সাধারণত ব্যায়াম, ওয়ার্ক আউট, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন শরীরচর্চার সময় স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রেগুলার ব্যবহারের জন্য প্রতিনিয়ত স্পোর্টস ব্রা এর চাহিদা বেড়ে চলেছে। কিন্তু আমাদের অনেকেরই স্পোর্টস ব্রা বা এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। তাই আজকে চলুন জেনে নেই, স্পোর্টস ব্রা এর খুঁটিনাটি নিয়ে।
সাইজ কীভাবে নির্ধারণ করবেন?
স্পোর্টস ব্রা সাধারণত S, M, L, XL এইভাবে সাইজ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কিছু ব্রা এর সামনের দিকে চেইন থাকে, আবার কিছু ব্রা এর থাকে না। সামনে চেইন থাকলে সহজে পরা ও খোলা যায়।
Chinese Label Refer to size (USA)
S 32AA, 32A, 32B, 32C, 34AA, 34A
M 32D, 34B, 34C, 36AA, 36A
L 34D, 36B, 36C, 38AA, 38A
XL 36D, 38B, 38C, 40AA, 40A
আপনার আন্ডার বাস্ট সাইজ (under bust size) যদি জোড় সংখ্যা হয় তাহলে আপনি এর সাথে যোগ করবেন ৪, আপনার আন্ডার বাস্ট সাইজ যদি বিজোড় সংখ্যা হয় তাহলে আপনি এর সাথে যোগ করবেন ৫। ধরুন আপনার আন্ডার বাস্ট সাইজ ২৯, তাহলে এর সাথে আপনি যোগ করবেন ৫। তাহলে আপনার ব্যান্ড সাইজ (band size) হচ্ছে ২৯+৫=৩৪। আবার, যদি মাপ ৩০ হয় তাহলে এর সাথে আপনি যোগ করবেন ৪। তাহলে আপনার ব্যান্ড সাইজ হলো ৩০+৪=৩৪।
কাপ সাইজ জানতে হলে ব্রেস্টের স্ফিত অংশের মাপ নিয়ে নিন। সেইমভাবে মেজারমেন্ট টেপ নিয়ে আপনার আপার বাস্ট (upper bust) মেপে বের করুন। এবার এই সাইজ থেকে ব্যান্ড সাইজ বাদ দিন। অর্থাৎ বাস্ট সাইজ ৩৫ ইঞ্চি আর ব্যান্ড সাইজ ৩২ ইঞ্চি। তারমানে ব্রা সাইজ হবে ৩২সি (৩৫-৩২)। ( বিয়োগফল ১ অর্থে এ, ২ অর্থে বি, ৩ অর্থে সি, ৪ অর্থে ডি, ৫ অর্থে ই ইত্যাদি)। অর্থাৎ ডিফারেন্স ১ হলে কাপ সাইজ A, ২ হলে B এভাবে কাউন্ট করতে হবে।
কোন বিষয়গুলো খেয়াল রেখে পারফেক্ট ব্রা সিলেক্ট করবেন?
১। কাপের কারণে যাতে আন্ডারআর্মসের সাইডে কোন ভাঁজ না পড়ে, সেই দিকে খেয়াল করতে হবে। ভাঁজ থাকলে ওয়ার্কআউটের সময় কমফোর্টেবল ফিল করবেন না।
২। নরমাল ব্রা থেকে স্পোর্টস ব্রা একটু আলাদা হয়। এতে সাপোর্ট পাওয়া যায় বেশ ভালো, ব্রেস্ট স্যাগি হওয়া বা ঝুলে যাওয়ার চান্স থাকে না।
৩। ব্যান্ড সাইজটি আপনার ফিট হয় নাকি সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ব্যান্ড চেক করার ক্ষেত্রে উপরে হাত উঠিয়ে দেখবেন, যদি আন্ডারবাস্ট না মুভ করে তাহলে এটি আপনার জন্য পারফেক্ট।
৪। স্ট্র্যাপস, হুকস, ক্লিপস থাকলেও কোনো কিছুর জন্য যাতে অস্বস্তিবোধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। অ্যাডজাস্ট করার জন্য অনেক ব্রা-তে স্ট্র্যাপস থাকে। সারাদিন ব্যবহারের ফলে যাতে ত্বকে দাগ না পড়ে কিংবা ঘষা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৫। বাস্টের কাছের ওয়্যারগুলো সব সময় আন্ডার বাস্টের নিচে থাকবে। যদি উপরে উঠে যায় তাহলে ব্রেস্টে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা ওয়ার্কআউট করার সময় অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
৬। আমাদের ত্বকেরও শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হয়। এমন ব্রা নির্বাচন করতে হবে যাতে ঘেমে গেলে অস্বস্তিবোধ না হয়। বা ঘেমে যাওয়ার কারণে শরীরে র্যাশ বা অ্যালার্জি হতে পারে। এই ক্ষেত্রে ভালো মানের ফেব্রিকের ব্রা নির্বাচন করতে হবে।
স্পোর্টস ব্রা এর সুবিধাগুলো কী কী?
১) অস্বস্তি এড়াতে সাহায্য করে
ধরুন, আপনি জিমে যাচ্ছেন বা পার্কে হাঁটাহাটি করছেন বা ব্যায়াম করছেন। তখন কোন ব্রা পরছেন? নরমাল যেকোনো ব্রা? নরমাল ব্রা পরে ওয়ার্কআউট করতে আমাদের সবারই একটু অস্বস্তিবোধ হয়। অনেক সময় মেয়েদের হরমোনাল কারণে বা অন্য কারণে ব্রেস্টের গঠন তুলনামূলক বড় হয়। যার ফলে অনেক সময় জিমে বা রাস্তায় আপত্তিকর বা অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয়। এই অস্বস্তিবোধ এড়িয়ে চলতে স্পোর্টস ব্রা পরা ভালো। এতে ব্রেস্ট নিজস্ব অবস্থানে থাকে। আপনিও কমফোর্ট ফিল করবেন।
২) ব্রেস্টের ব্যথা কমায়
ওয়ার্কআউট করলে হাত, কাঁধ, বুকে মুভমেন্ট হয়। এই মুভমেন্টের জন্য অনেক সময় ব্রেস্টের ওপর প্রেসার পড়ে। এর থেকে ব্রেস্টে বা বুকে ব্যথা হতে পারে। স্পোর্টস ব্রা পরলে এই ব্যথা লাঘব হয়। আর যদি ব্যথা থাকে, তাহলে খেয়াল করে দেখবেন আপনার ব্রা এর সাইজটি ঠিক কিনা। যেহেতু এইটা ফুললি ব্রেস্টকে সাপোর্ট দিচ্ছে, তাই পেইন হওয়ার চান্স কম থাকে।
নরমাল ব্রা এর পরিবর্তে স্পোর্টস ব্রা
এক এক ধরনের ড্রেসআপের জন্য এক এক ধরনের ব্রা রয়েছে। কিন্তু স্পোর্টস ব্রা এখন ওয়ার্কআউটের সময় ছাড়াও অন্য সময়েও পরা হয়ে থাকে। যেমন- অফিস বা অন্য কোনো ক্ষেত্রে চাইলেই সারাদিন পরে থাকতে পারেন। স্ট্র্যাপ না থাকার কারণে সারাদিন পরে থাকলেও ত্বকের কোন দাগ বসে না। সাপোর্টিভ অ্যান্ড কমফোর্টেবল হওয়ায় সারাদিনের জন্য পরে থাকলেও অস্বস্তিবোধ হয় না। Valene এর এই স্পোর্টস ব্রাগুলো এতটাই আরামদায়ক, রেগুলার ওয়্যারের জন্য বেস্ট অপশন বলে আমার মনে হয়েছে।
এছাড়াও অনেক সময় ডাক্তাররা স্পোর্টস ব্রা পরিধান করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। যেমন- কোনো সার্জারি হলে বা ইনজুরি হলে।
স্পোর্টস ব্রা এর ব্যবহার
আমাদের পুরো শরীরে প্রতিটি অঙ্গে শক্ত সাপোর্ট রয়েছে। কিন্তু ব্রেস্টে কোন শক্ত সাপোর্ট নেই। তবে এর আশেপাশে লিগামেন্ট থাকে। আমরা যখন ওয়ার্কআউট করছি, তখন ব্রেস্টের ওপর প্রেসার পড়ছে বা মুভমেন্ট হচ্ছে। এর ফলে অনেক সময়ই লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে অনেক সমস্যাই দেখা দেয়। শারীরিক এইসব সমস্যার সম্মুখীন যাতে না হতে হয় এর জন্যই ওয়ার্কআউটের সময় স্পোর্টস ব্রা পরাটা সব থেকে জরুরী।
ব্রা এর যত্ন নিবেন কীভাবে?
ভালো ব্রা নির্বাচন করলে যত্নও নিতে হবে সঠিকভাবে। ব্লিচ, ড্রাই ক্লিন, ওয়াশিং মেশিনে ব্রা পরিষ্কার করতে দেয়া যাবে না। হাতে হালকা করে ধুয়ে নিতে হবে। ব্রা এর আন্ডার বাস্টের নিচে ব্রাশ দিয়ে হালকা করে ক্লিন করে নিতে হবে। মাইল্ড ডিটারজেন্ট দিয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে ক্লিন করে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
মনে রাখবেন, ভালো মানের ব্রা কিন্তু ওয়ার্কআউট বা স্পোর্টসের সময় আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে সাহায্য করবে। আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। স্কিন ও হেয়ার কেয়ারের পাশাপাশি আপনার জন্য সঠিক লঞ্জেরি আইটেমটি কিনতে ভিজিট করতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর থাকবেন।
ছবি- সাজগোজ