দেশের (বিশেষত: ঢাকায়) অনেকেই এখন উদ্বেলিত সাম্প্রতিক আলোড়ন এই 3G নিয়ে। আসুন, একটু সহজ ভাষায় জেনে নিই, কী এই 3G?
সেই যখন মোবাইল ফোন বাজারে এলো, তখন আমরা ফোনে একটু কথা আর একটু টেক্সট মেসেজ পাঠাতে পারলেই খুশি থাকতাম। এরপর এলো MMS (Multimedia Message Service). মোবাইল ফোন থেকে ইন্টারনেট আগে ছিল WAP (Wireless Access Protocol)- ভিত্তিক। পরে তা web-ভিত্তিক হয়।ইমেইল, ফেসবুক, ইউটিউব- এ সবই এখন হাতের মুঠোয়, তবে স্পিডটা কম। কাজেই প্রয়োজন আরো স্পিড, আরো বেশি প্রাণবন্ত ডেটা-ট্রান্সফার। আর সেটাই দেবে 3G।
3G (3rd Generation) প্রযুক্তিটি মূলত: উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যান্ডউইড্থ।এর মূল মজাই হলো ইন্টারনেট স্পিড, ভিডিও কল, লাইভ ভিডিও-স্ট্রিমিং ও আই.পি. টিভি। 200 kbps (প্রতি সেকেন্ডে ২০০ কিলোবিট) এর বেশি স্পিড হলেই সেটা 3G-র আওতাভূক্ত। তবে শুধু বেশি স্পিড পেলেই তাকে 3G বলা চলে না, এর রয়েছে আরো কিছু বৈশিষ্ট্য, যা একটি আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড (IMT-2000) দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় (বিষয়টি বেশি টেকনিক্যাল বলে এখানে আলোচনা করা হলো না)। 3G-র আরো একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো একই হ্যান্ডসেট ও নাম্বার নিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারন্যাশনাল রোমিং, যেখানে স্থিরাবস্থায় একজন গ্রাহক 2 mbps স্পিড পেতে পারেন (দ্রুতগতির গাড়িতে বসে এই স্পিড কমপক্ষে 348 kbps হবে)।
অনেকেই জানতে চান কীভাবে তাঁর হ্যান্ডসেটে 3G পাবেন? প্রথমত: আপনার সেটটি 3G সাপোর্ট করে কি না তা আগেই জেনে নিন। যারা 3G compatible হ্যান্ডসেট কিনেছেন, তারা সেটিংস-এ নেটওয়ার্ক সিলেকশন অপশনে গিয়ে HSPDA অথবা WCDMA/UMTS সিলেক্ট করুন। আপনি যেখানে আছেন, সেখানে যদি 3G কাভারেজ থাকে তাহলে আপনার সেট-এর যেখানে নেটওয়ার্ক ডিসপ্লে করে সেখানে H অথবা 3G লেখা দেখতে পাবেন (যেখানে 2G-র ক্ষেত্রে E/EDGE/GPRS লেখা দেখতে পাচ্ছেন)।
আমরা সবাই চাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে। পৃথিবী যখন 4G নিয়ে ব্যস্ত, আমরা তখন সদ্য 3G-র জগতে পা রেখেছি। সামনে করার আছে অনেক কিছু, তবে তা সবই হওয়া উচিত শুভ কাজে। তরুণেরা যদি বন্ধুদের সাথে ভিডিও কল বা ওয়েবসাইট থেকে মুভি নামানোর জন্যে 3G ব্যবহার করে, তা আশাব্যঞ্জক নয়। নতুন প্রযুক্তির সুফল নিতে হলে ভাবতে হবে দিগন্তরেখার সীমারেখা ছাড়িয়ে, তাহলেই সূচিত হতে পারে নতুন ইতিহাস।
লিখেছেনঃ কাজী মঞ্জুর করীম
ছবিঃ স্পেকট্রস.কম