আগের দিনে ত্বকের যত্নে নারিকেল তেল, পেট্রোলিয়াম জেলির মতো পণ্যের ব্যবহার থাকলেও যুগের সাথে সাথে যুক্ত হয়েছে নানা পণ্য। এর মধ্যে একটি হচ্ছে আমন্ড অয়েল। এটি শুধু ত্বক নয়, চুলের জন্যও সমান উপকারী। আমন্ড অয়েলে আছে ভিটামিন এ, ডি ও ই এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদানগুলো স্কিনে বেনিফিট দেয় বলে একে বলা হয় নারিশমেন্টের পাওয়ারহাউজ। বিউটি রুটিনে আমন্ড অয়েল কীভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে জানতে চান? চলুন তাহলে জেনে নেই এ বিষয়েই বিস্তারিত।
বিউটি রুটিনে আমন্ড অয়েল এর ব্যবহার
আমন্ড অয়েলের বেনিফিটের কথা বললে বলতে হয়, ‘একের ভেতর তিন!’ কারণ মুখ ও চুলের যত্নে তো বটেই, শরীরের অন্যান্য অংশেও এই অয়েল নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। চলুন জেনে নেই বিউটি রুটিনে আমন্ড অয়েল কীভাবে ব্যবহার করা যায় সেই সম্পর্কে-
ফেইসে ব্যবহার করার বেনিফিটস
স্কিনের ময়েশ্চার ধরে রাখে
আমন্ড অয়েলে আছে নারিশিং ও রিপেয়ারিং ইনগ্রেডিয়েন্ট। যার কারণে এটি ত্বকের রিস্টোরেটিভ ট্রিটমেন্ট হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিনের স্কিন কেয়ারে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রেখে স্কিনের রাফনেস দূর করবে, সাথে স্কিন টোন করে তুলবে ইভেন।
ডার্ক সার্কেল কমায়
আমন্ড অয়েলে আছে ভিটামিন ই। যার কারণে এটি অ্যান্টি পিগমেন্টেশন বেনিফিট দেওয়ার পাশাপাশি ইউভি ড্যামেজের হাত থেকেও বাঁচায়। শুধু এই দুটো কারণেও আন্ডার আই ক্রিম হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। আমরা অনেকেই রাত জেগে পড়াশোনা করি, কাজ করি। যার কারণে ডার্ক সার্কেল বেশ ভিজিবল হয়ে ওঠে। অনেকের ঘুম থেকে উঠলে চোখ ফুলে থাকে। দিনের অনেকটা সময় এই পাফিনেস রয়ে যায়। ডার্ক সার্কেল ও আই পাফিনেসের প্রবলেম দূর করতে অয়েলটি বেশ ইফেক্টিভলি কাজ করে।
ঠোঁটের কোমলতা ধরে রাখে
আমন্ড অয়েলে আছে ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ই। তাই আল্ট্রা-সুদিং ও ময়েশ্চারাইজিং ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসেবে এটি বেশ ভালো কাজ করে। যাদের শুষ্ক ও ঠোঁট ফাটার সমস্যা রয়েছে তারা বিউটি রুটিনে আমন্ড অয়েল অ্যাড করে নিতে পারেন।
ইমার্জেন্সি মেকআপ রিমুভার হিসেবে কাজ করে
সাধারণত ক্লেনজিং অয়েল দিয়ে মেকআপ রিমুভ করতে হয়। তবে ক্লেনজিং অয়েল না থাকলে ইমার্জেন্সি হিসেবে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে আমন্ড অয়েল কুসুম গরম করে দুই হাতের তালুতে নিয়ে ভালো করে মুখে লাগিয়ে নিতে হবে। এতে মেকআপ মেল্ট হয়ে উঠে আসবে। ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ রিমুভ করতেও খুব ভালো কাজ করে আমন্ড অয়েল।
ডাবল ক্লেনজার হিসেবে কাজ করে
প্রতিদিন বাইরে যাওয়ার সময় ফেইসে সানস্ক্রিন লাগানো হয় বা মেকআপ করা হয়। এরপর বাড়িতে ফিরে ফেইস ক্লিন করার জন্য ইউজ করা হয় ফেইস ওয়াশ। কিন্তু এতে কি ফেইস প্রোপারলি ক্লিন হয়? না। এজন্য অবশ্যই ডাবল ক্লেনজিং করা জরুরি। সাধারণত মাইসেলার ওয়াটার বা ক্লেনজিং অয়েল দিয়ে ফেইস ক্লিন করা হয়। তবে যদি হাতের কাছে ক্লেনজিং অয়েল না থাকে তাহলে এর বদলে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ফেইস ক্লিন করার জন্য আগে আমন্ড অয়েল একটি কটনপ্যাডে নিয়ে স্কিনে অ্যাপ্লাই করে নিন। এবার ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ব্যস! এবার আপনার ফেইস নেক্সট স্কিন কেয়ার স্টেপের জন্য একদম রেডি!
বডিতে ব্যবহার করার বেনিফিটস
কিউটিকল অয়েল হিসেবে কাজ করে
মাসে একবার মেনিকিওর বা পেডিকিওর অনেকেই করেন। কিন্ত সেই সাথে সাথে হেলদি নেইলসের জন্য রেগুলার নখেরও যত্ন নিতে হবে। নখের কিউটিকল ময়েশ্চারাইজড রাখার জন্য আমন্ড অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। কিউটিকল অয়েলের খুব ভালো একটি রিপ্লেসমেন্ট হতে পারে এই অয়েলটি।
বডি ম্যাসাজ অয়েল হিসেবে ব্যবহার করা যায়
বডি ম্যাসাজের কথা বললে আমন্ড অয়েলের কথা বলতেই হয়। কারণ স্কিন সফট রাখতে, ত্বকের শুষ্কতা দূর করে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এই অয়েল বেশ কার্যকর।
হেয়ার কেয়ারে আমন্ড অয়েলের বেনিফিটস
চুলের গোড়া শক্ত করে
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য আমন্ড অয়েল বেশ ভালো কাজ করে। এটি হেয়ার ফলিকল মজবুত রাখে, স্ক্যাল্পে নারিশমেন্ট প্রোভাইড করে এবং একইসাথে হেয়ার গ্রোথ বাড়াতে হেল্প করে। হাতের তালুতে আমন্ড অয়েল নিয়ে ভালো করে স্ক্যাল্পে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করুন এবং বেস্ট রেজাল্টের জন্য ঘন্টাখানেক রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ফ্রিজিনেস কমায়
আমন্ড অয়েল বেশ লাইট ও নন স্টিকি হওয়ায় চুলের ফ্রিজিনেস ও শুষ্কতা কমিয়ে চুলকে করে তোলে হেলদি। আমন্ড ও আরগান অয়েল স্প্রে বোতলে নিয়ে চুলে স্প্রে করুন। চুলের ফ্রিজিনেস কমাতে এটা খুবই কার্যকরী।
আমন্ড অয়েল কি স্কিনে ইউজ করা সেইফ?
সাধারণত আমন্ড অয়েলকে স্কিনের জন্য সেইফ ধরা হয়। তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা ভালো। যেমন-
১) আপনার যদি বাদামে অ্যালার্জি থাকে, তাহলে স্কিনে আমন্ড অয়েল ইউজ করা অ্যাভয়েড করুন।
২) যদি আগে কখনো স্কিনে এই অয়েল ব্যবহার করে না থাকেন, তাহলে ইউজ করার আগে একবার প্যাচ টেস্ট করে নিন।
৩) প্যাচ টেস্ট করার সময় যদি রেডনেস, ইচিং বা বার্নিং হয় তাহলে এই অয়েল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। যদি কয়েক ঘন্টার মধ্যে কোনো সমস্যা না হয়, তাহলে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।
এই তো জানিয়ে দিলাম, আমন্ড অয়েলের কার্যকারিতা সম্পর্কে। বিউটি রুটিনে আমন্ড অয়েল তাই নির্দ্বিধায় রাখতে পারেন। অথেনটিক স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের চারটি ফিজিক্যাল শপ আছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে দরকারি প্রোডাক্টগুলো কিনতে পারেন।
ছবিঃ সাজগোজ