জোজোবা অয়েল এর ৫টি অ্যামেজিং স্কিনকেয়ার বেনিফিটস!

জোজোবা অয়েল এর ৫টি অ্যামেজিং স্কিনকেয়ার বেনিফিটস

2 (3)

যুগের পরিক্রমায় সৌন্দর্যচর্চায় এসেছে অনেক পরিবর্তন। সেই পরিবর্তনের ধারা থেকে আজকে আমরা একটি দারুণ উপকারী অয়েল সম্পর্কে জানবো। আর সেটি হচ্ছে জোজোবা অয়েল (উচ্চারণ- হোহোবা অয়েল)। স্কিনকেয়ারে এখন ফেইস অয়েলের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। অনেকের হয়তো জানা আছে এই তেলের গুণাগুণ, আবার অনেকে জানলেও এর ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না। চলুন তাহলে জেনে নেই সৌন্দর্যচর্চায় জোজোবা অয়েল কী কী বেনিফিটস দেয়। ত্বকের যত্ন নিতে স্কিনকেয়ার রুটিনে কেন এই তেলটি ইনক্লুড করবেন, সেটাও এখন জানতে পারবেন।

জোজোবা (হোহোবা) আসলে কী?  

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় কসমেটিকসে এই প্রসিদ্ধ অয়েলের ব্যবহার শুরু হয় ১৯৭০ সাল থেকে। জোজোবা অয়েলের উৎস হল জোজোবা নামক গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম “Simmondsia Chinensis” এটি মূলত আমেরিকা যুক্তরাস্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা ও মেক্সিকোতে জন্মে। এ গাছ এতোটাই প্রাণশক্তি সম্পন্ন যে এটি প্রচন্ড রুক্ষ প্রাকৃতিক পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। এই গাছে একধরনের তেলবীজ বা বাদাম উৎপন হয়, যা থেকে জোজোবা তেল সংগ্রহ করা হয়।

সৌন্দর্যচর্চায় জোজোবা অয়েল

চুলের যত্নে তেলের ব্যবহার নিয়ে আমরা সবাই জানি, কিন্তু ত্বকের যত্নে তেল? ঠিকই শুনেছেন! সব ধরনের ত্বকের যত্নে দারুণ কাজ করে এই ন্যাচারাল অয়েলটি। পোরস ক্লগড না করেই স্কিনের যত্ন নিতে এর জুড়ি নেই। চলুন জোজোবা তেলের ফিচারগুলো জেনে আসি।

ময়েশ্চার এলিমেন্টযুক্ত

জোজোবা তেলে এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান বিদ্যমান যেটা ত্বকের স্তরে স্তরে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে, ত্বককে দীর্ঘসময় ধরে আর্দ্র রাখে। তাই বিভিন্ন অ্যাসেনশিয়াল অয়েলের সাথে লোশন, ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ও অন্যান্য প্রসাধনীতে জোজোবা অয়েল ব্যবহৃত হচ্ছে।

অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রোপারটিজযুক্ত 

জোজোবা তেলের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী গুণ আছে। অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ থাকাতে এটি ব্রণের উপদ্রব থেকে মুক্তি দিতে অনেকটাই হেল্প করে। যাদের স্কিন অয়েলি ও একনে প্রন, তারাও ইউজ করতে পারেন।

মেকআপ রিমুভিং ক্যাপাবিলিটি 

অনেকেরই হয়তো জানা নেই এটি মেকআপ রিমুভ করে ম্যাজিকের মতো। এমনকি সানস্ক্রিন থেকে শুরু করে ওয়াটার প্রুফ মাশকারা বা যত হেভি মেকআপ-ই হোক না কেন! ত্বকের রোমকূপ বন্ধ করে দেয় না, তাই হাতের কাছে অয়েল ক্লেনজার না থাকলে এই তেলটি দিয়ে কিন্তু ডাবল ক্লেনজিং করা যেতেই পারে। তবে চেষ্টা করবেন মেকআপ রিমুভিংয়ের জন্য অয়েল বেইজড ক্লেনজার ব্যবহার করতে।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ

জোজোবা অয়েলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই রয়েছে যা ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভালো একটি উৎস। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রোপারটিজের জন্য এই ন্যাচারাল তেলটি ত্বকে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকে বয়সের ছাপ, বলিরেখা, পিগমেন্টেশন কমাতে সাহায্য করে।

তৈলাক্ত ত্বকেও মানানসই

তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা অয়েলি ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহার করতে ভয় পান, পোরস ক্লগ করবে কিনা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। তাদের জন্য সুখবর হলো জোজোবা অয়েল ভেষজ উপাদান হওয়ায় ত্বকে উৎপাদিত সেবাম এর সাথে এর রাসায়নিক গঠনে কিছুটা মিল রয়েছে। তাই পোরস বন্ধ হয়ে ব্রেক আউটের সম্ভাবনা নেই!

SHOP AT SHAJGOJ

     

    হাইপো অ্যালার্জিক

    জোজোবা অয়েলের রাসায়নিক গঠনের জন্য এটি ত্বকের উপরিভাগে একটি মসৃণ আবরণ তৈরি করে। তাই এই তেল ব্যবহারে ত্বকে জ্বালা-পোড়া বা ইরিটেশন হয় না। আপনার স্কিন সেনসিটিভ হলেও এই তেলটি কিন্তু আপনার জন্য সেইফ।

    উপকারিতা 

    ১) অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব কমায়

    তেল আবার ফেইসের অয়েলিনেস কীভাবে কমায়? একটু অদ্ভুত লাগছে শুনতে, তাই না? কিন্তু এটি একদমই সত্যি! আগেই বলেছি জোজেবা তেলের গঠন অনেকটা ত্বক থেকে ক্ষরিত সেবামের মতো। তাই এটি যখন ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন ত্বক মসৃন ও হাইড্রেটেড থাকার সাথে সাথে সেবাম উৎপাদনকারী গ্রন্থিতে সিগন্যাল চলে যায়, যেন অতিরিক্ত সেবাম ক্ষরিত না হয়। এভাবে ত্বকের অয়েল লেভেল ব্যালেন্সড থাকে।

    ২) কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়ায়

    কোলাজেন সম্পর্কে সৌন্দর্য সচেতন ব্যক্তিরা কম বেশি জানেন। এটি একটি প্রোটিন যা ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে, ত্বক টানটানে রাখে এবং উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। জোজোবা তেলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট করে স্কিনকে হেলদি রাখতে হেল্প করে।

    ৩) ক্ষত সারিয়ে তোলে

    ব্রণ চলে যাওয়ার পর রেখে যাওয়া ক্ষত সারিয়ে তুলতে জোজোবা তেল চমৎকার কাজ করে। রোদে পোড়াভাব কমিয়ে দাগ-ছোপ মুক্ত ত্বক ফিরিয়ে আনতে জোজোবা অয়েল কয়েক ফোঁটা ফেইসপ্যাকের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। অনেকে লোম তুলতে শেইভ করেন বা ঘরে বসেই ওয়্যাক্সিং করেন। বডির হেয়ার রিমুভিং শেষে এই তেলটি দিয়ে ম্যাসাজ করে নিলে ত্বক থাকবে কোমল।

    ৪) লিপবাম হিসেবে

    হিলিং প্রোপারটিজ থাকায় জোজোবা অয়েল শুষ্ক ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন। লিপ এক্সফোলিয়েশনের সময় লেবু, মধু, চিনির সাথে কয়েক ড্রপ জোজোবা তেল মিক্স করে নিলে ঠোঁট কোমল ও সুন্দর থাকবে। যাদের সারাবছরই ঠোঁট ফাটার সমস্যা দেখা যায়, তাদের জন্য লাইফ সেভিয়ার হতে পারে এই অয়েল।

    ৫) চর্মরোগের চিকিৎসায়

    সোরিয়াসিস, একজিমার মতো ত্বক শুষ্ক করে দেয়া চর্মরোগের চিকিৎসায় ইমোলিয়েন্ট রূপে বিভিন্ন অ্যাসেনশিয়াল অয়েলের সাথে জোজোবা অয়েল ব্যবহৃত হয়। অনেকেরই হাত পায়ের চামড়া একদম রুক্ষ হয়ে যায়, এক্সট্রিম ডিহাইড্রেটেড স্কিন রিপেয়ার করতে এই তেল দারুণ কার্যকরী। সারা বছরই এই তেল আপনি সেলফ কেয়ারে ইউজ করতে পারবেন। যেহেতু একদম প্রাকৃতিক উপাদান থেকে প্রস্তুত করা হয়, তাই এর কার্যকারিতাও একটু বেশি!

    ব্যবহারবিধি

    উপকারিতা তো জানা হলো, এবার জেনে নেই ত্বকের যত্নে এটি কীভাবে ব্যবহার করবেন। জোজোবা অয়েল ব্যবহারের তেমন বাঁধা ধরা নিয়ম নেই। রাতে ঘুমানোর আগে অন্যান্য প্রোডাক্ট ব্যবহারের পাশাপাশি সরাসরি অয়েল ফেইসে ড্যাব ড্যাব করে লাগিয়ে নিতে পারেন। জোজোবা অয়েল খুব মাইল্ড। এটি ক্যারিয়ার অয়েল হিসাবেও ইউজ করা যায়। ফেইসপ্যাকের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। মেকআপ রিমুভালে ইউজ করা যেতে পারে। ফেইস ম্যাসাজের সময়ও ব্যবহার করা যায়। মোটকথা এই তেলটি সবভাবেই আপনি ইউজ করতে পারবেন।

    কোন ধরনের স্কিনে এটা স্যুট করবে?

    এটি এমন একটি কার্যকরী ন্যাচারাল অয়েল যেটা কিনা অয়েলি, ড্রাই, সেনসিটিভ, কম্বিনেশন সব ধরনের স্কিনে দারুণভাবে স্যুট করে। এর কোনো সাইড ইফেক্টস নেই! তবে সব উপাদান সবার ত্বকে অ্যাডজাস্ট নাও হতে পারে। যেকোনো প্রোডাক্টই কারো কারো জন্য সংবেদনশীলতার কারণ হতে পারে তাই ব্যবহারের পূর্বে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া ভালো।

    সতর্কতা

    এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রেগনেন্ট মহিলাদের এবং ব্রেস্ট ফিডিং মায়েদের জন্য কোনো নিষেধ নেই। যেহেতু প্রাকৃতিক উপাদান থেকেই প্রস্তুত করা হয়, তাই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ব্যবহারের সময় চোখে যেন না যায় সেটা খেয়াল রাখবেন এবং বাচ্চাদের থেকে অবশ্যই দূরে রাখতে হবে। এটি অন্যান্য অয়েলের মত সেলফ স্ট্যাবল হওয়ায় আপনি রুম টেম্পারেচারেই প্রিজার্ভ করতে পারবেন। তবে সরাসরি সূর্যের আলো বা হিট থেকে দূরে রাখবেন।

    SHOP AT SHAJGOJ

       

      সৌন্দর্যচর্চায় জোজোবা অয়েল কতভাবে আপনাকে বেনিফিটস দিতে পারে সেটা আমরা জানলাম। তাহলে দেরি না করে আপনার রেগুলার স্কিন কেয়ার রুটিনে এই ন্যাচারাল অয়েল অ্যাড করে নিন! পার্থক্যটা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। শত শত কেমিক্যালের ভিড়ে ত্বকের যত্নে থাকুক না একটু প্রকৃতির ছোঁয়া! আমি অনেক দিন ধরেই স্কিন ক্যাফে ন্যাচারাল জোজোবা অয়েল ব্যবহার করছি এবং এটা আমার খুবই পছন্দের একটি প্রোডাক্ট।

      আজ তো ত্বকের যত্ন নিয়ে কথা বললাম, চুলের যত্নেও এই তেল দারুণ কাজ করে, সেটা নিয়ে আরেকদিন লিখবো। আমি অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনেছি, সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর ( জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

       

      ছবি- সাজগোজ, উইকিপিডিয়া

      15 I like it
      2 I don't like it
      পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

      escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort