ননদ ভাবী সম্পর্ক চাইলেই গড়ে তোলা যায় খুব মিষ্টি মধুর সম্পর্ক হিসেবে। এ সম্পর্ক গড়ে তোলা যায় অনেকভাবে। ননদ ভাবী বোনের মত অথবা বান্ধবীর মত আচরণ করবে এটাই কাম্য। ননদ ভাবী সম্পর্ক এতটাই সুন্দর হওয়া উচিত যে একে অপরকে যে কোনো কথা শেয়ার করতে দ্বিধাবোধ করবে না। চলুন তবে জেনে নিই কিছু টিপস যার মাধ্যমে ননদ ভাবী সম্পর্ক সুন্দর করে গড়ে তোলা যায়…
ননদ ভাবী সম্পর্ক সুন্দর করতে করণীয়
ননদের জন্য
০১. ননদ ভাবী সম্পর্ক যতই বান্ধবীর মত হোক না কেন ননদের উচিত সবসময় তার ভাবীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা পোষণ করা।
০২. ভাই ও ভাবীর মাঝে কোন সমস্যা বা ঝগড়া চললে ননদের উচিত তা মিটমাটের দায়িত্ব নেওয়া। তাদের মাঝে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানো ননদের একটি গুরুদায়িত্ব।
০৩. ননদের উচিত ভাবীকে তার কাজে কর্মে সহায়তা করা। ভাবীর উপর কাজের চাপ বেশি থাকলে ননদ তার কাজে সাহায্য করে তার কাজের চাপ কমাতে পারে।
০৪. সবসময় ভাবীকে সঙ্গ দেওয়া উচিত ননদের। আগেই বলেছি ননদ ভাবী সম্পর্ক হল বন্ধু সম্পর্ক আর একজন বন্ধু কখনো আরেকজন বন্ধুকে একা থাকতে দেয় না।
০৫. কোন কারণে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ির কাছে কোন কারণে বকাঝকা খেলে ননদের উচিত তার থেকে ভাবীকে বাঁচিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর নিজের বাবা মার কাছে যতটা পারা যায় ভাবীর প্রশংসা করা।
০৬. ভাই-ভাবীর বিবাহ-বার্ষিকীতে ভাই-ভাবীর জন্য সারপ্রাইজের ব্যবস্থা করাও ননদের অন্যতম দায়িত্ব। তাদের উপহার দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের জন্য পার্টি দেয়া, অথবা ঘরোয়া কোন আয়োজন সবকিছুই ননদের একার দায়িত্ব।
০৭. ভাবীর জন্মদিনেও চাইলেও সে এক ধামাকা পার্টি অথবা ঘরোয়া পরিবেশে নিজেদের পরিবারের মধ্যে জন্মদিন পালন করতে পারে। কারণ জন্মদিনে ঘরের বউ সবচেয়ে বেশি মিস করে তার পরিবার পরিজনকে আর তাই ননদের উচিত এ ধরনের আয়োজন করে তার ভাবীর মন ভালো করে দেওয়া।
এবার চলুন জেনে নিই ভাবীদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় টিপসঃ
ভাবীর জন্য
০১. ননদ যেমন ভাবীকে সম্মান করবে তেমনি ভাবীরও উচিত সবসময় ননদকে স্নেহ করা। এতে তাদের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।
০২. ননদের যদি কারো সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক থেকে থাকে ভাবীর উচিত সে বিষয়ে সবকিছু খবরাখবর নেওয়া। যদি ছেলে ভালো হয় ভাবীর উচিত পরিবারকে বোঝানো। যার তার জন্য সে আগে নিজের স্বামীকে এসব ব্যাপারে বলতে পারে। যদি ছেলে খারাপ হয় তবে ভাবীর খুব যত্নের সাথে ননদকে বোঝানো উচিত।
০৩. ননদের কোন শারীরিক সমস্যা থেকে থাকলে ভাবীর সাথে তা শেয়ার করলে ভাবীর উচিত সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা।
০৪. ননদের বন্ধু বান্ধবীর সাথেও ভাবীর ভালো সম্পর্ক রাখা উচিত। ননদ কার সাথে মিশছে, তারা কতটা নির্ভরযোগ্য এসব বিষয়ে ভালো ভাবে জানতে হবে ভাবীদের।
০৫. বিয়ের প্রথম দিকে ভাবীদের উচিত ননদদের কাছ থেকে সবার সম্পর্কে সব খবর নেওয়া। যেমন – কে কী পছন্দ করে, কে কী খাবার ভালোবাসে ইত্যাদি। আর শুরু থেকেই যদি ভাবীরা ননদদের কাছে নির্ভরযোগ্য হতে পারে তবে ননদ-ভাবী সম্পর্ক খুব সহজেই বন্ধুসুলভ করে গড়ে তোলা যায়।
০৬. ননদের যেমন ভাবীদের বিশেষ দিন মনে রাখা উচিত তেমনি ভাবিদেরও ননদদের বিশেষ দিন মনে রাখা কর্তব্য। ননদের জন্মদিনে তাকে বিশেষ উপহার দেওয়া, তার পছন্দের খাবার রান্না করে তাকে খুশী করা যায় খুব সহজেই।
০৭. ননদ যেন তার শ্বশুড় বাড়িতে মানিয়ে চলতে পারে তার জন্য শিখিয়ে পড়িয়ে নেওয়ার দায় অনেকটা ভাবীদের। ভাবীরা মাঝে মাঝে সময় পেলেই বিয়ে পরবর্তী জীবন নিয়ে ননদের সাথে আলাপ আলোচনা করা উচিত এবং ননদের মাঝে যদি কোন ভীতি থেকে থাকে, ভাবীদের উচিত তা দূর করে দেওয়া।
ননদ ভাবী সম্পর্ক অত্যন্ত সুন্দর সম্পর্ক। একজন মেয়ে শ্বশুড়বাড়ি এসে সবসময় আশা করে খুব ভালো একজন বন্ধুর। একজন ননদ তার সেই বন্ধুর চাহিদা পূরণ করতে পারে খুব সহজেই। অন্যদিকে, ননদও ভাবীকে বন্ধু, বড় বোন সর্বোপরি একজন অভিভাবক হিসেবে পেয়ে থাকে আর ভাবীর কাছে করে থাকে হয়ত অনেক অন্যায় আবদারও। আর এভাবেই যুগ যুগ ধরে ননদ-ভাবী সম্পর্ক হয়ে উঠেছে এতটা সুন্দর।
ছবিঃ সংগৃহীত – সাটারস্টক