একনে স্পট, সানট্যান, ডার্ক প্যাচেস- এই ধরনের স্কিন প্রবলেম কম বেশি আমাদের সবারই আছে! বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাইপারপিগমেন্টেশনের সমস্যাও দেখা দেয় অনেকের। ব্যস্ত জীবনে আমাদের চাই চটজলদি সমাধান। এর সাথে আমাদের চাই সেইফ ইনগ্রেডিয়েন্টস যুক্ত স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট যেগুলো ত্বকের কোনো ক্ষতি না করেই স্পেসিফিক প্রবলেম ফিক্স করতে পারবে। নিয়াসিনামাইড ও গ্রিন টি সমৃদ্ধ অ্যাম্পুল হতে পারে এই স্কিন প্রবলেমের সেইফ ও ইফেক্টিভ সল্যুশন। আজকে আমরা জেনে নিবো Dermalogika Tone Balancing Ampoule with 5% Niacinamide & Green Tea Extract নিয়ে। চলুন আমরা আর কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে চলে যাই।
দিন দিন অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের চাহিদা কেন বাড়ছে?
স্কিন কেয়ার ট্রেন্ডে এখন অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট খুবই জনপ্রিয়। কেননা পার্টিকুলার অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট স্পেসিফিক স্কিন প্রবলেমকে পিন পয়েন্ট করে খুব দ্রুত সেটা সলভ করতে পারে। তবে ত্বকের জন্য বেছে নিতে হবে ইনগ্রেডিয়েন্টের সেইফ কম্বিনেশন ও রাইট পারসেন্টেজ। ত্বকের প্রবলেম ও টাইপ বুঝে যখন আপনি স্যুইটেবল প্রোডাক্টটি বেছে নিবেন, আপনার ত্বক তখনই হাইয়েস্ট বেনিফিট পাবে। কেননা এগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয় যেখানে এর টার্গেট থাকে স্টার উপাদানগুলোকে স্কিনের ডিপ লেয়ারে পৌঁছে দেওয়া। এসব কারণে স্কিন কেয়ার লেনে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের চাহিদা বাড়ছে।
অ্যাম্পুল ছোট কাঁচের বোতলে সিল করা কেন থাকে?
প্রথমেই কিছু বিষয় ক্লিয়ার করে নিই। অ্যাম্পুল মূলত ছোট কাঁচের একটি সিল করা বোতল, যার মধ্যে লিকুইড এসেন্স বা সিরাম বা লিকুইড স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট থাকে। কিন্তু এটা এভাবে ছোট ছোট বোতলে এভাবে সিল করা কেন থাকে?
১) বাইরে থেকে কোনো ধরনের জীবাণু বা বাতাস যেন এর ভেতর প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য বোতলগুলো এভাবে সিল করে রাখা হয়। এতে হাইজিন মেনটেইন করা যায়, প্রোডাক্টের ইফেক্টিভনেসও বেটার থাকে।
২) একটি প্যাকেটে ৭টি অ্যাম্পুল থাকে, একটা অ্যাম্পুল ১/২ বার ইজিলি ইউজ করা যায়। আলাদা ও ফ্রেশ অ্যাম্পুল দিয়ে স্কিনের যত্ন নিতে পারবেন।
আনইভেন টোন স্কিন রিপেয়ারে Dermalogika Tone Balancing Ampoule
এই অ্যাম্পুলে থাকা ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো আছে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় যা স্পেসিফিক সমস্যার সমাধান করে একদম সেইফ উপায়ে। কারণ Dermalogika এমন একটি ব্র্যান্ড যেটা কাজ করে ব্রাইটেনিং ইনগ্রেডিয়েন্ট এবং পিওর সায়েন্স নিয়ে। এই অ্যাম্পুলে আছে ৫% নিয়াসিনামাইড ও গ্রিন টির নির্যাস। এক কথায়, স্কিনের জন্য এটি একটি অ্যামেজিং কম্বিনেশন। চলুন জেনে নেই ডার্মালজিকার এই অ্যাম্পুলের উপাদান ও কার্যকারিতা সম্পর্কে।
ত্বকের যত্নে নিয়াসিনামাইড
কয়েক বছর ধরে নিয়াসিনামাইড ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এর কার্যকারিতা অতুলনীয়। তাই ডার্মাটোলজিস্টরা এর নাম দিয়েছেন সুপারস্টার ইনগ্রেডিয়েন্ট!
- আনইভেন স্কিনটোন রিপেয়ার করার জন্য নিয়াসিনামাইড রিকোমেন্ড করা হয়
- যেকোনো ধরনের স্পট কমাতে ও হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করতে এই উপাদানটি খুবই কার্যকরী
- এনলার্জড পোরস মিনিমাইজ করতে নিয়াসিনামাইড দারুণ কাজ করে
- ত্বকের কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট করে
- অক্সিডেটিভ সেল ড্যামেজ থেকে প্রোটেকশন দেয়
- রিংকেলসের সমস্যা কমে আসে
- ৫% নিয়াসিনামাইড বিগেইনারদের জন্য সেইফ
ত্বকের যত্নে গ্রিন টি
গ্রিন টিতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ। সব ধরনের ত্বকের যত্নে এই উপাদানটি খুবই ভালো কাজ করে। তাই স্কিন কেয়ার রেঞ্জে ব্যাপকভাবে এই উপাদানটি ব্যবহৃত হতে দেখা যাচ্ছে।
- catechin স্কিন সেলকে রিজুভিনেট করে
- রেডনেস, স্পটস ও ইনফ্ল্যামেশন কমিয়ে আনে
- স্কিনে সুদিং ইফেক্ট দেয়
- ব্রেকআউটস ও র্যাশ প্রিভেন্ট করে স্কিনকে হেলদি রাখে
নিয়াসিনামাইড ও গ্রিন টি একসাথে কীভাবে ত্বককে বেনিফিট দেয়?
যে অতিরিক্ত মেলানিন প্রোডাকশনের কারণে হাইপারপিগমেন্টেশন বা ডার্ক স্পটস দেখা দিচ্ছে, নিয়াসিনামাইড সেই মেলানিনকে আমাদের ত্বকের বাইরের লেয়ার (keratinocytes) এ যেতে দেয় না। অর্থাৎ মেলানিন এর ট্রান্সফারকে বাধা দেয়, যার ফলে স্কিনটোনে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয় না। কোথাও কেটে গেলে বা কোনো ইনফ্ল্যামেশন দেখা দিলে, খুব সহজেই আমাদের ত্বকের মেলানোসাইট সেল (melanocyte cell) ট্রিগার হয়ে যায়। তখন আনইভেনটোন স্কিনের প্রবলেম দেখা দেয়।
গ্রিন টি এর অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টি হিলিং এর কাজ করে। গ্রিন টি তে ভিটামিন সি আছে, যেটা স্কিন ব্রাইটেনিংয়ে দারুণ কাজ করে। ভিটামিন সি স্কিন টেক্সচার ইমপ্রুভ করে। এতে থাকা.ট্যানিনস (Tannins) ওপেন পোরসের প্রবলেম দূর করে। তাই এই দু’টো উপাদান একসাথে ইউজ করলে খুব তাড়াতাড়ি স্কিন প্রবলেমগুলো ফিক্স করা যায়।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
১. ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে ক্লিন করে ত্বকের ধরন অনুযায়ী টোনার ব্যবহার করুন।
২. কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ফেইসে ড্যাব ড্যাব করে ডার্মালজিকা টোন ব্যালেন্সিং অ্যাম্পুল অ্যাপ্লাই করে নিন। স্কিনে খুব সুন্দরভাবে মিশে যাবে।
৩. এরপর আপনার রেগুলার ময়েশ্চারাইজার/ নাইট ক্রিম ব্যবহার করুন।
৪. রাতের বেলা স্কিন কেয়ারে অ্যাম্পুল ব্যবহার করুন, যেন সারারাত এটি আপনার স্কিনে কাজ করার সুযোগ পাবে। দিনের বেলায় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
অ্যাম্পুল ব্যবহারের নিয়ম
ডার্মালজিকা অ্যাম্পুল কাঁচের বোতলে লিকুইড অবস্থায় থাকে। ব্যবহারের আগে খুব ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন। অ্যাম্পুল ওপেনারটি বোতলের উপরের দিকে সেট করুন, হালকা চাপ দিলেই এটি ভেঙ্গে যাবে। এবার ডিসপেন্সার ক্যাপ লাগিয়ে নিন, হাতের তালুতে অর্ধেকটা ঢেলে নিয়ে ফেইসে, গলায় অ্যাপ্লাই করুন। পরের দিন বাকিটুকু ব্যবহারের জন্য ডিসপেন্সার ক্যাপ লাগিয়ে রেখে দিন।
কারা ব্যবহার করতে পারবেন?
আপনার বয়স ২০+ হলে স্কিন কেয়ার রুটিনে অ্যাম্পুল অ্যাড করতে পারবেন। অবশ্যই বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করবেন। দিনের বেলা কোনোভাবেই সান প্রোটেকশন মিস করা যাবে না। এই অ্যাম্পুলটি প্রেগনেন্সি ও ব্রেস্টফিডিং করানোর সময়ে ইউজ করতে নিষেধ করা হয়। কেননা এই সময়ে স্কিন কেয়ারে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করা উচিত নয়।
প্যাচ টেস্ট কীভাবে করবেন?
শুরু করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নিতে ভুলবেন না। এক্ষেত্রে প্রোডাক্টটি অল্প পরিমাণে নিয়ে কানের নিচে বা গলার সাইডে ২৪ ঘণ্টা লাগিয়ে রেখে পর্যবেক্ষণ করবেন। কোনো ধরনের ইরিটেশন বা অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হচ্ছে কিনা সেটা খেয়াল করুন।
স্টোরেজ সতর্কতা
- এই অ্যাম্পুলটি সূর্যের আলো কিংবা সরাসরি তাপ থেকে দূরে রাখুন
- ঠাণ্ডা এবং শীতল স্থানে প্রোডাক্টটি সংরক্ষণ করুন
- অবশ্যই শিশুদের হাতের নাগালের বাহিরে রাখুন
- শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য
এটা ছাড়াও ডার্মালজিকার আরও দুইটি অ্যাম্পুল আছে। আপনার ত্বকের চাহিদা ও ধরন অনুযায়ী বেছে নিন সঠিক প্রোডাক্টটি। একেক জনের স্কিনের টাইপ একেক রকমের হয়। তাই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেতে কারো কারো আরও বেশি সময়ও লাগতে পারে।
তাহলে জেনে নিলেন আনইভেন স্কিনটোনের সল্যুশন সম্পর্কে। ফ্ললেস ও হেলদি স্কিনের জন্য ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক কনসেন্ট্রেশনের অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করতে হবে, আর এই কনসেপ্ট নিয়েই কাজ করে ডার্মালজিকা। নিয়াসিনামাইড ও গ্রিন টি সমৃদ্ধ অ্যাম্পুল ব্যবহার করুন নিশ্চিন্তে। সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন।
ছবি- সাজগোজ