লাইনার।
– হাতের আঙ্গুলে টাইট হয়ে লেগে থাকা আংটি খুলতে সেখানে ভ্যাসলিন লাগান। সহজেই খুলে যাবে আংটি।
– মেক-আপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ভ্যাসলিন। সেক্ষেত্রে একটি তুলার মধ্যে ভ্যাসলিন নিয়ে মুখে ধীরে ধীরে ঘষে মেক-আপ তুলু্ন। এরপর ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
– কাপড় থেকে মেক-আপের দাগ তুলতে ধোয়ার আগে সেখানে ভ্যাসলিন লাগান। ধীরে ধীরে দাগ উঠে যাবে।
– আপনার প্রিয় বডি লোশন যদি শেষ হওয়ার পথে থাকে তাহলে এর সাথে ভ্যাসলিন মিক্স করে বাড়িয়ে নিতে পারেন এর স্থায়িত্বকাল। বডি লোশনের সুগন্ধ অটুট থাকবে এবং আরও কিছুদিন ব্যবহার করতে পারবেন নিজের পছন্দের লোশন।
– হাতের কনুই এর খসখসে চামড়া নরম ও মসৃণ করতে বা গোড়ালির ফাটা রোধ করতে সেখানে নিয়মিত ভ্যাসলিন লাগান।
– নখ ভাঙ্গা থেকে রক্ষা পেতে এবং নখকে শক্ত করতে ভ্যাসলিনের সাথে গ্লিসারিন মিক্স করে নখে লাগান অথবা শুধু ভ্যাসলিনও ব্যবহার করতে পারেন।
– চুলের আগা ফাটা রোধ করতে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলের আগায় একটু ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিন। ধীরে ধীরে চুলের আগা ফাটা কমে যাবে।
– যাদের ত্বক খুব বেশি শুষ্ক তারা ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বককে প্রয়োজনীয় ময়েশচার করে ত্বককে নরম করে।
– যাদের কানের দুল পরতে সমস্যা হয় বা কানের ছিদ্রে ব্যথা অনুভব করেন তারা পরার আগে সেখানে ভ্যাসলিন মেখে নিন। তাহলে খুব সহজেই কানের দুল পরতে পারবেন এবং ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।
– চামড়ার জুতা বা ব্যাগে উজ্জ্বলতা আনতে অল্প পরিমাণ ভ্যাসলিন দিয়ে পলিশ করুন।
লিখেছেনঃ নাহার
ছবিঃ পাম্মিব্লগসবিউটি.কম