পারফেক্ট একটা বেইজ মেকআপ পেতে ফাউন্ডেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করে। আজকাল তো সাজের সময় ফাউন্ডেশন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। তবে ম্যাট ফিনিশের ফাউন্ডেশন নাকি ডিউয়ি ফিনিশের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন, এই বিষয়টা অনেকের কাছেই ক্লিয়ার না। তাই ব্যাপারটা নিয়ে কনফিউশনও বেশি। কারণ, স্কিন অনু্যায়ী সঠিক ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করার ফলে বেইজ দেখতে ভালো লাগে না। আবার দেখা যায়, ড্রাই স্কিনের কেউ ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার কারণে তার স্কিন দেখতে আরো ড্রাই, ফ্লেকি লাগে। আবার সুপার অয়েলি স্কিনের কেউ ডিউয়ি ফিনিশের ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ফলে স্কিন আরো বেশি অয়েলি মনে হয় অথবা মেকআপ লাস্টিং করে না। তাই ফাউন্ডেশনের ফর্মুলা এবং কোনটি আপনার জন্য পারফেক্ট হবে এটা বোঝা খুবই ইম্পরট্যান্ট। আজকের আর্টিকেলে আমরা জেনে নেবো ডিউয়ি নাকি ম্যাট ফাউন্ডেশন কোনটি আপনার জন্য রাইট চয়েস?
ডিউয়ি নাকি ম্যাট ফাউন্ডেশন কোনটি আপনার জন্য বেস্ট?
ডিউয়ি ফাউন্ডেশন
আমাদের স্কিনে ডিউয়ি ফাউন্ডেশন গ্লোয়ি এবং প্লাম্পি একটা একটা ফিনিশ দেয়। বর্তমানে, এই ধরনের গ্লাস লাইক স্কিন ফিনিশ বেশ ট্রেন্ডি। ডিউয়ি ফাউন্ডেশনে রয়েছে ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট, নারিশিং অয়েলস ইত্যাদি। যার ফলে, এই ধরনের ফাউন্ডেশন সবসময় গ্লো এবং হাইড্রেশন দিয়ে থাকে।
ডিউয়ি ফাউন্ডেশনের সুবিধা
হেলদি ও ন্যাচারাল ফিনিশ দেয়
যারা একটু গ্লোয়িং স্কিন পছন্দ করেন তারা এই ধরনের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, এটি আপনার স্কিনে হেলদি এবং ন্যাচারাল একটা লুক দেবে। এটা আপনার স্কিনকে মোটেও কেকি এবং মাডি ফিনিশ দেবে না।
ড্রাইনেস দূরে রাখে
যাদের স্কিন ড্রাই, তাদের ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ফলে স্কিন আরো ড্রাই ফিল হতে পারে। এক্ষেত্রে, ডিউয়ি ফিনিশের ফাউন্ডেশন আপনার বন্ধু হতে পারে। কারণ, ডিউয়ি ফিনিশের ফাউন্ডেশনে হাইড্রেটিং, নারিশিং অয়েলস এবং বাটার থাকে। যা স্কিনকে সফট রাখে এবং ড্রাইনেস থেকে দূরে রাখে।
ইজিলি ব্লেন্ড করা যায়
ডিউয়ি ফাউন্ডেশনগুলো একটু পাতলা এবং ক্রিমি ধরনের হয়। যার ফলে, এটা খুব সহজেই ব্লেন্ড করা যায়। যার ফলে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করতে সময়ও অনেক কম লাগে।
ডিউয়ি ফাউন্ডেশনের অসুবিধা
লো কভারেজ
ডিউয়ি ফাউন্ডেশনগুলো একটু পাতলা ধরনের হওয়ার ফলে এর কভারেজটাও একটু কম পাওয়া যায়। তাই যারা ফুল কভারেজ মেকআপ পছন্দ করেন, তাদের জন্য বেইজ বিল্ড করা একটু ডিফিকাল্ট হবে। যাদের মুখে একনে এবং স্পট আছে, সেগুলো হাইড করা কষ্টকর হবে। উল্টো সেগুলো বেশি ভিজিবল মনে হতে পারে।
লো লাস্টিং পাওয়ার
ডিউয়ি ফাউন্ডেশনের লাস্টিং পাওয়ার অনেক কম হয়। এটা অনেক ক্রিমি এবং ওয়াটারি হওয়ার ফলে স্কিনে ভালোভাবে বসতে পারে না। যার জন্য, বেইজটা সারাদিন স্টে করানো একটা চ্যালেঞ্জের ব্যাপারও বটে!
গ্রিসি এবং শাইনি লুক দেয়
ড্রাই স্কিনের জন্য এই ফাউন্ডেশন ভালো কাজ করলেও যাদের স্কিন কম্বিনেশন বা অয়েলি, তাদের স্কিন দেখতে আরো শাইনি এবং গ্রিসি লাগতে পারে। যা দেখতে ভালো লাগবে না মোটেও।
ম্যাট ফাউন্ডেশন
ম্যাট ফাউন্ডেশন আমাদেরকে একটা শাইন-ফ্রি, লং লাস্টিং বেইজ দেয়। ম্যাট ফাউন্ডেশনগুলোর কভারেজও বেশ ভালো থাকে। এগুলো স্টিক, ক্রিমি, লিকুইড, পাউডার ফর্মুলার হয়ে থাকে। ম্যাট ফাউন্ডেশন তো আমরা সবাই চিনি। তাই না? সেই সেকেলে সেলিব্রিটিদের বেইজটাও আমরা ম্যাট দেখেই অভ্যস্ত। যদিও এখন বেশ কয়েক বছর ধরে অনেক চেঞ্জ দেখা গেলেও, ম্যাট বেইজের চাহিদা কিন্তু কমেনি।
ম্যাট ফাউন্ডেশনের সুবিধা
শাইন-ফ্রি বেইজ পাওয়া যায়
ম্যাট ফাউন্ডেশন তৈরিতে অয়েল বেইজড ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহার হয় না বা হলেও অনেক কম। তাই যাদের কম্বিনেশন এবং অয়েলি স্কিন তারা চোখ বন্ধ করে ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারবেন। কারণ, এটা আপনার অয়েলি ফেইসকে আরো অয়েলি না বানিয়ে ম্যাট একটা ফিনিশ দেবে।
ফুল কভারেজ এবং লং লাস্টিং
ম্যাট ফাউন্ডেশনগুলো ম্যাক্সিমামই পাউডার বেইজড হওয়ার ফলে এর পিগমেন্টেশন অনেক বেশি হয়। যার ফলে এর থেকে হাই কভারেজ পাওয়া যায়। এ ধরনের ফাউন্ডেশন আপনার ফেইসের ইমপারফেকশন যেমন – ডার্ক সার্কেল, পিম্পল স্পট, আনইভেন স্কিন টোন ইত্যাদি কভার করতে পারে। এছাড়া ম্যাট ফাউন্ডেশন স্কিনে ভালোভাবে বসে। যার ফলে, বেইজটা লং লাস্টিং হয়।
কনসিলারের প্রয়োজন হয় না
ফুল কভারেজ ম্যাট ফাউন্ডেশনগুলো পরিমাণে যেমন অল্প লাগে, তেমনি সব ধরনের স্পট হাইড করতে পারে। এতে এক্সট্রা কনসিলারেরও প্রয়োজন পড়ে না। তাই ফেইসে অনেক বেশি প্রোডাক্টও লেয়ার করতে হয় না।
ম্যাট ফাউন্ডেশনের অসুবিধা
ড্রাই ফিল হতে পারে
যেহেতু এই ধরনের ফাউন্ডেশনে কোনো ধরনের অয়েল বা ময়েশ্চারাইজিং এজেন্টস থাকে না, তাই এটি অ্যাপ্লাই করার কিছুক্ষণ পর ফেইস ড্রাই ফিল হতে পারে।
বেইজ দেখতে কেকি লাগে
ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ফলে ফেইস দেখতে কেকি এবং মাডি লাগে। যা দেখতে একদমই ভালো লাগে না। তবে যদি ফাউন্ডেশন অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়, তবেই এমন লাগবে দেখতে।
সহজে ব্লেন্ড করা যায় না
ম্যাট ফাউন্ডেশনগুলো অনেক সময় ব্লেন্ড করতে একটু কষ্ট হয়। কিছু কিছু ফাউন্ডেশন অনেক দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং স্কিনে বসে যায়। তাই চটজলদি এটাকে ব্লেন্ড করতে হয়। নয়ত পরে আর ব্লেন্ড হতে চায় না।
ফাইন লাইনস, রিংকেল এবং পোর হাইলাইট করে
ম্যাট ফাউন্ডেশনের ড্রাইং ফর্মুলার কারণে স্কিনেও এটা ড্রাই ফিল হয়। যার ফলে মেকআপ করার কিছুক্ষণ পর স্কিনে থাকা ছোট ছোট রিংকেল, ফাইন লাইনস এবং পোরস ভিজিবল হয়। এতে দেখতেও বেশ বাজে লাগে।
এই তো জেনে নিলেন, ডিউয়ি নাকি ম্যাট ফাউন্ডেশন কোনটি আপনার জন্য রাইট চয়েস সে বিষয়ে। আশা করি, এই আর্টিকেল পড়ে বুঝতে পেরেছেন কোনটি আপনার স্কিনের জন্য পারফেক্ট হবে। এবার, প্রয়োজন অনু্যায়ী বেছে নিয়ে অ্যাপ্লাই করলেই হলো। আপনি চাইলে অনলাইন থেকে আপনার পছন্দমতো মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। আবার যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) এ অবস্থিত সাজগোজের চারটি ফিজিক্যাল শপ থেকেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি!
ছবিঃ সাজগোজ