ছোট চোখ? ফোলা চোখ? পাতলা ঠোঁট? চওড়া ঠোঁট? কীভাবে সাজলে ভালো দেখায় ভেবে পাচ্ছেন না? সাজার সময় এইসব টুকটাক খুঁত-ত্রুটি-বিচ্যুতি ঢেকে ফেলা যায় শুধুমাত্র মেকাপের কিছু কৌশল জানা থাকলেই।
প্রথমেই বলে রাখি, চোখ ছোট বড় মাঝারি যেমনই হোক না কেন, সবচেয়ে জরুরী নিয়মিত চোখের যত্ন নেওয়া। সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখের সাথে সাথে চোখেও ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে চোখ ধোবেন। অকারণে রাত জাগার অভ্যাস, অন্ধকার ঘরে টেলিভিশন দেখা বা কম্পিউটারে কাজ করা শুধুই চোখের নীচের কালি বাড়িয়ে দেয়। এগুলো এড়াতে আমণ্ড অয়েল আর নারিকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাসাজ করুন। নিয়মিত করলে কালি দূর হবে। আলুর রসও চোখের নীচের কালি তোলার জন্য অনবদ্য। একই ভাবে ঠোঁটেরও সমান যত্ন নেওয়া জরুরী। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি বা লিপ বাম লাগিয়ে রাখুন। ঠোঁটের স্ক্রাব হিসেবে অল্প একটু চিনির সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে আলতো করে ঘষে মরা চামড়া তুলে ফেলুন।
ভিন্ন আকৃতির চোখ ও ঠোঁটের জন্য রয়েছে ভিন্ন মেকাপ। আজ জানাব ছোট চোখ আর পাতলা ঠোঁটের অধিকারীরা কীভাবে সাজবেন। লিকুইড লাইনারের তীক্ষ্ণ রেখা নয়, সকালের জন্য বেছে নিন কোহল পেন্সিল কাজল। ব্যবহার করুন চোখের উপরের পাতা জুড়ে। চোখের কোলে সামান্য একটু সাদা আই পেন্সিলের রেখা চোখকে বড় আর প্রশস্ত দেখায়। চিকন লাইনার এর বদলে একটু স্মাজ করে কাজল দিলে তা চোখকে বড় দেখাতে সাহায্য করে। ছোট চোখের ক্ষেত্রে সবুজ, নীল, বেগুনি রঙের মাস্কারা ব্যবহার চোখকে উজ্জ্বল আর বড় লুক দেয়। শুধু কয়েক পরত মাস্কারাই যেকোনো আকারের চোখের পাতায় পরিবর্তন এনে দেয়। দিনের বেলায় ব্যবহার করুন হালকা অথচ উজ্জ্বল রঙের আইশ্যাডো। চিকন ভুরু চোখের দৈর্ঘ্য বাড়াতে সাহায্য করে। ছোট চোখ টানা দেখানোর আরেকটা কৌশল হল গাঢ় রঙের আইশ্যাডো চোখের কোণায় ভালো ভাবে লাগিয়ে সেটি কাজল আর লাইনারের সাথে ভালো ভাবে blend করে দেয়া। এক্ষেত্রে ব্যবহার করুন ধূসর, নেভি ব্লু, কালচে বেগুনি, ঘন সবুজ এসব রঙ। দিনের বেলায় বাইরে বেরোবার সময় চটজলদি চোখের মেকাপ সেরে ফেলুন এই সহজ উপায় গুলো ব্যবহার করে আর রাতের বেলায় শিমারি আইশ্যাডোর পাশাপাশি brow bone হাইলাইট করুন হালকা সোনালি শ্যাডো দিয়ে। স্মোকি আই করুন, তবে তাতে কালো রঙ এর ব্যবহার সীমিত রাখুন, কারণ অতিরিক্ত কালো শ্যাডো চোখকে আপাতদৃষ্টিতে ছোট করে দেখায়। আইব্রাও পেন্সিল দিয়ে ভ্রু না এঁকে গাঢ় খয়েরি আইশ্যাডো ব্রাশে নিয়ে আইব্রাও এর শেপ দিন। এতে natural ভাবটা বজায় থাকবে। অবসরে এক্সপেরিমেন্ট করুন বিভিন্ন ভাবে। একসময় আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
এবার আসি পাতলা ঠোঁটের সাজে। গ্লসি, ক্রিমি যেকোনো রঙ এ আপনার জন্য আদর্শ! ম্যাট একদম নয়। কেন জানেন? কেননা পাতলা ঠোঁটে ভেজা লিপস্টিক ঠোঁটকে বড় দেখাতে সাহায্য করে, কিন্তু ম্যাট লিপ্স আর ছোট লুক দেয়, ঠোঁট দেখতে লাগে কঠোর। foundation বা compact লাগানোর সময় ঠোঁটের উপরেও এক পরত বুলিয়ে নিন, লিপ প্রাইমার না থাকলে অল্প একটু কন্সিলার দিয়ে নিন। লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিয়ে তারপর লিপস্টিক লাগান। দিনের বেলায় সফট ব্রাউন টোন আর রাতের জন্য গাঢ় গোলাপি বা মেরুন ব্যবহার করতে পারেন কারণ এই রঙ গুলো পাতলা ঠোঁটে বেশ ফুটে ওঠে। শীতকালে রাতের বেলা গ্লস ব্যবহার করুন আর গরম কালে গ্লস ছড়িয়ে যাবার ভয় থাকলে গোল্ডেন হাইলাইটার দিয়ে নিন। তবে পুরো ঠোঁটে নয়, ঠিক মাঝখানে। দেখবেন আপনার সাজে যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা।
আশা করি আর্টিকেলটি পরে উপকৃত হবেন। পরবর্তীতে মাঝারি চোখ আর মোটা ঠোঁটের কারেকটিভ মেকাপ সম্পর্কে জানাব।
লিখেছেনঃ চৌধুরী তাহাসিন জামান
ছবিঃ ইজিস্মাইল.কম