আমাদের সুস্থ থাকার জন্য যেমন ভালো পরিবেশ, পুষ্টিকর খাদ্য এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা প্রয়োজন তেমনি বিনোদনেরও প্রয়োজন আছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে গান শোনা, গান গাওয়া বা যে কোনো ভাবে গানের সাথে সম্পৃক্ত থাকলে তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এমন কী ছোটবেলায় যদি কেউ গিটার, তবলা, হারমোনিয়াম, পিয়ানো বা অন্য যে কোনও বাদ্যযন্ত্র শিখে থাকেন সেটার ভালো প্রভাব অনেক বছর পরেও তার ওপর থাকবে। ওষুধের মত সঙ্গীতে যেহেতু কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তাই শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রে এটির গুরুত্ব অপরিসীম। তবে এটাও ঠিক যে সঙ্গীত নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে কোনটি আপনার অনুভূতিকে স্পর্শ করছে। যে গান আপনার ভালো লাগবেনা বা যে গানের কথা আপনার জন্য বিরক্তিকর হবে তা আপনার উপকারে আসবেনা। বিভিন্ন গবেষকের মতে এখানে সঙ্গীতের উপকারিতা গুলো তুলে ধরা হল।
০১. যখন কোন কাজে আলসেমি চলে আসে তখন খুব ফাস্ট বিটের গান আপনার আলসেমি দূর করতে সাহায্য করে। যেমন ব্যায়ামে আলসেমি লাগলে এরকম গান শুনতে শুনতে ব্যায়ামের চেষ্টা করুন। দেখবেন খুব দ্রুত আপনার আলসেমি কেটে যাচ্ছে আর আপনি সঠিক নিয়মে ব্যায়াম করতে পারছেন। এমনকি আগের চাইতে ব্যায়াম করার গতিও বৃদ্ধি পাবে।
০২. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সঙ্গীতের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়মিত গান শুনলে তা আপনার ভেতরের বিভিন্ন নেতিবাচক আবেগ গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করবে অথবা কমিয়ে আনবে। যারা নিয়মিত তাদের প্রিয় গান বা কোন মিউজিক শোনেন তাদের কর্টিসোল হরমোন নিঃসরণ কমতে থাকে। এই হরমোন মানসিক চাপ সৃষ্টির জন্য দায়ী। কাজেই এই হরমোন নিঃসরণ কমার সাথে সাথে মানসিক চাপও কমে আসে।
০৩. আপনার হার্ট কে সুস্থ রাখতে চাইলেও নিয়মিত গান শুনুন। কারণ ইউরোপের কিছু গবেষকের মতে গান শোনার মাধ্যমে আপনার মন ভালো থাকবে, যার ফলে আপনার দেহে এক ধরনের বায়োলজিকাল পরিবর্তনের মাধ্যমে রক্তের প্রবাহ সঠিক নিয়মে হবে আর আপনার হার্ট সুস্থ থাকবে।
০৪. যেসব স্ট্রোকের রোগীরা অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়মিত তাদের প্রিয় গান শোনেন তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যান্য স্ট্রোকের রোগীদের চাইতে ভালো থাকে এবং তাদের মাঝে বিষণ্ণতাও কম থাকে।
০৫ পারকিন্সন্স এর রোগীদের অনেকের কথা বলায় বা চলাফেরায় সমস্যা হয় কিন্তু তারা যদি গান শোনার অভ্যাস করেন তাহলে তা তাদের স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে এবং চলাফেরা করতে সাহায্য করে।
০৬ যেসব শিশু কোনও ভাবে গান বা বাদ্যযন্ত্রের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে তারা গণিত এবং বিজ্ঞানে ভালো হয়। তাদের চিন্তাশক্তি অন্যান্য শিশুদের তুলনায় বেশি হয়। তারা অন্য শিশুদের তুলনায় খুব দ্রুত নতুন নতুন শব্দ শিখতে পারে।
লিখেছেনঃ মাহমুদ
ছবিঃ মাইসানকোস্ট.কম