নানা কারণে বাড়িতে বসে অফিস বা ইউনিভার্সিটির ক্লাস করতে হতে পারে। এই যে বাড়িতে বসে যত কাজ, এর জন্য কিন্তু ক্যামেরা খুব অ্যাসেনশিয়াল একটা জিনিস। ক্যামেরার সামনে আসতে অনেকেই আনইজি ফিল করেন। এর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে নিজেকে ক্যামেরার জন্য প্রস্তুত না করতে পারা। ক্যামেরার সামনে আসার জন্য যে অনেক মেকআপ করে রেডি হতে হবে মোটেও কিন্তু এমন নয়! তবে যদি অফিসিয়াল কোনো মিটিং বা ইউনিভার্সিটির প্রেজেন্টেশনের জন্য প্রস্তুত হতে হয় তখন কিন্তু ক্যামেরার সামনে আকর্ষণীয় দেখাতে অবশ্যই কিছু বিউটি রুটিন ফলো করতে হবে। চলুন দেখে নেই ক্যামেরার সামনে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে কী কী স্টেপ আপনি ফলো করতে পারেন।
ক্যামেরার সামনে আকর্ষণীয় দেখাতে সাজ কেমন হওয়া উচিত?
১) নিউট্রাল মেকআপ লুক ক্রিয়েট করা
ক্যামেরার সামনে যখন আসছেন তখন খুব বেশি মেকআপের কোনো দরকার নেই। সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে নিউট্রাল শেড রাখা। চোখের সাজের জন্য আইশ্যাডো প্যালেট থেকে হালকা ব্রাউন বা পিচ কালার অথবা যে কোনো হালকা রঙের শেড বেছে নিতে পারেন। আই লাইনার দেওয়ার সময়ও খেয়াল রাখুন সেটি যেন খুব বেশি চোখে না লাগে। মাশকারাও জাস্ট ২/৩ কোট দিন। আইল্যাশ বেশি ঘন করার প্রয়োজন নেই।
২) স্কিন টোনের সাথে মিলিয়ে কনসিলার শেড ব্যবহার করা
কমবেশি আমরা সবাই ব্রাইটেনিং কনসিলার পছন্দ করি। তবে অনলাইনে ক্যামেরার সামনে আসতে হবে বলে একদম লাইট কনসিলার লাগালেও কিন্তু হবে না। কারণ লাইট কনসিলার স্ক্রিনে সাদা দেখাবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে নিজের স্কিনটোনের সাথে মিলিয়ে কনসিলার বাছাই করা। তবে এ কথাও সত্যি যে, শুধু কনসিলার বাছাই করলেই যে ঝামেলা শেষ হয়ে যায় এমন নয়। স্কিনে খুব ভালোভাবে অ্যাবজর্ব করতে পারাটাও মোটামুটি চ্যালেঞ্জেরই বলা যায়। কনসিলার বাছাইয়ের সময় ম্যাট ফিনিশ দেবে এমন কনসিলার বাছাই করলে সবচেয়ে ভালো। এতে লাইটের রিফ্লেকশনে স্কিন বেশি শাইনি দেখাবে না। যেহেতু বাসায়, তাই ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করলেও হবে। ফাউন্ডেশনের বদলে বিবি ক্রিম ব্যবহার করলেও স্ক্রিনের সামনে দেখতে ফ্ললেস দেখাবে।
৩) হাইলাইটারের ব্যবহার না করা
মেকআপ করার সময় হাইলাইটার বেশ জরুরি একটি জিনিস। তবে বিস্ময়ের ব্যাপার কি জানেন? ক্যামেরার সামনে এই হাইলাইটারই কিন্তু আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু হতে পারে! কীভাবে বলুন তো? হাইলাইটার দিয়ে উঁচু অংশগুলো যেমন চিক বোন, নাকের উপরে, কপালে ও ঠোঁটের উপরে হাইলাইট করা হয়। এই জায়গাগুলোতে যদি হাইলাইটারের পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে কিন্তু স্ক্রিনে বেশ খারাপ দেখাবে। তাই সরাসরি হাইলাইটার না দিয়ে চেহারায় কিছুটা ব্লাশ লাগিয়ে নিন। এতে স্কিন ফ্ললেসও দেখাবে, আবার হাইলাইটারের মতো খুব বেশি চকচকেও দেখাবেও না।
৪) চুল আঁচড়ে নেওয়া
ক্যামেরার সামনে কথা বলছেন, এদিকে চুল বারবার উড়ে যাচ্ছে অথবা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনা কিন্তু আপনাকে বেশ বিব্রত অবস্থায় ফেলে দিতে পারে। তাই অবশ্যই ক্যামেরার সামনে আসার আগে ভালোভাবে চুল আঁচড়ে নিতে হবে। চুলের জট ছাড়িয়ে নেওয়ার সাথে সাথে চুল যেন স্মুথ দেখায় সেজন্য হেয়ার সিরাম ব্যবহার করতে পারেন। হেয়ার সিরামের সুবিধা হচ্ছে, এটি ব্যবহারে আপনার চুল যেমন স্মুথ, ফ্রিজ ফ্রি দেখাবে, তেমনই শাইনি আর ম্যানেজবেলও থাকবে। চুল যদি খোলা না রাখতে চান, তাহলে পছনদমতো পনিটেইল, খোঁপা বা বেণীও করতে পারেন।
৫) লিপস্টিক দেয়া
ক্যামেরার সামনে সবকিছুই বেশখানিকটা অতিরঞ্জিত দেখায়। ব্যবহারের জন্য অনেকেরই ম্যাট লিপস্টিক পছন্দ। তবে ক্যামেরার সামনে ম্যাট লিপস্টিক ড্রাই অথবা ক্র্যাকড দেখাতে পারে। তাই ম্যাটের বদলে বেছে নিন লিপ গ্লস। ঠোঁটকে নারিশড রেখে এক্সট্রা ইয়ুথফুল চার্মও অ্যাড করবে চেহারায়। মেকআপ শেষে ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে একটা লিপ গ্লস, ব্যস! আপনি ক্যামেরার সামনে আসার জন্য একদম প্রস্তুত!
স্কিন ক্লিন রাখার কিছু টিপস
ঘরে বসে মেকআপ করে সারাদিন অফিস তো করলেন। ভাবলেন বাসাতেই তো ছিলাম, রাতে মেকআপ ক্লিন করার আর কী দরকার? এমন ভাবলেন তো ভুল এখানেই করলেন! বাইরে যান অথবা না যান, স্কিন ভালো রাখার জন্য রাতে অবশ্যই মেকআপ প্রোপারলি ক্লিন করে তবেই ঘুমাতে যেতে হবে। জেনে নিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কীভাবে স্কিন ক্লিন করবেন-
১) একটি কটন প্যাডে বা তুলাতে মাইসেলার ওয়াটার বা ক্লেনজিং অয়েল নিয়ে সোয়াইপ করে মেকআপ ক্লিন করে নিন।
২) এবার রেগুলার ক্লেনজার বা ফেইস ওয়াশ দিয়ে ফেইস ক্লিন করে নিতে হবে। ব্যস! হয়ে গেলো ডাবল ক্লেনজিং!
৩) এখন ত্বকের পি.এইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখার জন্য স্কিন টাইপ অনুযায়ী টোনার অ্যাপ্লাই করে নিন।
৪) সবশেষে স্কিন টাইপ অনুযায়ী ব্যবহার করুন ময়েশ্চারাইজার।
ব্যস! স্কিন ভালো রাখার জন্য সবগুলো স্টেপ আপনি প্রোপারলি ফলো করে ফেলেছেন। এবার আপনি পরবর্তী দিন ক্যামেরার সামনে ফ্ললেস স্কিন নিয়ে যাওয়ার জন্য একদম প্রস্তুত!
অনলাইন থেকে আপনার প্রয়োজনীয় মেকআপ, স্কিন কেয়ার বা হেয়ারের যে কোনো প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। যদি সরাসরি কিনতে চান তাহলে যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) এ অবস্থিত সাজগোজের চারটি ফিজিক্যাল শপ থেকেও ঘুরে আসতে পারেন।
ছবিঃ সাজগোজ