বর্তমান যুগের চাহিদা বা ট্রেন্ড যাই বলুন না কেন, গৃহশিক্ষক বা প্রাইভেট টিউটর নিয়ে সব বাবা মাকেই সচেতন দেখা যায়। ছোট বাবুদের হাতে খড়ি মা বাবার হাত দিয়ে হলেও একটা সময় পর স্কুল কলেজ এর পাশাপাশি ঘরে বা কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করার প্রয়োজন পড়ে। কেননা স্কুলের সীমিত সময়ের মধ্যে অনেক স্টুডেন্ট এর পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়া সহজ ব্যাপার নয়। আর প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে প্রত্যেক কেই নিজ নিজ মেধা অনুযায়ী যোগ্য হয়ে গড়ে ওঠার প্রয়োজন পড়ে। তাতে যদি স্কুল কলেজের পাশাপাশি কারো সাহায্য নেয়া যায়, মন্দ তো নয়।
স্টুডেন্ট লাইফের বিভিন্ন সময়ভেদে টিউটর নির্বাচন একেক রকম হওয়া চাই। যেমন – স্কুল, কলেজ এবং ভর্তি পরীক্ষা। স্কুলের আবার বিভিন্ন ভাগ রয়েছে যেমন – ইংরেজি এবং বাংলা মাধ্যম। বয়স যদি বিবেচনা করা যায়, তাহলে প্লে, নার্সারি, প্রাথমিক, মাধ্যমিক এই ভাগ গুলো আসে।
[picture]
প্রথমেই একদম ছোট বাবুদের নিয়ে লিখি। প্লে বা নার্সারি তে পড়ে হয়তো আপনার সোনামণি, তার জন্য আসলে টিউটর রাখার প্রয়োজন নেই, মা বাবাই শেখাতে পারেন। তবে বাবা মা দুজনেই ব্যস্ত থাকলে টিউটর রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে স্টুডেন্ট টিউটরই ভালো।
ক্লাস ওয়ান থেকে ফোর পর্যন্ত টিউটর দিতে চাইলে আপনার চেনাজানা ভালো স্টুডেন্ট টিউটর বা ক্লাসের শিক্ষক যদি পড়ান, তাহলে ভালো হয়। ক্লাস ফাইভ গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এখানে একটি প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট এর পরীক্ষা হয়। এই শ্রেণীতে অভিজ্ঞ স্কুলের শিক্ষকই ভালো। কেননা, তাতে বিভিন্ন বছরে আসা প্রশ্ন সহ অনেক কিছুই সঠিক ভাবে মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়। একই কথা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট এর পরীক্ষার ক্ষেত্রেও। এই পরীক্ষাটি হয় অষ্টম শ্রেণীতে। মাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এটা মেনে চলতে পারেন। সাধারণত তিনটি পরীক্ষাতেই প্রায় সব স্কুল থেকেই কোচিং করানোর ব্যবস্থা থাকে। এই কোচিং গুলো করা উচিত।
মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড পরীক্ষার আগের কয়েক মাস স্কুল বা কলেজ থাকে না। এ সময় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা গুলোতে অংশ নেয়া উচিত। এতে করে প্রস্তুতি পাকাপোক্ত হয়। এই পরীক্ষা গুলো বিভিন্ন কোচিং সেন্টার নিয়ে থাকে। উচ্চ মাধ্যমিকে সাধারণত প্রতিটি বিষয় আলাদা করে পড়তে হয়। এক্ষেত্রে ব্যাচে পড়াই ভালো। কিন্তু কোন বিশেষ বিষয়ে দুর্বলতা থাকলে একা ঐ বিষয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষকের কাছে পড়া উচিত।
ভর্তি পরীক্ষা সবার জীবনেরই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। এর উপরই নির্ভর করে ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার। একা একা এর জন্য প্রস্তুতি নেয়া আসলে অনেক কঠিন। কোচিং সেন্টারের উপর পুরোপুরি নির্ভর করা ঠিক নয় তবে পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোচিং সেন্টারের বিভিন্ন অনুশীলন মূলক পরীক্ষা অনেক সাহায্য করে। এখনকার ট্রেন্ড হলো কেউ মেডিকেল বা বুয়েটে পড়তে চাইলে ওখানকারই স্টুডেন্ট দের টিউটর হিসেবে বেছে নেয়।
কিছু ভিন্ন কথা:
টিউটর রাখার ক্ষেত্রে সব বাবা মায়ের ই আগে থেকে খোঁজ খবর নেয়া উচিত। আজকাল অনেক ঘটনাই ঘটছে। মিথ্যে পরিচয় দিয়েও অনেকে শিক্ষকতা করতে পারে। তাই বাবা মার সব সময় সচেতন থাকা উচিত। অনেক শিক্ষক স্টুডেন্টের উপর শারীরিক বা মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য সন্তানের সাথে বাবা মায়ের যেমন বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে, তেমনি শিক্ষকের সাথেও। এক ধরনের মিউচুয়াল সম্পর্কের মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। এ ব্যাপারে আপনারা নিজেরা সতর্ক হোন আর অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন।
লিখেছেন – সানিয়া
ছবি – এলাহাবাদ ডট ওএলেক্স ডট ইন