প্রতিদিন আমাদের স্কিনের উপর দিয়ে কতই না ধকল যায়! ঘরে কিংবা বাইরে যেখানেই থাকি, স্কিনের উপর নানা কারণে ময়লা জমতে পারে। বিশেষ করে যাদের নিয়মিত চুলার কাছে যেতে হয় অথবা বাসার বাইরে কাজে বের হতে হয়, তাদের ত্বকের জন্যে প্রয়োজন বিশেষ যত্নের। ব্ল্যাকহেডস আমাদের ত্বকের খুব কমন একটি সমস্যা। তৈলাক্ত ত্বকে এর প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। ব্ল্যাক হেডস কেন হয়, কীভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সেই বিষয়ে আজ আমরা জেনে নিবো। বিরক্তিকর ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি পাওয়ার ৩টি উপায় দেখে নিন তাহলে।
ব্ল্যাকহেডস কেন হয়?
ব্ল্যাকহেডস মুলত এক ধরণের পিম্পল, কালো ছোপ ছোপ ছোট গুটির মতো দেখতে হয়ে থাকে। একে এক ধরনের ব্রণও বলা যায়। খেয়াল করলে দেখা যাবে, অয়েলি স্কিনে পোরগুলো সবসময়ই ওপেন অবস্থায় থাকে। তাই ধুলোবালি, ময়লা এগুলো সহজেই এতে জমে যায়। এক পর্যায়ে এই গুটি গুটি বস্তুগুলো শক্ত হয়ে স্কিনের পোরগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এগুলো পরবর্তীতে নানা জীবাণু এবং ময়লার সাথে এক হয়ে অক্সিডাইজ করে এবং কালচে রং ধারণ করে। একেই আমরা ব্ল্যাকহেডস বলে থাকি। ত্বকের এই সমস্যাটি সাধারণত টিনেজারদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা দিলেও সব বয়সেই কম বেশি হয়ে থাকে। ব্ল্যাকহেডসের উপদ্রব বেড়ে গেলে কিছু কমন সমস্যা দেখা দেয়, যেমন-
- আমাদের স্কিনের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়
- চেহারা মলিন ও ক্লান্ত দেখায়
- ত্বকের উপরিভাগ অমসৃণ হয়ে যায়
- মেকআপ বা স্কিনকেয়ার রিলেটেড প্রোডাক্টস সহজে স্কিনে বসতে চায় না
সময়মতো ব্ল্যাকহেডস রিমুভ না করলে বা সঠিক যত্ন না নিলে এটা থেকে যেতে পারে স্থায়ীভাবে! তাই চেষ্টা করতে হবে শুরু থেকেই এই সমস্যা সমাধানে প্রোপার স্কিন কেয়ার মেনটেইন করতে। আজকে আমরা জেনে নিবো এমন কিছু উপায়, যার মাধ্যমে বিরক্তিকর ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি পাবেন সহজেই!
বিরক্তিকর ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি
১) নোস পোর স্ট্রিপস দিয়ে
ব্যস্ততার জন্যে আমরা অনেকেই ঘরোয়া উপায়ে স্কিনের যত্ন নিতে পারি না এবং রেডিমেড প্রোডাক্টের শরণাপন্ন হয়ে থাকি। নোস পোর স্ট্রিপসও ঠিক তেমন একটি সমাধান। যারা অলরেডি নোস পোর স্ট্রিপস ব্যবহার করেছেন, তারা তো জানেনই এর কার্যকারিতা সম্পর্কে। ব্যবহারের নিয়মও কিন্তু খুবই সহজ। আলাদা কোনো ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয় না। ইনস্ট্যান্টলি আমাদের নাকে জমে থাকা ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কার করে ফেইসে ক্লিন একটি লুক এনে দেয়। মার্কেটে এখন নানা ব্র্যান্ডের নোস পোর স্ট্রিপস কিনতে পাওয়া যায়। ভালো কোয়ালিটির প্রোডাক্টস কিনতে চেষ্টা করুন, তাহলে একবারেই ইমপিওরিটিস ক্লিন হয়ে যাবে। মাত্র ১০ মিনিটেই ব্ল্যাকহেডস গায়েব!
২) ডিমের সাদা অংশ দিয়ে প্যাক
হাতের কাছে নোস পোর স্ট্রিপস নেই? ঝটপট হোম রেমেডি খুঁজছেন? যারা ঘরোয়া উপায়ে সমাধান খুঁজছেন, তাদের জন্যে এটি হতে পারে বেস্ট সল্যুশন। এর জন্যে একটি ডিম নিয়ে তার সাদা অংশ আলাদা একটি বাটিতে তুলে নিন। এবার হাত দিয়ে আলতোভাবে মুখের যেসব জায়গায় ব্ল্যাকহেডস রয়েছে, সেখানে মেখে নিন। ভেজা অবস্থায় পাতলা টিস্যু পেপার দিয়ে ভালোভাবে অংশটি ঢেকে নিন। ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে আসলে আস্তে আস্তে টিস্যু পেপারটি তুলে ফেলুন। দেখতে পাবেন, টিস্যুর সাথে ব্ল্যাকহেডস গুলো উঠে এসেছে নিমিষেই! তবে এটা কিন্তু পোরস ডিপলি ক্লিন করবে না!
৩) স্ক্রাবেই হোক ঝটপট সমাধান
টিনেজার থেকে শুরু করে আমাদের সবার উইকলি স্কিনকেয়ার রুটিনে স্ক্রাব থাকাটা মাস্ট। সপ্তাহে ১ বার স্ক্রাবের ব্যবহার আপনার স্কিনের ব্ল্যাকহেডসজনিত সমস্যা কমিয়ে আনবে অনেকাংশেই। স্ক্রাবিং করার আগে অবশ্যই ফেইসটাকে আগে ক্লিন করে নিতে হবে। ভালোমানের ফেইস ওয়াস ব্যবহার করতে ভুলবেন না। সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করতে থাকুন। তারপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। খেয়াল রাখবেন, স্ক্রাবিং করার সময় কোনোভাবেই স্কিনের উপর জোরে জোরে ঘষা যাবে না। পিম্পল থাকলে স্ক্রাব ব্যবহার করা বাদ দিতে হবে। সবশেষে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিন। হার্শ বিডস স্কিনের ক্ষতি করতে পারে, তাই মাইল্ড এক্সফোলিয়েটর বেছে নিন।
আমাদের স্কিনের সমস্যাগুলো নানা কারণে হতে পারে। শুধু যে প্রোপার স্কিন কেয়ার বা ভালো কোয়ালিটির প্রোডাক্টস ব্যবহার করেই সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, এমনটি নয়! যেকোনো সমস্যা মোকাবেলার আগে সমস্যাটি কেন হচ্ছে, তার দিকে নজর দিতে হবে সবার আগে। পর্যাপ্ত ঘুম, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা এসব দিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে জেনে নিলেন, বিরক্তিকর ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তির ৩টি উপায় সম্বন্ধে। আশা করছি, এই আর্টিকেল আপনাদের জন্য হেল্পফুল ছিল। ভালো থাকবেন!
অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ