মাইসেলার ওয়াটার, ছোট্ট একটা জিনিস কিন্তু খুবই কাজের! বলা যায়, এটি একটা মাস্ট হ্যাভ প্রোডাক্ট। স্পেশালি যারা রেগুলার মেকআপ করেন বা সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করেন, তাদের কাছে এই নামটি খুবই পরিচিত। মাইসেলার ওয়াটার আসলে কী? সহজ ভাষায় এটি হচ্ছে এক ধরনের মাল্টি ফাংশনিং ক্লেনজিং সল্যুশন যেটা ত্বককে পরিস্কার করার পাশাপাশি টোনিংয়ের কাজও করে। এটি ত্বকের উপরে খুবই জেন্টলি কাজ করে স্কিনের ব্যারিয়ারকে সুরক্ষিত রাখে। মেকআপ ও ডার্ট ইনস্ট্যান্টলি রিমুভ করতে এর জুড়ি নেই!
এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে যাতে ত্বকে জমে থাকা সেবাম, মেকআপ প্রোডাক্টস ও অন্যান্য ডার্ট পার্টিকেলস ট্র্যাপড হয় এবং ইজিলি ক্লিন হয়ে যায়। এভাবে খুব দ্রুত ফেইস থেকে মেকআপ রিমুভ করা যায়। মাইসেলার ওয়াটার ব্যবহার করার ফলে ত্বক ফ্রেশ, সফট ও স্মুথ থাকে। মাইসেলার ওয়াটারের উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি স্কিনে প্রয়োজনীয় হাইড্রেশন প্রোভাইড করে এবং ইরিটেশন প্রিভেন্ট করে। আজকের ফিচার মাইসেলার ওয়াটার নিয়েই।
মাইসেলার ওয়াটার ব্যবহারের উপকারিতা
সব ধরনের ত্বকে স্যুট করে মাইসেলার ওয়াটার। অয়েলি স্কিনে অয়েল বেইজড ক্লেনজার ইউজ করা অনেকেই প্রিফার করেন না, সেক্ষেত্রে এটি একটি অ্যামেজিং অল্টারনেটিভ। মাইসেলার ওয়াটারে মূলত পিওর ওয়াটার ও মাইল্ড সারফেক্ট্যান্ট থাকে। সেনসিটিভ অ্যান্ড একনে প্রন স্কিনেও ব্যবহার করা যায়। তবে সেনসিটিভ স্কিন হলে অ্যালকোহল ফ্রি প্রোডাক্ট চুজ করতে হবে। টিনেজার থেকে শুরু করে সবাই ইউজ করতে পারবে। এগুলো No-rinse ফর্মুলার, মানে পানি দিয়ে ধুতে হয় না। কটন প্যাডে পরিমাণমতো প্রোডাক্ট নিয়ে ফেইসে চেপে চেপে মুছে নিবেন। চলুন জেনে নেই এর বেনিফিটস সম্পর্কে।
১) মেকআপ ও ডার্ট ইনস্ট্যান্টলি রিমুভ করে
আগেই বলেছি মাইসেলার ওয়াটার চমৎকার একটি ক্লেনজার। কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই মেকআপ তুলে ফেলতে পারেন এটি দিয়ে। ত্বকের এক্সট্রা সেবাম বা অয়েলও এটি রিমুভ করে ফেলে। এছাড়া মাইসেলার ওয়াটার ত্বককে এমনভাবে প্রিপ্রেয়ার করে দেয় যাতে ফেইস ওয়াশ বা জেল বেইজড ক্লেনজার পরবর্তীতে স্কিনকে পুরোপুরি ক্লিন করতে পারে।
২) একনে ব্রেকআউটস কমিয়ে আনে
যেহেতু মাইসেলার ওয়াটার সব ধরনের ইমপিওরিটিস দূর করে একদম মাইল্ড ওয়েতে, তাই ত্বকের পোরস থেকে ডার্ট ও সেবাম প্রোপারলি ক্লিন হয়। এতে পোরগুলো পরিস্কার থাকে, ক্লগড হওয়ার চান্স থাকে না! পোরস বন্ধ হয়ে গেলে সেখানে একনে ব্রেকআউটস দেখা দেয়। রেগুলার ফেইস ওয়াশ ব্যবহারের পাশাপাশি মাইসেলার ওয়াটার দিয়ে ফেইস ক্লিন করলে একনে বা র্যাশ অনেকটাই প্রিভেন্ট হয়।
৩) স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখে
মাইসেলার ওয়াটারে যে ধরনের ইনগ্রেডিয়েন্টস ইউজ করা হয়, সেগুলো খুবই মাইল্ড। যে কারণে স্কিন রুক্ষ হয়ে যায় না, বরং হেলদি ও ময়েশ্চারাইজড থাকে। অনেক ব্র্যান্ডের মাইসেলার ওয়াটারে গ্লিসারিন থাকে, যা ত্বকের ময়েশ্চার লেভেল ব্যালেন্স করে। ডিহাইড্রেটেড অ্যান্ড ড্রাই স্কিন হলেও আপনি মাইসেলার ওয়াটার ইউজ করতে পারেন নিশ্চিন্তে।
কীভাবে ইউজ করবেন?
১. মেকআপ রিমুভার হিসাবে
মেকআপ করার পরে ত্বক খুব ভালোভাবে ক্লিন না করলে একনে ব্রেকআউটস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই হেভি মেকআপ সম্পূর্ণভাবে তুলে ফেলতে হলে রেগুলার ক্লেনজার ব্যবহারের আগে মাইসেলার ওয়াটার ইউজ করুন। একটি কটন প্যাডে বা তুলাতে মাইসেলার ওয়াটার নিয়ে সোয়াইপ করে মেকআপ ক্লিন করে নিন। মেকআপ ও ডার্ট ইনস্ট্যান্টলি রিমুভ করতে এটি দারুণ কাজ করে। লিপস্টিক, কাজল, আইশ্যাডো সবই ক্লিন হয়ে যাবে কয়েক সেকেন্ডে। এরপর রেগুলার ফেইস ওয়াশ বা ক্লেনজার দিয়ে ফেইস ধুয়ে ফেললেই হয়ে গেলো ডাবল ক্লেনজিং।
২. সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করার আগে
যারা বিভিন্ন কারণে বার বার ক্লেনজার ব্যবহার করতে পারেন না, তাদের জন্য একটি চমৎকার অপশন হলো এই মাইসেলার ওয়াটার। এটি ব্যবহার করতে যেহেতু পানি লাগে না, তাই বাইরে থাকলেও যখন তখন ইউজ করতে পারবেন। ট্রাভেলের সময়ে, অফিসে বা বাসার বাইরে যেকোনো জায়গায় খুব সহজেই এটি দিয়ে স্কিন পরিস্কার করে নেওয়া যায়। বিশেষ করে বাইরে সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করার আগে ফেইস ক্লিন করতে চাইলে মাইসেলার ওয়াটার আপনার জন্য বেস্ট সল্যুশন!
৩. মেকআপ মিসটেকস ফিক্স করতে
লিপলাইনার বা লিপস্টিক ছড়িয়ে গেছে? কটন বাড মাইসেলার ওয়াটারে ভিজিয়ে সেই জায়গাটা ঠিক করে নিন। মেকআপও নষ্ট হবে না, আবার ছড়িয়ে যাওয়া লিপস্টিকও ফিক্স করে নিতে পারবেন নিমিষেই। একইভাবে আইলাইনারও ঠিক করে নেওয়া যাবে। ছোট খাটো এই হ্যাকস শিখে রাখলে আপনারই সুবিধা হবে।
তাহলে বুঝতেই পারলেন, মাইসেলার ওয়াটার একটি অল রাউন্ডার প্রোডাক্ট। বাইরে থেকে এসে শুধুমাত্র ফেইস ওয়াশ দিয়ে ফেইস ক্লিন করলে স্কিন থেকে মেকআপ, ডার্ট, ইমপিওরিটিস পুরোপুরি রিমুভ হয় না। তাই ডিপলি ক্লিন ও ফ্রেশ স্কিন পেতে স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করুন মাইসেলার ওয়াটার। তবে স্কিন টাইপ বুঝে সঠিক প্রোডাক্টটি পিক করতে হবে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ