দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় হলেও মেয়েরা নিজেদের শরীরে অতিরিক্ত লোম দেখতে পছন্দ করেন না একদমই। তাই তো শরীরের অতিরিক্ত লোম ছেটে ফেলতে রয়েছে কত কিছু – থ্রেডিং, ওয়াক্সিং, ওয়াক্স স্ট্রিপ, হেয়ার রিমুভিং ক্রিম। এপিলেশনও হেয়ার রিমুভ করার একটি পদ্ধতি। এপিলেশনের জন্য ব্যবহার করা হয় একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র (এপিলেটর), যার সাথে লাগানো কিছু চিমটার সাহায্যে লোমকে গোড়া থেকে তুলে আনা হয়। লোমহীন ত্বক পেতে এপিলেটর নিয়ে আরো কিছু জানার আগে আসুন জেনে নেই হেয়ার রিমুভিং এর আরো কিছু পদ্ধতি ও তাদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে।
লোমহীন ত্বক পেতে কিছু পদ্ধতি
১) ওয়াক্সিং
ওয়াক্সিং হাত পায়ের হেয়ার রিমুভিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি। ওয়াক্সিং এ একসাথে অনেক পরিমাণে লোম উঠানো যায় ও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত লোমমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। হেয়ার গ্রোথের উপর ভেদ করে এটি ৪-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত লোমহীন রাখে। কিন্তু ওয়াক্সিং এর ফলে স্পর্শকাতর ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া বা র্যাশ ওঠা সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। পার্লারে ওয়াক্সিং করা ব্যয়বহুল আর বাড়িতে করা বেশ ঝক্কি ঝামেলার ব্যাপার।
২) হেয়ার রিমুভিং ক্রিম
দ্রুত, কম খরচে ও ব্যথামুক্ত উপায়ে লোম উঠানোর জন্য হেয়ার রিমুভিং ক্রিম বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি আবার লোম ফিরে আসে। যাদের হেয়ার গ্রোথ বেশি তাদের ক্ষেত্রে ২-৩ দিনেই আবার লোম দেখা দেয়। তাছাড়া হেয়ার রিমুভিং ক্রিমের অতিরিক্ত কেমিকেল ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
৩) হেয়ার রিমুভিং স্ট্রিপ
ইদানীং হেয়ার রিমুভিং এর এই পদ্ধতিটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তবে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলে অতটা কাজে দেবে না। স্ট্রিপ ব্যবহারের পূর্বে এটিকে মোমবাতির আগুনে হালকা গরম করে নিন। খুব ভালো কাজ করবে।
লোমহীন ত্বক পেতে এপিলেটর
এপিলেটর লোম উঠানোর বৈদ্যুতিক যন্ত্র। এতে সাধারণত রিচার্জেবল ব্যাটারী সংযুক্ত থাকে। একবার চার্জ দিলে ১-২ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ। প্রথম কয়েকবার বেশ ব্যথাদায়ক হলেও, প্রতিবার লোম উঠানোর পর পরবর্তী গজানো লোম বেশ পাতলা হয়ে আসে। তাই আর ব্যথা থাকে না। এপিলেটর গোড়া থেকে লোম তুলে আনে, তবে ওয়াক্সিং এর মত করে নয়। তাই ২-৩ সপ্তাহ পর আবার লোম ফিরে আসে। তবে দামী ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রেও দীর্ঘদিনের ব্যবহারে লোম উঠার সময় আরো দীর্ঘ হয়। এপিলেটর মূলত হাত পায়ের লোম উঠাতে ব্যবহৃত হয়। বিকিনি লাইন, আন্ডারআর্মে বা মুখে এপিলেটর ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ এসব অংশের ত্বক অত্যন্ত নরম ও সংবেদনশীল। তবে অনেক এপিলেটরে সংবেদনশীল অংশে ব্যবহারের জন্য আলাদা অ্যাটাচমেন্ট থাকে। দাম ও ব্র্যান্ড ভেদে এপিলেটরের সাথে বিভিন্ন অ্যাটাচমেন্ট দেয়া হয়, যেমন- শেভার, ম্যাসেজার, ট্রিমার, আইস চেম্বার, বিকিনি লাইন ও আন্ডারআর্মে ব্যবহারের জন্য সেফটি ক্যাপ সহ টুইজার ইত্যাদি।
এপিলেটর ব্যবহারের কিছু টিপস
১) এপিলেটর ব্যবহারের আগে গোসল করে নিন। এতে লোমের গোড়া নরম হয় ও সহজে উঠে আসে। অনেক এপিলেটর পানিরোধী ফলে গোসলের সময়ও ব্যবহার করা যায়।
২) সম্ভব হলে হাত ও পা স্ক্রাবিং করে নিন। এতে ত্বক মসৃন ও নরম হয় ও এপিলেটর ব্যবহার সহজ হয়।
৩) এপিলেটর সবসময় হেয়ার গ্রোথের উল্টো দিকে টানুন, এতে লোম সহজে গোড়া থেকে উঠে আসবে ও মসৃণ ফিনিশ পাওয়া যাবে।
৪) এটি ইউজের পর প্রথম দিকে কারো কারো র্যাশ ওঠা বা লাল হয়ে যেতে পারে। তাই কোন অনুষ্ঠানের ২-৩ দিন আগে এপিলেশন করুন।
৫) এপিলেটর ব্যবহারের সময় চামড়া টেনে ধরুন, এতে ব্যথা কম লাগবে
৬) এপিলেটর ব্যবহারের পর ওই স্থানে বরফ ঘষে নিন ও ময়েশ্চারাইজার লাগান।
Braun’s Silk-épil এপিলেটরের মধ্যে সবচেয়ে উন্নতমানের। এছাড়াও আছে Panasonic, phyllips epilator। তাছাড়া ননব্র্যান্ড ও চাইনিজ ব্র্যান্ডের অনেক এপিলেটর আছে।
লোমহীন ত্বক পেতে এপিলেটর এর ব্যবহার নিয়ে এই তো জেনে ফেললেন। এখন থেকে তাহলে ত্বকের যত্ন হোক সুনিশ্চিন্তে।
ছবিঃ সংগৃহীত – ম্যানিয়াকমাইন্ড.কম.ব্লগস্পট.কম