আমন্ড অয়েল এর সাথে আমরা এখনো অনেকেই ভালো মতো সুপরিচিত নই। এর জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠলেও অনেক আগে থেকেই এর ব্যবহার বিভিন্ন ভাবে হয়ে আসছে। ভিটামিন এ, বি এবং ই এর বিশাল উৎস হচ্ছে এই আমন্ড অয়েল। এই সব গুলো ভিটামিন ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিভিন্ন নামী দামী ব্র্যান্ডের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের উপাদান গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিলেই দেখতে পাবেন এই ভিটামিনগুলোর উপস্থিতি।
[picture]
– যাদের ত্বক খুব বেশি শুষ্ক তাদের জন্য আমন্ড অয়েল হচ্ছে আদর্শ ময়েশ্চারাইজার। ভিটামিন ই এর বিশাল উৎস এই তেলটি ত্বকের রুক্ষভাব দূর করে একে নরম ও মসৃণ করে তোলে। বিশেষ করে রাতের বেলা ঘুমানোর আগে এটি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে লাগান।
– ডার্ক সার্কেল থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে চোখের নীচে আমন্ড অয়েল লাগান। নিয়মিত লাগানোর মাধ্যমে ডার্ক সার্কেল থেকে মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে ফাইন লাইন্সও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
– এটি শুধু ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবেই না ত্বকের জন্য স্ক্রাব হিসেবেও ভালো কাজ করে। স্ক্রাব তৈরি করতে এক চামচ আমন্ড অয়েল এবং এক চা চামচ চিনি নিয়ে মিশিয়ে মুখে সার্কুলার মোশনে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের মরা কোষ এবং ময়লা ভিতর থেকে পরিষ্কার করে। এই স্ক্রাব ব্যবহারে ব্ল্যাকহেডস, ব্রণ ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
– বয়সের ছাপ কমিয়ে ত্বককে আরো সুন্দর ও যৌবনদ্বীপ্ত করে তুলতে আমন্ড অয়েল এর জুড়ি নেই। এটি ত্বকের কোষ পুনরায় গঠন করতে সাহায্য করে এবং ত্বকে উজ্জ্বল আভা নিয়ে আসে।
– আমন্ড অয়েল খুবই লাইট টেক্সচারের হয়ে থাকে। তাই এটি চুলে লিভ ইন কন্ডিশনার এর মত ব্যবহার করতে পারেন। এটি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে সিল্কি করে।
– নখের যত্নেও ব্যবহার করতে পারেন আমন্ড অয়েল। আমন্ড অয়েলে থাকা পটাসিয়াম এবং জিঙ্ক নখ শক্ত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক ফোঁটা আমন্ড অয়েল নিয়ে নখে লাগান। এতে করে নখ ভাঙ্গা কমে যাবে এবং এটি দেখতেও সুন্দর হবে।
– অনেকেরই শীতে হাত পা ফেটে যায়। সেক্ষেত্রে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আমন্ড অয়েলে থাকা জিঙ্ক শুষ্ক এবং ফাটা ত্বক ঠিক করে ত্বককে কোমল ও মসৃণ করে।
– ঠোঁট ফাটা রোধ করে ঠোঁটে গোলাপি আভা নিয়ে আসতে আমন্ড অয়েল বেশ কার্যকরী। ৫-৬ ফোঁটা আমন্ড অয়েল এবং ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে একটি লিপ বাম কনটেইনারে সংরক্ষণ করুন। লিপ বাম বা লিপ জেলের পরিবর্তে এটি নিয়মিত ঠোঁটে লাগান।
– লম্বা এবং ঘন চোখের পাপড়ি পেতে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের পাপড়িতে আমন্ড অয়েল লাগান। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চোখের পাপড়ি ঘন হবে।
– যেহেতু আমন্ড অয়েল খুবই লাইট টেক্সচারের এবং অন্য তেলের মত চিটচিটে নয় তাই এটি মেক-আপ রিমুভার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। এটি ত্বকের ভিতর থেকে ময়লা এবং মেক-আপ পরিষ্কার করে। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্যই মেক-আপ রিমুভার হিসেবে উপযোগী।
– সুন্দর ও স্বাস্থ্যজ্জল চুল পেতে আমন্ড অয়েল হালকা গরম করে চুলে এবং স্ক্যাল্পে ভালো মতো ম্যসাজ করুন। চাইলে এর সাথে নারিকেল তেল যোগ করতে পারেন।
– চুল পরা রোধ করতে আমন্ড অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল এবং অলিভ অয়েল সমান পরিমাণে মিশিয়ে বাটিতে নিয়ে হালকা গরম করুন। তেলের এই মিশ্রণটি চুলে এবং স্ক্যাল্পে ভালো মত ম্যাসাজ করুন। এটি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করুন।
– রুক্ষ এবং নিষ্প্রাণ চুলের জন্য এভোক্যাডো পেস্ট করে এর সাথে আমন্ড অয়েল মেশান। মিশ্রণটি চুলে হেয়ার মাস্ক হিসেবে লাগান। ২৫-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের ড্যামেজ সারিয়ে চুল নরম ও শাইনি করে তোলে।
– খুশকি থেকে মুক্তি পেতে ৪-৫ টি আমলকী পেস্ট করে আমন্ড অয়েল এর সাথে মিক্স করে স্ক্যাল্পে লাগান। ২০-৩০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই হেয়ার মাস্কটি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করুন।
লিখেছেনঃ নাহার
ছবিঃ বডিবিউটি.কম