রাতে আপনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন তখন আপনার চুল কি ঘুমের জন্য তৈরি থাকে? যতই ক্লান্ত হোন না কেন ঘুমের আগে চুলের যত্ন নেয়া কিন্তু খুবই জরুরি। কারণ, এই সময়টাতেই আমাদের চুলের সব থেকে বেশি ড্যামেজ হয়। রাতে ঘুমানোর সময়েই কিন্তু অনেক চুল পড়ে যায়, চুলের ডগা শিথিল হতে পারে, চুলের আগা ভেঙে যেতে পারে, চুলের গ্রোথ-ও বন্ধ হতে পারে, চুল পাতলা হতে পারে ইত্যাদি। কিন্তু এই সব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে হলে সবার আগে বেশ কিছু জিনিস আমাদের মেনে চলতেই হবে অর্থাৎ ঘুমাবার আগে একটু সময় বরাদ্দ করতে হবে চুলের জন্য। কিভাবে চুলকে রাতে ড্যামেজ হওয়া থেকে বাঁচিয়ে ঘন লম্বা আর পরিপুষ্ট রাখা যেতে পারে আজ তারই কিছু টিপস দেওয়া হবে। চলুন জেনে নেই রাতে শোবার আগে চুলের যত্নে টিপসগুলো।
রাতে শোবার আগে চুলের যত্নে ৬টি টিপস
(১) কখনই নোংরা চুলে ঘুমিয়ে পড়বেন না। সারাদিন যদি আপনি বাইরে থাকেন তাহলে তো একদমই না। মনে রাখতে হবে সারাদিন ধূলো-বালি, নোংরা পল্যুশন ইত্যাদি চুলের অনেক ক্ষতি করে। নোংরা চুলে ঘুমোলে তা আপনার স্ক্যাল্প পোর-গুলোকে বন্ধ করে দিবে। তাই চুল যদি নোংরা হয় তাহলে চুলকে ধুয়ে নিতে হবে। রাতে শ্যাম্পু করে নিলে একটা সুবিধেও আছে তা হলো সকালে শ্যাম্পু করার তাড়া থাকে না, আর আপনার অনেকটা সময় বাঁচে।
(২) ভেজা চুলে কখনই শুয়ে পড়বেন না। চুলটা যতটা সম্ভব শুকিয়ে নিতে হবে। তাই বলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না! চুল শুকোবার জন্য ভালো করে তোয়ালে দিয়ে মুছে নিবেন আর তারপরে মোটা চিরুনি দিয়ে হালকা করে আঁচড়াতে হবে। ভেজা চুলে জোর দিয়ে আঁচড়ালে তা চুলের ক্ষতি করে। এতে চুলের ডগা শিথিল হতে পারে। খুব ভালো হয় যদি একটু ড্রাই শ্যাম্পু লাগিয়ে নেয়া যায়। ভেজা চুলে ঘুমাতে গেলে তা চুলের ক্ষতিতো করবেই আর তাছাড়া ঘুম থেকে ওঠার পরে তা অনেক জট ফেলবে।
(৩) মোটা চিরুনি দিয়ে ভালো করে জট ছাড়িয়ে নিন। এর ফলে আপনার চুলে বিভিন্ন ময়লা আর কেমিক্যাল অনেকটা দূর হয়ে যাবে।
(৪) জট ছাড়ানো হয়ে গেলে একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে নিয়ে সেটা মাথায় লাগাতে হবে। ভিটামিন ই চুলের খাদ্য হিসেবে খুবই ভালো। এটা চুল পড়া, শুষ্ক ও নির্জীব চুল ও পাতলা চুলের জন্য দারুণ কাজ করে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল যেকোনো ওষুধের দোকানে পেয়ে যাবেন। এটা ত্বকের জন্যও খুব ভালো।
(৫) অনেকেই চুল খুলে শুয়ে পড়েন কিন্ত সেটা চুলের ক্ষতি করে। তাই চুল সবসময় বেঁধে তারপর ঘুমান!
শোবার আগে কিভাবে চুল বাঁধবেন?
শোবার সময় লম্বা বা মাঝারি চুলের জন্য বেনুনি বাঁধা যেতে পারে। যাদের একটু ছোট চুল তারা উঁচু করে পনি টেল বেঁধে নিতেন পারেন। এর ফলে আপনার স্ক্যাল্প শ্বাস নিতে পারবে অথবা একটা খোঁপাও করা যেতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে কিছুতেই চুল খুব শক্ত করে বাঁধবেন না। একটু হালকা করেই বাঁধবেন বিশেষত যাদের চুল লম্বা।
(৬) সঠিক বালিশ নির্বাচন করাটাও জরুরী। তুলোর সংস্পর্শে এলে আমাদের চুল কিন্ত পড়ে যায়। তুলোর সংস্পর্শে চুল শুষ্ক হয়ে যায় আর তার ফলে চুল পড়ে যায়। তাই সবসময় সাটিন অথবা সিল্ক দিয়ে তৈরি বালিশের কভার লাগিয়ে দিন বালিশে। এর ফলে আপনার চুল আর পড়বে না। যদি সাটিন অথবা সিল্ক কভার না থাকে তাহলে সিল্ক-এর স্কার্ফ বালিশে পেতে নিন। তাহলেও সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
মনে রাখবেন চুল যখন বাঁধবেন তখন যে তা খুব সুন্দর বা পরিষ্কার হতে হবে তা একদম নয়। মোটামুটি করে বাঁধলেই হবে। আর যদি শ্যাম্পু করেন তাহলে শ্যাম্পুর একটু আগে তেল লাগিয়ে নিয়ে কিছু সময় রেখে তবেই শ্যাম্পু করবেন। আমাদের এই ব্যস্ত জীবনে সারাদিনের কাজের পরে রাতের বেলায় আমরা যতই ক্লান্ত হই না কেন সুস্থ আর লম্বা চুল পেতে গেলে এইটুকু সময়তো আপনাকে দিতেই হবে। মনে রাখতে হবে আপনার আজকের একটু পরিচর্যা আপনাকে করে তুলবে সুন্দর চুলের অধিকারিণী যা আপনার রূপকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলবে।
এই তো জেনে নিলেন রাতে শোবার আগে চুলের যত্নে করণীয়সমূহ। এখন ঘুমানোর আগে চুলের যত্ন হোক নিয়মিত। চুল থাক সুস্থ ও সুন্দর।
ছবি – সংগৃহীতঃ বিউটিস্কুল ডট কম