চুল এবং চুলের যত্ন নিয়ে প্রতিদিন আমাদের ভাবনার শেষ নেই। চুলকে মজবুত ও ঘন করতে নানা ধরনের যাচাই বাছাই করে চুলের জন্য তেল নির্বাচন করি। চুলের প্রবলেম অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করা সহ কত ধরনের হেয়ার প্যাকই না ব্যবহার করি। তবে স্কিনের মত চুলে সিরাম ব্যবহার করার ব্যাপারে কি কখনও ভেবে দেখা হয়েছে? না হয়তো! ত্বকের যেকোনো নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানে সিরাম কাজ করে; ঠিক তেমনি চুলের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তাকে টার্গেট করে হেয়ার সিরাম কাজ করে। এরকমই ৪ ধরনের হেয়ার সিরাম ও এদের কার্যকারিতা নিয়ে আজকের এই ফিচার!
৪ ধরনের হেয়ার সিরাম ব্যবহারে চুল হবে ঝলমলে ও মসৃণ
মার্কেটে ঘুরলেই হাজার রকমের হেয়ার সিরাম দেখা যায়। প্রত্যেকটি সিরাম ভিন্ন ভিন্ন কনসার্ন নিয়ে কাজ করে। কিছু সিরাম আছে চুলকে ময়েশ্চারাইজড করে, কিছু সিরাম হিট প্রটেক্টর হিসেবে দারুণ কার্যকরী, আবার বেশ কিছু সিরাম আছে যা চুলের শাইনকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখে।
হেয়ার রিপেয়ারিং সিরাম
আমাদের চুল বিভিন্ন কারনে ড্যামেজ হয়ে যায়। তখন আগা ফাটতে শুরু করে, চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়, চুল মাঝ বরাবর ভাঙ্গতে শুরু করে। এই সব সমস্যা দূর করতে প্রয়োজন হেয়ার রিপেয়ারিং সিরাম।
এছাড়াও; চুলে স্টাইল করার জন্য কার্ল, স্ট্রেইট, কালার কত কিছুই না করি। এতে চুলের উপর দিয়ে অনেক স্ট্রেস যায় এবং ভালোভাবে যত্ন না নেয়ার কারনে চুল রুক্ষ হতে শুরু করে। তাই এসকল সমস্যা সমাধানে হেয়ার রিপেয়ারিং সিরাম ব্যবহার করা অত্যাবশ্যকীয়। আপনার চুলে যদি এরকম সমস্যা থাকে; তবে ব্যবহার করতে পারেন প্যাক্সমলি কোলাজেন এক্সট্রা রিপেয়ার হেয়ার সিরাম। হাইড্রলাইজড কোলাজেন যুক্ত সিরামটি দূর্বল চুলগুলোকে ময়েশ্চারাইজড করে ভেঙ্গে যাওয়া প্রতিরোধ করবে।
কীভাবে ব্যবহার করব?
হেয়ার রিপেয়ারিং সিরাম ব্যবহারের জন্য প্রথমেই চুল ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর-
১/ হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা হেয়ার রিপেয়ারিং সিরাম নিয়ে হালকা ভেজা চুলে স্ক্যাল্পের একটু নিচে থেকে শুরু করে চুলের আগা পর্যন্ত সমানভাবে লাগিয়ে নিতে হবে।
২/ এবার চুল ন্যাচরালি অথবা ব্লো ড্রাই করে শুকিয়ে নিতে হবে।
৩/ চুল শুকিয়ে গেলে হালকা করে আবার একটু সিরাম দিয়ে নিলেই চুল হবে একদম ঝরঝরে এবং শাইনি।
হিট প্রটেক্টটিং সিরাম
আমরা চুলে নতুনত্ব আনতে কত ধরনের স্টাইলই না করি। এসব স্টাইল করতে চুলে নানান রকমের হিট যুক্ত মেশিন যেমন; হেয়ার স্ট্রেইটনার, কার্লার ব্যাবহার করি। এতে করে চুলের ময়েশ্চার কমে গিয়ে চুল ড্রাই করে ফেলে। চুল দেখতে একদম নির্জীব লাগে। এর জন্য চুলে যেকোনো হিট যুক্ত স্টাইলিং মেশিন ব্যবহারের আগে হিট প্রটেক্টটিং সিরাম অ্যাপ্লাই করে নিলে এই ধরনের চুলের সমস্যা আর হবে না।
রিজেনেবল প্রাইসের মধ্যে VO5 হিট প্রটেক্ট সিরাম হতে পারে একটি বেস্ট চয়েস। হিট যুক্ত স্টাইলিং মেশিন ব্যবহারের আগে এই সিরাম চুলে অ্যাপ্লাই করে নিলে হিটের কারনে চুলের আর কোন ক্ষতি হবে না। মনের খুশি মত যত ধরনের স্টাইল করতে পারেন।
কীভাবে ব্যবহার করলে চুল প্রটেক্টেড থাকবে?
১/ প্রথমেই চুল পানি দিয়ে হালকা একটু ভেজা ভেজা করে নিতে হবে।
২/ হাতের তালুতে VO5 হিট প্রটেক্ট সিরাম নিয়ে চুলের মাঝ বরাবর থেকে শুরু করে চুলের নিচ পর্যন্ত অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে।
৩/ চুলে ভালো করে অ্যাপ্লাই করে নিয়ে এবার হিট যুক্ত মেশিন যেমন; হেয়ার স্ট্রেইটনার, কার্লার ব্যবহার করতে হবে।
ছোট্ট একটি টিপস
ব্লো ড্রাই করার আগে এই সিরাম অ্যাপ্লাই করে নিলে সিল্কি এবং শাইনি চুল পাওয়া যাবে নিমিষেই।
নারিশিং হেয়ার সিরাম
প্রতিদিন যদি চুলকে প্রাণবন্ত দেখতে চান, তবে ডেইলি হেয়ার কেয়ারে একটা নারিশিং হেয়ার সিরাম রাখা উচিৎ। চুল যদি নারিশড থাকে, তবে চুল দেখতে যেমন ঝলমলে লাগবে ঠিক তেমনি আপনার ফ্রিজি চুলকে সারাদিনের জন্য ম্যানেজেবল করবে। হেয়ার নারিশিং এর জন্য একটি পারফেক্ট সিরাম হল স্ট্রিক্স ভিটারিচ গ্লস হেয়ার সিরাম। এই প্রফেশনাল হেয়ার সিরামটি ব্যবহার করলে বাসায় বসেই পার্লারের মত গর্জিয়াস ও ঝলমলে চুল পাবেন।
এতে আছে ম্যাকাডেমিয়া অয়েল এবং ভিটামিন ই। এতে করে চুল হয়-
- নারিশড
- স্মুথ
- ফ্রিজ ফ্রি
- শাইনি এবং সিল্কি
- ম্যানেজেবল ও গ্লসি
যেকোনো ধরনের চুলে এই সিরাম অ্যাপ্লাই করে নিলে সারাদিনের জন্য প্রাণবন্ত চুল পাওয়া যাবে।
কীভাবে ব্যবহার করতে হবে?
স্ট্রিক্স ভিটারিচ গ্লস হেয়ার সিরাম ব্যবহারের জন্য প্রথমেই চুলকে পানি দিয়ে একটু ভেজা ভেজা করে নিতে হবে। এরপর-
১/ হাতের তালুতে ২-৩ ফোঁটা স্ট্রিক্স ভিটারিচ গ্লস হেয়ার সিরাম নিয়ে নিতে হবে।
২/ এরপর হাতের তালুতে ভালো করে ছড়িয়ে নিয়ে চুলের মাঝ বরাবর থেকে শুরু করে চুলের নিচ পর্যন্ত অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে।
চুলে এক্সট্রা শাইন এবং ফ্রিজিনেস মুক্ত চুল পেতে সারাদিন যেকোনো সময়ই এই সিরাম ব্যবহার করা যাবে।
হেয়ার ম্যানেজিং সিরাম
দিনের বেশিরভাগ সময়েই আমাদের অনেকের চুল একদম এলোমেলো হয়ে থাকে। চুল যেভাবে রাখতে চাই সেভাবে তো থাকেই না, বরং জট বেঁধে পুরোই এলোমেলো হয়ে যায়। দেখা যায়, বাসা থেকে বের হওয়ার আগে চুল খুব ভালোভাবে সেট করে বের হলাম কিন্তু বাহিরে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই চুল যেন পাখির বাসা হয়ে যায়! তাই চুল ম্যানেজ করতে প্রয়োজন একটি ভালো হেয়ার ম্যানেজিং সিরাম। ৪ ধরনের হেয়ার সিরামের মধ্যে এমন একটি সিরাম হল লিভন সিরাম।
লিভন সিরামে আছে অ্যালোভেরা এবং ভিটামিন ই; যা চুলের-
- ফ্রিজিভাব দূর করে।
- ইনস্ট্যান্ট শাইনি এবং সিল্কি করে।
- চুলে জট লাগতে দেয় না।
- চুল ড্যামেজ হওয়া থেকে প্রোটেক্ট করে।
- চুলকে স্মুথ এবং অনেক বেশি ম্যানেজেবল করে।
কীভাবে ব্যবহার করতে হবে?
অন্যান্য সিরামগুলোর মতই চুল পানি দিয়ে হালকা ভিজিয়ে নিতে হবে। এরপর-
১/ চুলের লেন্থ অনুযায়ী পরিমাণ মত সিরাম হাতের তালুতে নিতে হবে।
২/ চুলের মাঝ বরাবর থেকে চুলের আগা পর্যন্ত হাতের তালু দিয়ে ভালো করে সিরাম অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে।
চুলের ধরন অনুযায়ী আশা করছি কোন সিরামটি ব্যবহার করতে হবে; তা তো জানা হয়ে গেলো। আপনার চুলের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী হেয়ার সিরাম চ্যুজ করতে; আর কোনও কনফিউশনে পড়তে হবে না। এই ৪ ধরনের হেয়ার সিরাম ব্যবহারে পাবেন মসৃণ এবং ঝলমলে চুল! প্রতিদিন বেসিক হেয়ার কেয়ারের পাশাপাশি চুলের শাইন আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য এবং চুলকে প্রোটেক্টেড রাখার জন্য একটি হেয়ার সিরাম প্রতিদিন চুলের যত্নে সাথে রাখা উচিৎ। অথেনটিক হেয়ার সিরাম কিনতে আপনারা চাইলে সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত সম্ভারে অবস্থিত, সেখান থেকে কিনতে পারেন আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন। আজ এ পর্যন্তই!
ছবি- সাজগোজ