সৌন্দর্য কি শুধুমাত্র গায়ের রঙে? একদমই না। হেলদি স্কিন দেখতে কিন্তু সবথেকে সুন্দর লাগে, তাই না? আর হেলদি স্কিন পেতে হলে স্কিন কেয়ারের জুড়ি নেই। হেলদি লুকিং স্কিন চাইলে সবার আগে জানতে হবে আপনার স্কিনের খাদ্য হিসেবে কি দরকার? হাইড্রেশন আর ময়েশ্চারাইজেশন এই দুইটা শব্দের সাথে আমরা কম বেশি পরিচিত। আর হেলদি অ্যান্ড বিউটিফুল স্কিনের জন্য স্কিন কেয়ারের এই দুটো ধাপ অনেক বেশি ইম্পরট্যান্ট। কিন্তু আপনার কি ধারণা আছে, আপনার ত্বকের জন্য কোনটি দরকার? হাইড্রেশন নাকি ময়েশ্চারাইজেশন? নাকি দুইটাই দরকার আপনার ত্বকে? আর সেটা কীভাবে বুঝবেন?
অনেকেই ভাবেন, আমার স্কিন তো ড্রাই। আমার বেশি করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলেই হবে। কিন্তু আসলে দেখা যায়, তার স্কিনে হাইড্রেশন এর অভাব আছে। এই ব্যাপারগুলোতো বুঝতে হবে আগে। সেই বুঝে স্কিন কেয়ার করলেই তবে না পাওয়া যাবে হেলদি লুকিং স্কিন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই, হাইড্রেশন নাকি ময়েশ্চারাইজেশন, কোনটা আপনার ত্বকের জন্য দরকার সেই সম্পর্কে।
হাইড্রেশন কেন আপনার ত্বকের জন্য দরকার?
আমাদের ত্বক কিন্তু প্রায়শই পানি হারায়। যার ফলে স্কিন ডিহাইড্রেট হয়ে যায়। যে কোনো স্কিন টাইপেই ডিহাইড্রেশন দেখা যেতে পারে, সেটা হোক নরমাল, অয়েলি বা ড্রাই স্কিন। তখন স্কিনে হাইড্রেটর হিসেবে কাজ করে এমন কিছু প্রোডাক্ট যেমন- সিরাম, যা বিশেষ ফর্মুলা মেনে বিশেষ উপাদান দিয়ে তৈরি। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বকে পানির পরিমাণ বাড়ে। ত্বক যে পরিমাণ পানি হারিয়েছে, হাইড্রেশন সেই পানির অভাব পুরোটাই পূরণ করে দেয়। যার ফলে স্কিন সেলস দেখতে উজ্জ্বল এবং দ্বীপ্তিময় লাগে। হাইড্রেশন শুধুমাত্র ত্বকের আদ্রতাই বাড়ায় না, এটি কোনো প্রোডাক্ট-এ থাকা নিউট্রিয়েন্টসগুলো আমাদের ত্বকে শোষণে সাহায্য করে।
স্কিন ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ
রিংকেলস, রেডনেস, ড্রাই, খসখসে, লুজ স্কিন ইত্যাদি হলো স্কিন ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ! পরিমানমতো পানি না খাওয়া, প্রচুর ক্যাফেইন জাতীয় ড্রিংকস খাওয়া, আনহেলদি ফুড হ্যাবিট, দূষন ইত্যাদি স্কিনকে ডিহাইড্রেট করে দেয়। তাই এগুলো মেনটেইন করে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
কীভাবে স্কিনের যত্ন নিবো?
ডিহাইড্রেট স্কিন থেকে মুক্তি পেতে আমাদের স্কিন কেয়ারে যোগ করতে হবে হাইড্রেশন দেয় এমন প্রোডাক্ট। যেমন – Hyaluronic acid, glycerin, alpha hydroxy acids, sodium pca এগুলোকে হাইড্রেটিং ইনগ্রেডিয়েন্টস বলা হয়। যেমন, Hyaluronic acid যুক্ত সিরাম ব্যবহারে আপনার স্কিনে হাইড্রেশন ফিরে আসবে।
ময়েশ্চারাইজেশন
ময়েশ্চারাইজেশন আমাদের ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। হাইড্রেশন যেমন আমাদের স্কিনে আর্দ্রতা দেয়, তেমনি সেই আর্দ্রতা ধরে রাখাটাও কিন্তু জরুরী। আর ময়েশ্চারাইজেশন সেটা ধরে রাখার কাজটি করে থাকে। এটি স্কিনের উপরে একটা প্রোটেকটিভ ব্যারিয়ার তৈরি করে এবং ময়েশ্চার লক করে দেয়। যার ফলে স্কিন সফট অ্যান্ড স্মু্থ থাকে।
ময়েশ্চারাইজারের ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো হচ্ছে – petrolatum, silicone derivatives, lanolin, lecithin ইত্যাদি, যা স্কিন ব্যারিয়ার ইম্প্রুভ করে ফেইসের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
হাইড্রেশন নাকি ময়েশ্চারাইজেশন, কোনটি আপনার ত্বকের দরকার?
হাইড্রেশন এবং ময়েশ্চারাইজেশন সম্পর্কে তো জানা হলো, এবার আসি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। আপনার ত্বকে হাইড্রেশন দরকার নাকি ময়েশ্চারাইজেশন দরকার? নাকি দুটোই দরকার। সেটাই তো আসলে বুঝতে হবে। তাই না? নয়ত হেলদি লুকিং স্কিন কী করে পাবেন! এজন্য আপনার স্কিন কন্ডিশনের দিকে নজর দিতে হবে প্রথমেই।
- যদি আপনার ত্বক অনেক বেশি টাইট, ইচি ফিল হয় এবং স্কিন পিল হতে দেখা যায়, তবে বুঝতে হবে আপনার স্কিনের ব্যারিয়ার ময়েশ্চার ধরে রাখতে পারছে না এবং ঠিকভাবে কাজ করছে না। এইক্ষেত্রে বুঝতে হবে আপনার স্কিনে ময়েশ্চারজেশনের অভাব।
- যদি আপনার স্কিন দেখতে মলিন, শুষ্ক, ইভেন ফাইন লাইনস দেখা যায় তবে আপনার স্কিন ডিহাইড্রেশনে ভুগছে। এছাড়া অনেক সময় স্কিনে পানির অভাবের কারনে স্কিন সেলস অতিরিক্ত অয়েল প্রোডিউস করতে শুরু করে। এই ব্যাপারটাও একটু খেয়াল করে দেখবেন। এই অবস্থায় আপনার স্কিনে অবশ্যই হাইড্রেটর দরকার।
- যথেষ্ট পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরেও স্কিনে জেল্লা নেই? বা দেখতে মলিন লাগে? তবে আপনার ত্বকের জন্য হাইড্রেশন ও ময়েশ্চারাইজেশন দুটোই দরকারি।
কীভাবে সঠিক হাইড্রেটর বা ময়েশ্চারাইজার সিলেক্ট করবেন?
এতক্ষণের আলোচনায় এটুকু তো বুঝতে পেরেছেন যে, আপনার ত্বকের জন্য আসলে কোনটা দরকার। কিন্তু তারপরেও কথা থাকে। সেটা হলো, সঠিক হাইড্রেটর বা ময়েশ্চারাইজার কীভাবে বুঝবো বা সিলেক্ট করবো?
যেকোনো স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কেনার আগে অবশ্যই ইনগ্রেডিয়েন্টস লিস্ট চেক করে দেখবেন। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কোন প্রোডাক্টটি আপনার জন্য বেস্ট হবে। আপনার ত্বকে হাইড্রেশন এর অভাব হলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা আবশ্যক। সাথে সাথে একটা ওয়াটার বেইজড হাইড্রেটর ব্যবহার করতে পারেন। ওয়াটার বেইজড হাইড্রেটর সব টাইপের স্কিনের জন্য ভালো কাজ করে। এছাড়া আপনার স্কিন অয়েলি হলে হাইড্রেশনের জন্য AHAs যুক্ত সিরাম ব্যবহার করতে পারেন। স্কিনে ময়েশ্চারাইজেশনের অভাব থাকলে সামার বা স্প্রিং সিজনে জেল বেইজড বা লাইট ময়েশ্চাইজিং লোশন ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার স্কিন যদি ম্যাচিউর হয় বা ৩০ বছরের পরে হাইড্রেটর এবং ময়েশ্চারাইজার দুটোই ব্যবহার করা উচিত।
এই তো জেনে নিলেন, হাইড্রেশন আর ময়েশ্চারাইজেশন সম্পর্কে। আশা করছি, এই আর্টিকেল থেকে ধারণা পাবেন কোনটি আপনার স্কিনের জন্য আসলেই দরকার। অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে আমার সবসময়ই ভরসা শপ.সাজগোজ.কম। অনলাইনে অর্ডার করে ঘরে বসেই প্রোডাক্ট হাতে পেয়ে যায়। আর সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর ( জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ