হেয়ার কেয়ারে কমন কিছু ভুল যার কারণে চুল প্রতিনিয়ত ড্যামেজ হচ্ছে!

হেয়ার কেয়ারে কমন কিছু ভুল যার কারণে চুল প্রতিনিয়ত ড্যামেজ হচ্ছে!

15-06-2022

চুল পড়া নিয়ে টেনশন করে না এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কমই আছে, তাই না? আসলেই ছেলে মেয়ে সবার জন্যই এটা প্রযোজ্য, তবে চুল নিয়ে মেয়েদের টেনশন একটু বেশি থাকে। হেয়ার কেয়ার করার পরও চুল পড়া আর চুলের রুক্ষতা কোনোভাবেই কমছে না? তাহলে সমস্যাটা কোথায়? হেয়ার কেয়ারে কমন কিছু ভুল আমরা ডেইলি করেই যাচ্ছি, যার কারণে চুল প্রতিনিয়ত ড্যামেজ হচ্ছে! এই অভ্যাসগুলো আমাদের অজান্তেই চুলের ক্ষতি করছে। আজকে ফিচারটি হেয়ার কেয়ার মিসটেকস নিয়ে, দেখে নিন তাহলে।

চুলের যত্নে আপনিও কোনো ভুল করছেন না তো?  

প্রথমেই একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই, আশা করি বুঝতে সুবিধা হবে। ধরুন দু’জনকে দু’টা গাছ দেওয়া হলো, দু’জনেই খুব যত্ন করছে। বাট একজনের গাছে প্রচুর ফুল, কিন্তু আরেকজনের গাছে ফুলই আসে না। তাদেরকে যখন প্রশ্ন করা হয় যে গাছে পানি দেওয়া হয় কিনা, দু’জনেরই উত্তর ছিল ‘অবশ্যই দেই’। কিন্তু এই পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করেই দুই গাছের মধ্যে এত তফাৎ! গাছে পানি দিতে হয় ঠিকই, তবে পরিমাণমতো ও নির্দিষ্ট সময়ে। তবেই তো গাছে ফুল আসবে! দেখুন ব্যাপারটা সামান্য। অথচ সঠিক নিয়ম না মেনে সময়ে অসময়ে অতিরিক্ত পানি দেওয়ার জন্য একজনের গাছের মূল পঁচে যাচ্ছে। আর পরিমিত পরিচর্যার কারণে আরেকজনের গাছে এত ফুল।

আমাদের চুলের ক্ষেত্রেও সেইম ব্যাপারটাই ঘটে। ভুল ও অতিরিক্ত পরিচর্যা কিন্তু ক্ষতির কারণ। মজবুত ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে এই ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে প্রথমেই। আসুন হেয়ার কেয়ারে কমন কিছু ভুল নিয়ে এখনই জেনে নেই।

হেয়ার কেয়ারে কমন কিছু ভুল

১. রেগুলার হার্শ শ্যাম্পু ইউজ করা

যাদের স্ক্যাল্প অয়েলি, দেখা যায় যে তারা প্রতিদিনই শ্যাম্পু করেন। বাইরে বের হলে চুল ময়লা হয়ে যায়, স্ক্যাল্পও ঘেমে যায়; তখন তো রেগুলার শ্যাম্পু করতেই হয়। তবে এক্ষেত্রে মাইল্ড শ্যাম্পু বা সালফেট, প্যারাবেন ফ্রি শ্যাম্পু ইউজ করা সেইফ। হার্শ শ্যাম্পু ব্যবহারে কালার ট্রিটেড হেয়ার খুব তাড়াতাড়ি ড্যামেজ হয়ে যায়। তাই চুলের ধরন অনুযায়ী স্যুইটেবল শ্যাম্পু বেছে নিন।

SHOP AT SHAJGOJ

     

    আবার কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এক সপ্তাহ হয়ে যায় কিন্তু চুলে শ্যাম্পু করে না! দীর্ঘদিন ওয়াশ না করলে চুলের ন্যাচারাল সিবামের সাথে বাইরের ধুলোবালি মিশে স্ক্যাল্পে পুরু একটা লেয়ার তৈরি হয়। এর ফলে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়, আর সেই সাথে ড্যানড্রাফের প্রবলেমও দেখা দেয়।

    ২. স্ক্যাল্পে কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করা

    চুলের গোড়াতে কন্ডিশনার লাগানো হলে সেটা থেকে চুল পড়ার সমস্যা বাড়তে পারে। কন্ডিশনার কখনোই সরাসরি স্ক্যাল্পে অ্যাপ্লাই করবেন না। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ওয়াশ করে ভেজা অবস্থাতে চুলের মাঝামাঝি লেন্থ থেকে শেষ পর্যন্ত কন্ডিশনার লাগিয়ে কিছুক্ষণ ওয়েট করে ধুয়ে ফেলুন।

    ৩. কিছুক্ষণ পর পর চুল আঁচড়ানো

    এরকম একটা কথা প্রায়ই শুনে থাকি যে ‘বারবার চুল আঁচড়ানো উচিত, না হলে চুলে জট পাকায়!’ তবে প্রয়োজনের বেশি চুল আঁচড়ালে চুল ভেঙে যায়, চুলের কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ভেজা অবস্থাতে চুল আঁচড়ানোও ঠিক না। ভেজা চুল সবচেয়ে নাজুক অবস্থাতে থাকে। তাই একটু সময় নিন, চুল হালকা শুকিয়ে আসলে চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে নিন। মনে রাখবেন ভালো ব্রাশ বা চিরুনি ইম্পরট্যান্ট একটা ফ্যাক্টর। তাই সঠিক চিরুনি সিলেক্ট করুন।

    চুল আঁচড়ানোর সঠিক নিয়ম

    শুকনো চুল আঁচড়ানোর সময় সেকশন করে করে হেয়ার ব্রাশিং করুন, মাঝ বরাবর স্টার্ট করে চুলের শেষ পর্যন্ত জেন্টলি মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করে আঁচড়ান। কাঠের চিরুনি বেশ ভালো অপশন। তাড়াহুড়ো করে প্রেশার দিয়ে জোরে জোরে ব্রাশ করলে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। অনেকেই ভাবেন জোরে জোরে আঁচড়ালে চুলের গোড়াতে ব্লাড সার্কুলেশন ভালো হয়, ফলে চুল ভালো থাকে। কিন্তু বেশি প্রেশার দেওয়া উচিত না, কারণ এতে হেয়ার ফলিকল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

    ৪. চুল শুকানোর জন্য তোয়ালে দিয়ে চুল ঝাড়া

    এরকম একটা দৃশ্য তো কম বেশি সবারই মনে পড়ে! আগের দিনে মা-চাচিরা গামছা দিয়ে জোরে জোরে চুলে ঝাড়া দিয়ে চুল মুছতো, তাই না? ছোটবেলায় কারও কাছে চুল মুছতে দিলে টাওয়াল দিয়ে খুব প্রেশার দিয়ে মাথা মুছে দিতো আর বলতো ‘পানি থাকলে ঠান্ডা লাগবে!’ এইটা আমার নিজস্ব এক্সপেরিয়েন্স আর কী! বাট এখন আমরা হেয়ার কেয়ার সম্পর্কে জানি, তাই বুঝি কতটা ভুল মেথড ছিল এটা। ভেজা চুল নরম সুতির কাপড় বা সফট টাওয়াল দিয়ে আস্তে আস্তে চেপে মোছা উচিত। আর ভেজা চুলে ঘুমানোর অভ্যাসটাও কিন্তু চুলের ক্ষতি করে, তাই এই ব্যাপারেও খেয়াল রাখতে হবে।

    ৫. হেয়ার ড্রাইয়ার বা হিট স্টাইলিং টুলস রেগুলার ইউজ করা

    দরকার ছাড়া রেগুলার বেসিসে হেয়ার ড্রাইয়ার ইউজ না করাই ভালো। যখন ইউজ করতে হবে, নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে পাওয়ার কমিয়ে জেন্টলি কাজটা করুন। চুলের গোড়াতে সরাসরি ড্রাইয়ারের তাপ দিবেন না। এছাড়া বারবার স্ট্রেইট করা বা কার্লি করা হলে হেয়ার ড্যামেজ হওয়ার চান্স থাকে। তাই হিট স্টাইলিং টুলস ইউজ করলে আগে অবশ্যই হিট প্রোটেকটর সিরাম বা স্প্রে ইউজ করে নিন। এতে চুল হেলদি থাকবে।

    ৬. ক্লিন না করে স্ক্যাল্পে অয়েল ম্যাসাজ

    আপনার স্ক্যাল্পে অলরেডি যদি ডার্ট জমেই থাকে, তাহলে তেল বা হেয়ার প্যাক লাগালে সেটা থেকে আপনি কিন্তু কোনো বেনিফিট পাবেন না! এতে চুলে পুষ্টি তো পৌঁছাবেই না, বরং হেয়ার প্যাক ওয়াশ করার সময় আরও চুল পড়বে! তেলের সাথে বাইরের ধুলোবালি মিশে স্ক্যাল্পের স্কিনে যে পোরস থাকে সেগুলো ক্লগড হয়ে যায়, যার ফলাফল হচ্ছে চুল পড়া। তাই ক্লিন স্ক্যাল্পে অয়েল ম্যাসাজ করুন অথবা হেয়ার প্যাক অ্যাপ্লাই করুন।

    SHOP AT SHAJGOJ

       

      ৭. অপরিচ্ছন্ন বালিশের কভার ইউজ করা 

      আমরা প্রতিদিন কাপড় থেকে শুরু করে আশেপাশের অনেক জিনিসই ক্লিন করি। বাট বালিশের কভারের দিকে নজর রাখেন কি? তেল চিটচিটে ময়লা কভার থেকে আপনার চুলেও ইজিলি ময়লা যায়। আর এটা থেকে ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও হতে পারে। তাই প্রতি সপ্তাহে বালিশের কভার ক্লিন করতে ভুলবেন না। আর একটা বিষয়, সিল্কের পিলো কভার ইউজ করা উচিত যাতে ঘষা লেগে চুল ছিঁড়ে না যায়।

      ৮. সবসময় টাইট করে চুল বেঁধে রাখা 

      বেশি টাইট করে এবং প্রতিদিন একই জায়াগায় চিকন ব্যান্ড দিয়ে চুল বাঁধলে চুলের ক্ষতি হয়, এইটা কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না। এই অভ্যাসটি এড়িয়ে চলুন। ঘুমানোর সময়ে খুব ঢিলেঢালা করে ব্রেইড বা বেণী করে রাখা ভালো। একদম চিকন হেয়ার ব্যান্ড ইউজ করলে চুল ছিঁড়ে যেতে পারে, সেটার দিকেও লক্ষ্য রাখুন।

      যেকোনো হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করার আগে স্টাডি করে নিন আপনার স্ক্যাল্প ও হেয়ার টাইপ কী। প্রবলেম আইডেন্টিফাই করে যখন ঠিকঠাক প্রোডাক্ট সিলেক্ট করবেন, সেটাই আপনার চুলের জন্য বেনিফিসিয়াল হবে। সুন্দর চুল পেতে হেলদি ডায়েট চার্ট মেনটেইন করতে হবে, ঠিক টাইমে ঘুমাতে হবে। চুলের যত্ন নিন একটু নিয়ম মেনে, আশা করি হেয়ার প্রবলেমগুলো অনেকটাই কমে আসবে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

      SHOP AT SHAJGOJ

         

        ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক

        21 I like it
        3 I don't like it
        পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

        escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort