মেক-আপের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে হাইলাইটার। খুব সুন্দর করে সাজুগুজু করার পর সঠিক ভাবে হাইলাইটার দিতে না পারলে বা ভুল জায়গায় হাইলাইট করার মাধ্যমে সুন্দর দেখানোর পরিবর্তে সবার কাছে হাসির পাত্র হয়ে উঠতে পারেন আপনি। আবার ত্বকের ধরন এবং স্কিন টোন বুঝেও কেনা চাই হাইলাইটার। তাই হাইলাইটার কেনা এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে চাই কিছু সতর্কতা। আজকে আপনাদের জন্য হাইলাইটার দেয়ার জায়গা, নিয়ম এবং কোন ত্বকে কেমন হাইলাইটার ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে লেখা হলো।
[picture]
কোথায় হাইলাইট করবেনঃ
হাইলাইটার ব্যবহারের প্রধান নিয়মই হচ্ছে এটি মুখের এমন সব জায়গায় অ্যাপলাই করা যেসব জায়গায় লাইট সবচেয়ে বেশি প্রতিফলিত হয়। এতে করে ঐসব জায়গা হাইলাইট করার মাধ্যমে চেহারায় উজ্বল ভাব আসে।
যেসব জায়গায় হাইলাইট করবেন সেগুলো হচ্ছেঃ
– চিক বোন বা গালের উঁচু হাড়ে
– ভ্রু এর একটু উপরে, ভ্রু এর নীচের হাড় বা ব্রো বোন-এ এবং চোখের ভেতরের কোনায়
– কপালের মাঝখানে
– উপরের ঠোঁটের খাঁজ কাটা অংশে
– ঠোঁটের নীচের অংশে
কেমন হাইলাইটার কিনবেনঃ
বিভিন্ন রকমের হাইলাইটার রয়েছে, যেমন – ক্রিম, লিকুইড এবং পাউডার হাইলাইটার। এমন একটি হাইলাইটার বাছাই করুন যা আপনার ত্বকের সাথে মানানসই এবং যা আপনাকে কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট দেবে। যেমন – যদি আপনি চেহারায় চকচকে ভাব আনতে চান সেক্ষেত্রে ক্রিম বা লিকুইড হাইলাইটার ব্যবহার করুন। আর যদি হালকা উজ্জ্বল আভা আনতে চান তাহলে পাউডার হাইলাইটার ব্যবহার করুন। এছাড়াও ত্বকের ধরন অনুযায়ী হাইলাইটার কিনুন। যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত তাদের জন্য পাউডার হাইলাইটার ব্যবহার করাই উত্তম। কারণ তৈলাক্ত ত্বকে ক্রিম হাইলাইটার ব্যবহারে ত্বক আরও বেশি তৈলাক্ত দেখায়। আর যাদের ত্বক শুষ্ক তারা ক্রিম হাইলাইটার ব্যবহার করুন। বিভিন্ন কালারের হাইলাইটার রয়েছে, যেমন – হালকা গোলাপি, গোল্ডেন এবং সিলভার কালারের শিমারি হাইলাইটার। আপনার পছন্দ অনুযায়ী কালার নির্বাচন করতে পারেন। তবে সাধারণত ফর্সা ত্বকে গোলাপি বা পিংক টোনড হাইলাইটার বেশি মানায় এবং মিডিয়াম স্কিন টোনে গোল্ডেন কালার হাইলাইটার খুব ভালো মত যায়।
কীভাবে হাইলাইটার অ্যাপলাই করবেনঃ
– ক্রিম বা লিকুইড হাইলাইটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে হাতের ডগায় অল্প পরিমাণ নিয়ে হাইলাইট করার জায়গায় অ্যাপলাই করুন। প্রথমেই খুব বেশি নিলে হাইলাইটার ভালো মতো বসবে না এবং দেখতেও খারাপ লাগবে। তাই প্রথমে খুব অল্প পরিমাণে নিয়ে শুরু করুন। পরে আরও দরকার হলে আবার নিয়ে লাগান। ক্রিম হাইলাইটার চেহারায় শাইনি ভাব নিয়ে আসে।
– পাউডার হাইলাইটারের ক্ষেত্রে একটি ব্রাশে পাউডার লাগিয়ে যেসব জায়গা হাইলাইট করতে চান সেখানে ব্রাশ দিয়ে হাইলাইটার ভালো মতো ব্লেনড করে নিন। যত বেশি ভালো মতো ব্লেনড করতে পারবেন আপনার মেক-আপ ততটাই ন্যাচারাল দেখাবে এবং চেহারায় সুন্দর গ্লো আসবে।
কিছু হাইলাইটারের নামঃ
-MUA Undress Your Skin Highlighting Powder:
এটি পিংক টোনড হাইলাইটার এবং খুব পিগমেনটেড। আপনি যদি কম বাজেটের মধ্যে কিনতে চান তবে MUA ব্র্যান্ডের এই হাইলাইটার হতে পারে আপনার জন্য বেস্ট অপশন। এর দাম হচ্ছে ৩ পাউন্ড। দেশে পাবেন না। অনলাইন অর্ডার করতে হবে।
-The Balm Mary Lou Manizer:
এই হাইলাইটারটি গোল্ড টোনড এবং হালকা শিমারি। তবে মুখে দিলে গ্লিটার ততটা চোখে পড়ে না। অনেকেই আছেন বেশি গ্লিটারি হাইলাইটার পছন্দ করেন না, তারা এই হাইলাইটার ট্রাই করে দেখতে পারেন। এটি মুখে ন্যাচারাল গ্লো দেয়। এর দাম পড়বে ২৪ ডলার। অনলাইন অর্ডার করতে হবে।
-MAC Mineralised Skin Finish in Soft & Gentle:
Benefit High Beam:
এটিও কিছুটা পিংক টোনড। বেনেফিট ব্র্যান্ডের এই লিকুইড হাইলাইটারটি খুব জনপ্রিয়। এটি চেহারায় হালকা গোলাপি আভা নিয়ে আসে। দাম হচ্ছে ২৬ ডলার। অনলাইন অর্ডার করতে হবে। তবে যারা দেশে পাওয়া যায় এমন হাইলাইটার কিনতে চান তারা Almas, Agora এই টাইপের সুপার শপ গুলোতে দেখতে পারেন। কেনার আগে আসল না নকল সেটা ভালো মতো যাচাই করে নেবেন। তবে কসমেটিকস বা স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট যতটা সম্ভব বাইরে থেকে আনানোই ভালো।
লিখেছেনঃ নাহার
ছবিঃ টোওপএন্ডটিকাপস.কম, নোমোরড্যামসেলস.কম, হ্যাঞ্জিনস্পা.কম