শীতকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের হাত-পায়ের নখ এবং ত্বক। তাই শীতকালে হাত-পায়ের নখ ও ত্বক সুন্দর রাখতে, চাই বাড়তি যত্ন এবং সেই যত্ন অবশ্যই হতে হবে যথাযথ আর এই যত্ন কীভাবে নিবেন তা নিয়েই আমার আজকের প্রতিবেদন। চলুন দেখে নেওয়া যাক –
হাত-পায়ের যত্নে লোশনঃ
শীতকালে লোশনের ব্যবহার অপরিহার্য। কারণ লোশন ত্বককে রুক্ষতা থেকে বাঁচায়। কিন্তু এই লোশন কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে যে লোশন টার মধ্যে কী কী উপাদান আছে। যদি শিয়া-বাটার উপাদান হিসেবে মিশ্রিত থাকে তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। চোখ বুজে নিয়ে নেওয়া যাবে। কারণ শিয়া-বাটার ত্বককে করে তুলে কোমল ও মোলায়েম। যা ত্বককে রুক্ষতা থেকে বাঁচিয়ে রাখে। আরেকটা দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে ভুলবেন না আর সেটা হল শীতকালে ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার আর হাতে-পায়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল গোসলের পর। শীতকালে আমাদের ত্বক থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি শুকিয়ে যায় যার কারণে হাত-পায়ের চামড়ায় টানটান ভাব আসে আর ময়েশ্চারাইজারের কাজ হল শরীরের পানির অভাব পূরণ করে ত্বককে আবার সজীব করে দেওয়া যার ফলে ত্বক শীতকালেও অনেক মোলায়েম থাকে। এছাড়া ব্যবহার করতে পারেন এভোকাডো এসেনশিয়াল অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল। শুধু তাই না, শীতকালে ত্বক রুক্ষ হয়ে চামড়া মরে যায় যার কারণে প্রয়োজন এক্সফোলিয়েশনের। আপনার হাতের কাছেই মার্কেট গুলোতে পাবেন পিউমিক স্টোন যা দিয়ে পায়ের গোড়ালি এবং হাতের মরা চামড়া হালকা কুসুম গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে চামড়া নরম হলে আলতো ভাবে এক্সফোলিয়েট করতে পারবেন। এক্সোলিয়েশনের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল গোসলের সময়। কারণ তখন চামড়া নরম হয়ে যায় তাই কোনরকম ব্যথা ছাড়াই এক্সফোলিয়েট করা যায়।
নখের যত্নঃ
শীতকালে নখের যত্ন নেওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হল গোসলের পরের সময়টা। আলতো ভাবে কিউটিকেল পুশার দিয়ে নখের কিউটিকেল ভিতরের দিকে ঢুকিয়ে দিন। তারপর অলিভ অয়েল বা লোশন দিয়ে নখ ও আঙুল আলতো ভাবে মাসাজ করুন কিছুক্ষণ। তারপর তেল বা লোশন যেটাই ব্যবহার করেছিলেন তা মুছে ফেলুন এবং নেইল হার্ডেনার ব্যবহার করে কাজ সম্পন্ন করুন। নেইল হার্ডেনার নখ শক্ত করতে সহযোগী হিসেবে কাজ করে আর কিউটিকেল অয়েল নখ শক্ত ও হেলদি রাখতে সাহায্য করে। তাই কিউটিকেল অয়েল নখে দিয়েই নখের যত্ন শেষ করবেন।
মনে রাখবেনঃ
১) শীতকালে বার বার হাত-পা ধুবেন না।
২) ভালো হ্যান্ড ওয়াশ ব্যবহার করুন।
৩) নখে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে বেশি দিন ধরে রাখবেন না। দ্রুত ট্রিটমেন্ট করাবেন।
৪) সপ্তাহে অন্তত ১ বার হলেও এক্সফোলিয়েট করবেন টুথ ব্রাশ বা পিউমিক স্টোন দিয়ে।
৫) নখ শক্ত করতে প্রতিদিন রাতে অলিভ অয়েল কুসুম গরম করে তুলা দিয়ে নখে ভালো ভাবে লাগাবেন। কেউ চাইলে ভ্যাসলিন বা কিউটিকেল অয়েল লাগাতে পারেন।
৬) হাত পা কখনই খুব ঠাণ্ডা বা খুব গরম পানিতে ধোবেন না। সেক্ষেত্রে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো।
৭) নখের হলদে ভাব দূর করতে লেবুর কোষ ঘষবেন নখে।
৮) যেকোনো ম্যানিকিওর করার আগে নখে বেস কোট দিয়ে নিবেন।
লিখেছেন – ইসরাত জাহান অর্চি
ছবি - শিনোস ডট কম, সাটারস্টক