প্রত্যেক মানুষেরই স্কিন টাইপ ভিন্ন। কিছু মানুষের সংবেদনশীল (সেন্সিটিভ) স্কিন, কিছু শুষ্ক, কিছু তৈলাক্ত স্কিন এবং অনেকের ব্লেমিসড স্কিন। এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সংবেদনশীল ত্বকের যত্নের কিছু টিপস নিয়ে বলতে যাচ্ছি। এখানে আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এবং আপনার ত্বক সতেজ করতে কিছু মৌলিক কৌশল দেওয়া হলো যা আপনার ত্বককে সেন্সিভিটি থেকে রক্ষা করবে। শুরুতে সংবেদনশীল ত্বক পরিষ্কার করার কৌশল বলে দেবো। যাকে আপনারা ফেসিয়ালও বলতে পারেন। তো চলুন জেনে নেই সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন কিভাবে করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত।
সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন
একটি অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরে আপনি আপনার মুখে টমেটো রসে চার থেকে পাঁচ চা-চামচ দুধ মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। তুলায় এই মিশ্রণ নিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। এছাড়া এই মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মধু ও দইয়ের মিশ্রণও সেনসিটিভ ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য বেশ উপকারী। এরপর আসুন স্ক্রাবিং এ।
ডাল বাটা খুব ভালো স্ক্রাবিংয়ের কাজ করে। পাশাপাশি ত্বক পরিষ্কারও করে। তাই টাটকা থাকতে ব্যবহার করলে যে উপকার পাওয়া যায়, পুরানো হয়ে গেলে সে উপকার পাওয়া যায় না। অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়।
লক্ষ্য রাখতে হবে এই সময় আপনার হাত যেন ভেজা না থাকে। ভেজা হাতে কখনো মুখে মাসাজ করবেন না। এক বাটি পানির মধ্যে ২ চামচ চিনি নিয়ে নাড়াচাড়া করুন যতক্ষণ পর্যন্ত এটি একটি খুব পাতলা পেস্ট না হয়ে যায়। তারপর আরও এক চামচ চিনি যোগ করে নাড়তে থাকুন। তারপর এই পেস্ট দিয়ে আপনার হাত ভিজিয়ে নিন এবং আপনার মুখে লাগান।
মুখে লাগানোর পর আর সামান্য কিছু চিনি দিয়ে পুরো মুখকে বৃত্তাকারভাবে মাসাজ করুন। তারপর কপালে দুই হাত দিয়ে নিচ থেকে উপরে মাসাজ করুন। এই প্রক্রিয়া করার পরে, অন্তত ১২ ফোঁটা লেবুর রস নিয়ে প্রায় ১০ সেকেন্ডের জন্য আপনার মুখের উপর এটি মাসাজ করুন। কিন্তু যদি এতে মুখ জ্বালা করে তবে ৩-৪ সেকেন্ডের জন্য রাখুন। এটা মুখের ত্বকের ক্রমশ মলিন হয়ে যাওয়া লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। পরবর্তী ধাপগুলো হলো টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং।
সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন নিতে টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং
টোনার
এক কাপ শসার রস ও এক কাপ গাজরের রস মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। যখনই মুখ পরিষ্কার করবেন, ময়েশ্চরাইজার লাগানোর আগে অবশ্যই এই টোনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
ময়েশ্চারাইজার
এক কাপ গোলাপজল, অর্ধেক কাপ গোলাপের পাপড়ি দিয়ে একটু গরম করে নিন। তারপর পাপড়ি ছেঁকে নিয়ে কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন ও অ্যালোভেরার রস মেশান। ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারবেন।
মধু ও গোলাপজলের মিশ্রণ ত্বক নরম রাখতে দারুণ কাজে দেয়। ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এই চারটি ধাপ ঠিক ভাবে মেনে চললে ত্বকের সেনসিভিটি নিয়ে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হবে না।
কিছু সতর্কতা
- স্পর্শকাতর ত্বকে একটু অসাবধান হলেই জ্বালাপোড়া হয় অথবা র্যাশ বের হয়ে যায়। তাই যখনই কোনো রূপচর্চা করতে গিয়ে ত্বকে ইরিটেশন বা জ্বালা করছে বলে মনে হবে তখন বুঝতে হবে আপনার ত্বক এই প্রসাধনী সামগ্রীর সাথে খাপ খাচ্ছে না।
- অনেকে ডালবাটা মুখে ব্যবহার করেন। অনেকে হয়তো আগের দিন বেটে রেখে দেন। এটা কখনোই করবেন না। ত্বক পরিচর্যার জন্য ঘরোয়া যে কোনো কিছু বানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার করুন।
- যদি ব্রণ বা র্যাশ থাকে তবে ডালবাটা অথবা কোনো ধরনের দানাদার স্ক্রাব মুখের ত্বকের ক্ষতি করবে। তাই ব্রণ থাকলে স্ক্রাবিং করার দরকার নেই।
- আর ময়েশ্চারাইজার টোনার এবং ক্লিনজার বানিয়ে ফ্রিজে রেখে চার থেকে পাঁচদিনের বেশি ব্যবহার করা যায় না।আশাকরা যায় এ ধরনের ছোটখাটো ঘরোয়া যত্ন আপনার স্পর্শকাতর ত্বককে করে তুলবে লাবণ্যময়।
ছবিঃ সংগৃহীত – সাজগোজ.কম