মধ্য বয়সের সাজ - Shajgoj

মধ্য বয়সের সাজ

iStock_000020753249Small

কে বলেছে ৪৫ এর উপরে বয়স হয়ে গেলে তাকে সাজতে মানা? আমাদের মা খালাদের দেখি কোথাও যাবার আগে সাজগোজ নিয়ে খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকেন লিপস্টিকটা বেশি কড়া হয়ে গেল না তো, মুখের পাউডারটা বেশি চড়া হল না তো? সাজ তো মেয়েদের জন্যই তবে এতো ইতস্ততা কেন? তবে হ্যাঁ এটা মানতে হবে যে বয়সের সাথে সাজের অবশ্যই পরিবর্তন আসা উচিত। ভেবে দেখুন তো স্কুলের ছাত্রী থাকা আপনি যেমন দুই বেনি ঝুলিয়ে উড়ে বেড়াতে পারতেন এখন কি আর পারবেন? ঠিক মুখের সাজটাও এমন। ৪৫+ নারীদের ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক আর কটকটে রঙের পোশাক আপনার ব্যক্তিত্ব, রুচি বোধ আর আভিজাত্যকে অনেকটা ফাঙ্কি করে তোলে। কোন পার্টিতে গিয়েছেন, আড় চোখে লক্ষ্য করছেন সবাই কেন যেন আপনাকে দেখে ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি দিচ্ছে। হয়ত কেও বলেই ফেললো আপনার অবুঝ সাজগোজই তাদের হাসির কারণ। কিন্তু আপনি বুঝে পাচ্ছেন না কী বেশি দিয়েছেন আর কী কম দিয়েছেন, আপনার পরিধেয় পোশাকের রঙ কতটা দৃষ্টিকটু। আর মন খারাপ করা নয় আমার মধ্য বয়সী পাঠকদের সাজগোজ, পোশাক পরিচ্ছদ নিয়ে সম্পূর্ণ গাইড লাইন দেবো এই আর্টিকেলে।

[picture]

Sale • Tinted Moisturizer, Pigmentation, Face Primer

    ফাউন্ডেশনঃ

    এই বয়সে স্কিন অনেক বেশি ড্রাই হয়ে যায় তাই ময়েশচারাইজিং ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা জরুরী। আমরা অনেকে পাউডার বা ম্যাট ফাউন্ডেশন লাগাতে চাই কিন্তু এগুলোতে আমাদের মুখে থাকা রিঙ্কেল সহজে বোঝা যায়। ফাউন্ডেশনের রঙ নির্বাচন করুন ঠিক আপনার ত্বকের রঙের সাথে মিলিয়ে। বেশি ফর্সা দেখানোর জন্য সাদাটে রঙ বেছে নিবেন না। এতে সাজের বেজটাই ঠুনকো হয়ে যাবে। ফাউন্ডেশন লাগানোর পর সাধারন পাউডার লাগিয়ে নিন।

    কন্সিলারঃ

    ৪০ এর পর থেকে আমাদের ত্বকে ভাজ দেখা যায়। বিশেষ করে চোখের কোণায়, এমনকি চোখের নীচে পুঁটলি মত দেখা যায়, আর ডার্ক সার্কেল তো কমন প্রব্লেমের মধ্যেই ধরা যায়। এগুলো ঢেকে ফেলার জন্য কন্সিলার জরুরী। গোল্ডেন টোনের বা একটু হলদে রঙের কন্সিলার বেছে নিবেন।

    ব্লাশঃ

    চটকদার কোন রঙের বদলে বেছে নিন হালকা ন্যাচারাল কালার। ক্রিম ব্লাশ হবে আপনার জন্য সবচেয়ে সুইটেবল। ফ্লোরাল কালারের ব্লাশের ছোঁয়া দিন আপনার চিক বোন, নাকের ওপর, কপালে ।

    আইশেডোঃ

    সব সময় চকচকে রঙের বদলে বেছে নিন ন্যাচারাল কালার। আইশ্যাডোর ম্যাটেরিয়াল যেন ম্যাট হয়। টোউপ অথবা বেইজ কালার, ব্লু এর বিভিন্ন শেড অ্যাপ্লাই করবেন সব সময়। এই কালারগুলো যে কাপড়ের সাথে ম্যাচ হতে হবে এমন কোন কথা নেই। আর সবচেয়ে ইণ্টা্রেসটিং ব্যাপার হল কালারগুলো সব রঙের কাপড়ের সাথেই মানানসই। আইলিডে একটু ডার্ক কালার আর ভ্রু এর নিচে হালকা রঙ ব্যবহার করবেন।

    মাশকারাঃ

    মাশকারা এমনভাবে দিবেন যেন খুব বেশি আইল্যাস ঘন না দেখায়। এক পরতই যথেষ্ট। উপরের ল্যাশে শুধু লাগাবেন।নীচের ল্যাশে লাগানোর দরকার নেই। যদি খুব বেশি লাগাতে ইচ্ছা করে তবে স্প্রাংলি লাগান। আর খেয়াল রাখবেন স্মাজ ফ্রি মাশকারা নিবেন। আজকাল বিভিন্ন রঙের মাশকারা পাওয়া যায় কিন্তু কালো রঙেরটাই আপনার জন্য সঠিক নির্বাচন হবে।

    আইলাইনারঃ

    দিনের বেলা আইলাইনার লাগাবেন না। রাতের বেলা লাগাতে পারেন। কিন্তু আপনার চোখের সাইজের সমান সমান লাগাবেন। আর অবশ্যই ভালো কোয়ালিটির আইলাইনার ব্যবহার করবেন। কেননা সস্তা দামের গুলো একটু চকচকে থাকে যা আপনার পারসোনালিটিকে একদম স্যুট করবে না আর এগুলো ওয়াটার প্রুফও হয় না। ফলে ঘেমে গেলেই পুরো চোখে ছড়িয়ে পড়ে। চাইলে আই পেন্সিলও লাগাতে পারেন। রঙ্গের ক্ষেত্রে কালো, ব্রাউন কে প্রাধান্য দিবেন।

    কাজলঃ

    বেশি গাঢ় করে কাজল লাগাবেন না। যেহেতু দিনের বেলা আইলাইনার লাগাতে মানা করেছি সেহেতু দিনের বেলা শুধু একটু কাজলের ছোঁয়া আপনার চোখ দুটিকে করে তুলবে মায়াবি।

    ভ্রু এর সাজঃ

    আপনার ভ্রু যদি হালকা হয়ে থাকে তাহলে হাতের আঙ্গুলে কালো ও ব্রাউন কালার ২টি নিয়ে একটু মিশিয়ে নিবেন। তারপর ভ্রুর উপর হালকা হাতে ঘষে দিবেন। খেয়াল রাখবেন গাঢ় যেন না হয়ে যায়। তাহলে ভ্রু জোড়াকে মেকি মেকি দেখাবে।

    লিপলাইনারঃ

    দিনের বেলা এটির প্রয়োজন নেই। রাতে ব্যবহার করলে নিউট্রাল কালার বেছে নিবেন। যেটি আপনার ঠোঁটের রঙের সাথে ম্যাচ করে। লিপস্টিকের কালারের সাথে লিপ লাইনারের রঙ মিলানোর দরকার নেই।

    লিপস্টিকঃ

    বয়সের সাথে সাথে ঠোঁটের স্কিন ড্রাই হয়ে যায়। তাই ম্যাট এবং ডার্ক কালার আ্যাভোয়েড করবেন। ন্যাচারাল বা লাইট কালারের ক্রিমি লিপস্টিক ব্যবহার করবেন। পিঙ্ক, বেরি, কোরাল, পিচ শেড আপনার জন্য আদর্শ।

    লিপগ্লসঃ

    আপনার চেহারায় তারুণ্যের উজ্জ্বলতা আনতে লিপগ্লসের ভূমিকা অনন্য। তাছাড়া শুষ্ক ঠোঁটে লিপগ্লসের ছোঁয়া ভাইব্রাণ্ট লুক দেয়। দিনের বেলা শুধু গ্লস লাগাতে পারেন। আর যদি একান্তই ম্যাট লিপস্টিক লাগাতে ইচ্ছা করে তাহলে একটু লিপগ্লসের বুলিয়ে দিতে ভুলবেন না কিন্তু।

    গুরুত্বপূর্ণ টিপসঃ

    – মেক-আপ শুরুর আগে এক টুকরো বরফ পুরো মুখে ঘষে নিবেন। এতে আপনার মুখ ঘামবে না আর মেক-আপ থাকবে অক্ষুণ্ণ।

    – সব সময় মিনারেল মেক-আপ ব্যবহার করবেন। এতে আপনার ত্বকে থাকা রিঙ্কেল লুকিয়ে যাবে চটপট আর আপনার স্কিন দেখাবে মসৃণ আর উজ্জ্বল।

    – যদি নিউ কোনও লুক ট্রাই করতে চান তাহলে আগে বাসায় করে কয়েকজনের কাছ থেকে আপনাকে কেমন দেখাচ্ছে সে ব্যাপারে অপিনিওন নিয়ে নিবেন।

    – মেক-আপ শেষে মেক-আপ সেটিং স্প্রে ব্যবহার করবেন।

    – সব সময় ভালো কোয়ালিটির কস্মেটিক্স বেছে নিবেন। এতে দেখতে যেমন ভালো দেখাবে তেমনি আপনার স্কিন-ও প্রাণবন্ত থাকবে।

    – আপনার ঠোঁটে যদি ভাজ পড়ে থাকে তাহলে লিপস্টিক লাগানোর আগে ঠোঁটে কন্সিলার লাগিয়ে নিবেন।

    – প্রত্যেকবার মেক-আপ করার পর অবশ্যই তা ভালো ভাবে তুলে ফেলবেন।

    আর নয় গুটিয়ে শুঁটিয়ে থাকা। মেলে ধরুন নিজের সৌন্দর্যকে আর উপভোগ করুন মধ্য বয়সের উচ্ছলতাকে।

    লিখেছেনঃ রোজেন

    ছবিঃ ফিফটিইজথেননিউফর্টি.কম

    0 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort