ইদানিং বিউটি ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে আলোচিত প্রসাধনী হলো BB এবং CC ক্রিম। যেকোনো দোকানেই যান না কেন BB অথবা CC ক্রিম চোখে পড়বেই, নানা রকম ব্র্যান্ডে, নানা রকম ফরমুলাতে, নানা রকম শেডে আর নানা রকম দামে। এই ক্রিমগুলোর দিকে তাকালে নিশ্চয়ই মনে হয় এগুলো বিশেষত্ব আসলে কি আর এদের মাঝে পার্থক্যই বা কি?আজকের লেখার বিষয়বস্তু সেটাই।
[picture]
BB ক্রিম:
ব্লেমিশ বাম অথবা বিউটি বাম এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল BB ক্রিম। যখন এই ক্রিম প্রথম তৈরি হয় তখন এটি স্কিন লেজার ট্রিটমেন্ট এর জন্য ব্যবহার করা হত। কিন্তু বর্তমানে BB ক্রিম বাজারে আনা হয়েছে মাল্টি-টাস্কার ক্রিম হিসেবে। BB ক্রিম বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলোর কথা অনুযায়ী এই ক্রিম হলো ত্বক পরিচর্যা এবং মেক-আপ উপাদানের সংমিশ্রণ। তারা দাবী করেন এই ক্রিম আপনাকে দেবে অল-ইন-ওয়ান স্কিন কেয়ার। এই ক্রিম ত্বকের অসমান রঙ থেকে শুরু করে রোদ থেকে ত্বককে বাঁচানো, ব্লেমিশ/ব্রণ/স্পট প্রতিরোধ করা, ময়েশ্চারাইজ করা, মেক-আপের জন্য ত্বককে তৈরি করা ইত্যাদি যাবতীয় কাজের সমাধান। এটির একমাত্র নেগেটিভ দিক হলো বাজারে এই ক্রিমের যেকোনো স্কিন টোনের জন্য পর্যাপ্ত শেড নেই।
CC ক্রিম:
কালার কারেকশন অথবা কমপ্লেকশন কেয়ার এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো CC ক্রিম। BB ক্রিমের পর CC ক্রিম বাজারে আসে মূলত আগেরটির কমতিগুলো পুরণ করার জন্য। যখন ব্যবহারকারীরা অভিযোগ করেন যে BB ক্রিম সব রকম স্কিন টোনের সাথে যাচ্ছে না, স্কিন তৈলাক্ত করে ফেলছে, ঠিক মতো মেক-আপের কাভারেজ দিচ্ছে না তখন এই সকল সমস্যার সমাধান নিয়ে আসে CC ক্রিম। CC ক্রিমের মুস এর মত টেক্সচার স্কিন এ আরও সুন্দর এবং সহজ ভাবে ব্লেন্ড হয়, এটি BB ক্রিমের তুলনায় অধিক মেক-আপ কাভারেজ দেয়, স্কিন তৈলাক্ত করা ছাড়াই অধিক সময় স্থায়ী। উপাদানের কথা বলতে গেলে, উৎপাদনকারীরা বলেন, CC ক্রিমে যোগ করা হয়েছে এমন একটি উপাদান যা স্কিনের কোলোজেন বাড়াতে সাহায্য করবে। কোলোজেন স্কিনের মসৃণতা, উজ্জ্বলতা, এবং স্কিন কোষের আয়ু বাড়ায়।
BB ক্রিম/ CC ক্রিম, যেভাবে কাজ করে:
সত্যিকার অর্থে BB ক্রিম / CC ক্রিম হলো সাধারণ ময়েশ্চারাইজার এর সাথে ফাউন্ডেশন ও সানস্ক্রিনের সংমিশ্রণ। তার মানে এই নয় যে এগুলো আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিনের পরিবর্তক হতে পারে। কারণ এর মাঝে থাকা উপাদানগুলো আপনাকে সুরক্ষা দেবার জন্য যথেষ্ট নয়। এই ক্রিমগুলো শুধু মাত্র আপনি ফাউন্ডেশনের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন। তারপরও আপনার মুখে যদি গাঢ় দাগ থেকে থাকে তাহলে কনসিলারের কোনো বিকল্প নেই। BB ক্রিম / CC ক্রিম দুটোই মেক-আপের বেইস প্রাইমার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে।
– BB ক্রিম/ CC ক্রিম এর অন্যতম নেতিবাচক দিক হলো এগুলো শুধুমাত্র এক অথবা দুটি শেডে আসে যা সব ধরনের স্কিন-টোনের সাথে মিশে যাওয়ার কথা থাকলেও তা যায়না।
– BB ক্রিম/ CC ক্রিম মেয়েরা এমনকি ছেলেদের কাছেও বেশ আকর্ষণীয় প্রোডাক্ট কারণ এগুলো সহজে ব্যবহার উপযোগী, মাল্টি -পারপাস, এমনকি তাদের জন্য অন্যতম যারা নো-মেক-আপ লুক পছন্দ করে।
BB ক্রিম/ CC ক্রিম কেনার টিপস:
কেনার আগে মনে রাখবেন…
- হাতের উল্টো পাশে স্কিন ও ক্রিমের রঙ মিলিয়ে নিন। ক্রিমের টেক্সচার খেয়াল করুন যে আপনার স্কিন এর সাথে ঠিক মত মিশছে কিনা।
- তৈলাক্ত স্কিনের জন্য লুমিনাস এবং শিমার ফরমুলা বাদে কিনুন। ম্যাট এবং জেল বেইসড ফর্মুলা তৈলাক্ত স্কিনের জন্য সবচেয়ে ভালো।
- ড্রাই এবং নরমাল স্কিনের জন্য লুমিনাশ, শিমার, ক্রিমি যেকোনো ফর্মুলা বেছে নিতে পারেন।
BB ক্রিম কিনবেন যদি আপনার হয়…
– সেন্সেটিভ স্কিন
– ড্রাই স্কিন
– রোদে পোড়া স্কিন
– ব্রণ অথবা একনে স্কিন
CC ক্রিম কিনবেন যদি আপনার হয়…
– তৈলাক্ত স্কিন
– অসমান স্কিন টোন
– ব্লেমিশ/ দাগ
– ফাইন লাইন এবং বয়স জনিত ভাঁজ
ব্যবহারের ক্ষেত্রে:
BB ক্রিম / CC ক্রিম একটু খানিতেই অনেক দিন চলে যায়। একবারে অল্প করে পুরো মুখে মিশিয়ে দিন। কিছুটা বেশি কাভারেজ চাইলে দ্বিতীয় বার এপ্লাই করুন। কিন্তু মনে রাখবেন যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে তা মুখে মিশবে না উলটো মাস্কের মত দেখাবে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক হোন। BB ক্রিম / CC ক্রিম চাইলে আপনি ব্রাশের সাহায্যেও লাগাতে পারেন।
প্রসঙ্গত প্রোডাক্টগুলো সম্পর্কে আপনাদের জিজ্ঞাসা থাকতেই পারে। কোথা থেকে পাবেন? আদৌ আসল পণ্য নাকি নকল পণ্য কিনছেন? দাম কত? আপনার সুবিধার্থে সাজগোজ পুরো প্রক্রিয়াটি সহজতর করে তুলেছে SAPPHIRE ( সাফায়ার) এর মাধ্যমে। BB ক্রিম বা CC ক্রিম পণ্য সম্পর্কে জানুন এবং কিনুন এই লিঙ্ক-এ ক্লিক করে।
লিখেছেন – তামান্না ইসলাম
ছবি – কলেজগ্লস.কম