অ্যাসিডিটি সমস্যা | ঘরোয়া উপাদানে ১৬টি উপায়েই মিলবে মুক্তি

অ্যাসিডিটি সমস্যা | ঘরোয়া উপাদানে ১৬টি উপায়েই দূর করে নিন

অ্যাসিডিটি সমস্যা - shajgoj.com

আমাদের পাকস্থলী পরিপাক প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য এক ধরনের এসিড নিঃসরণ করে। আর অ্যাসিডিটি তখনই হয় যখন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি এসিড নিঃসরণ হয়। যখন বুক, গলা জ্বলবে এবং গ্যাস ফর্ম হবে তখন বুঝতে হবে অ্যাসিডিটি হচ্ছে। সাধারনত অনেকক্ষণ কিছু না খেলে অথবা বেশি ভাজাপোড়া, তেল মসলা জাতীয় খাবার খেলে এমনটি হয়। ভাবছেন তাহলে কয়েকদিন পর যে বন্ধু বা আত্মীয়ের বিয়ে আছে সেখানে মজাদার সব খাবার কী শুধু চোখে দেখতে হবে চেখে দেখা যাবে না? ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই, সেই ভোজন বিলাসীদের সুবিধার্থে আজ আমি অ্যাসিডিটি সমস্যা থেকে বাঁচার কয়েকটি উপায় বলে দেব। অ্যাসিডিটি-এর জন্য দামী দামী ওষুধ কেনার কোন দরকার নাই, কিছু সাধারণ উপাদান যা আমাদের রান্না ঘরেই পাওয়া যায় ট্রাই করে দেখুন আর তফাৎটা নিজেই বুঝে নিন।

অ্যাসিডিটি সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবার টিপসসমূহ

১. এইচসিএল (HCL) লেভেলের ভারসাম্য বজায় রাখুন

অ্যাসিডিটি প্রতিরোধের জন্য প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCL) উৎপন্নের পরিমাণটা প্রাকৃতিক উপায়ে কমিয়ে আনা। সিম্পল উপায় হলো আমরা সচরাচর যে লবণ খেয়ে থাকি ঐটার পরিবর্তে উচ্চমানের সি সল্ট খেতে হবে। সি সল্ট-এ প্রয়োজনীয় মিনারেল এবং ক্লোরাইড-এ ভরপুর থাকে। যারা দেশের বাইরে থাকেন ওয়ালমার্ট-এ সহজেই হেইন সি সল্ট (Hain Sea Salt), মরটোন সি সল্ট (Morton Sea Salt) পেয়ে যাবেন। আর আমার দেশী পাঠকেরা বড় বড় দোকানগুলোতে খুঁজে দেখতে পারেন। কিন্তু না পেলে হতাশ হবেন না, অপেক্ষা করুন আপনার জন্য আরও অনেক উপায় বলে দিচ্ছি!

Sale • Talcum Powder, Lotions & Creams

    ২. প্রসেসড ফুড-এর সাথে অরগানিক ফুড বদল করুন

     

    প্রসেসড ফুড একজন অ্যাসিডিটি-তে ভুক্তভোগির জন্য যেন কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত। প্রসেসড ফুড যেমন – চিপস, কুকিজ, পিজ্জা পরিপাক তন্ত্রে ব্যাকটেরিয়াল ভারসম্যের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই এই পরিস্থিতি সামাল দিতে তাজা সবজি এবং ফলমূল  খান।

    ৩. বেকিং সোডা

    বাইকার্বনেট সোডা অ্যাসিডিটি-এর চিকিৎসার অন্যতম প্রধান উপাদান। এক চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন আর মুহূর্তেই চনমনে হয়ে উঠুন। কিন্তু যারা উচ্চ রক্তচাপের রোগী বা যাদের সোডিয়াম খাওয়া মানা আছে তারা এই পদ্ধতির বদলে অন্যটা চেষ্টা করুন।

    ৪. ঘৃতকুমারীর রস

     

    ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরাতো আমাদের দেশে এখন খুব সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে। পেটের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের সাথে অ্যাসিডিটি-এর সমস্যাও সমাধান করে দেয়। এক আউন্স ঘৃতকুমারীর রসের সাথে ২ আউন্স পানি মিশিয়ে পান করুন।

    ৫. কাঁচা খাবার খান

    রিসার্চ-এর মাধ্যমে দেখা গেছে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এনজাইম কাঁচা সবজি ফলমূলে পাওয়া যায় সেটা ১১০ ফারেনহাইট-এ নষ্ট হয়ে যায়। তাই রান্না করা থেকে কাঁচা খাবারে এই উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। এই কাঁচা খাবার অ্যাসিডিটি-এর যন্ত্রণা থেকে আপনাকে বাঁচাবে।

    ৬. ভিটামিন ডি গ্রহন বাড়িয়ে দিন

     

    পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে শরীরে কমপক্ষে ২০০ অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল পেপ্টাইডস (antimicrobial peptides)-এর আগমন দেখা যায়। যা পরিপাক তন্ত্রের ইনফেকশন সারাতে সাহায্য করে। ডিম, কড লিভার অয়েল, দুধ, মাছ ভিটামিন ডি-এর উৎস।

    ৭. গ্লুটামিন

    গ্লুটামিন এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড যা আমাদের শরীরে উৎপন্ন হয়। ডিম, দুধ, মাছ, পালং শাকে গ্লুটামিন পাওয়া যায়। গ্লুটামিন ইনটেসটাইন ইনফ্লেমেশন (intestine inflammation)- এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

    ৮. কলা

     

    কলাতে যে এনজাইম আছে তা নাড়িতে শ্লেষ্মার মতো পদার্থ নিঃসরণ করে। এর ফলে অ্যাসিডিটি-এর কষ্ট থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। কলাতে উপস্থিত পটাসিয়াম পেটের আলসার সারাতে আর অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু অ্যাসিডিটি-এর  সময় কলা খেলে ১% এর ক্ষেত্রে অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।

    ৯. বাঁধাকপি

    এটা বলা হয়ে থাকে যে কাঁচা বাঁধাকপির রস আলসার-এর চিকিৎসায় উপকারি ফল দেয়। কিন্তু এটাও প্রচলিত আছে যে বাঁধাকপি গ্যাস ফর্মের অন্যতম কারণ। আসলে এটা একেক জনের শারীরিক গঠনের উপর নির্ভর করে। বাঁধাকপিতে গ্লুটামিন প্রচুর পরিমাণে থাকে।

    ১০. শসা

     

    যাদের শুধু শসা খেলে যাদের অ্যাসিডিটি হয়ে থাকে, তাদের জন্য বলছি ভাজাভুজির সাথে শসার সালাদ খেয়ে দেখুন অ্যাসিডিটি আপনার কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবে।

    ১১. জিরা ও আজওয়ান

     এক চা চামচ জিরা টেলে নিন এর সাথে এক চা চামচ আজওয়ান নিন। তারপর এক কাপ পানির সাথে ফুটিয়ে অর্ধেক করুন তারপর ছেঁকে নিন। অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির জন্য এটা পান করুন। স্বাদ বাড়ানোর জন্য চিনি দিতে পারেন।

    ১২. আজওয়ান ও লবণ

    যখন অ্যাসিডিটি হবে তখন আজওয়ান আর লবণ মিশিয়ে খান।

    ১৩. জিরা পানি

     

    এক চা চামচ জিরা ১ লিটার পানিতে ফুটান। ১০মিনিট ধরে ঠাণ্ডা করুন। তারপর হালকা গরম থাকতেই পান করুন। দিনে ২বার এক সপ্তাহ ধরে পান করুন।

    ১৪. ডালিম ও বিট-এর রস

    ডালিম এবং বিটের রস এক টেবিল চামচ মধুর সাথে খালি পেটে পান করুন। এক মাস নিয়মিত খান অবশ্যই উপকার পাবেন।

    ১৫. আদা

     

    আদাতে জিঞ্জেরল, শ্যাগলস (gingerol, shogaols) নামের ২টি রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা পাচনতন্ত্রকে ঠাণ্ডা করে। আদা সকল প্রকার পেটের পীড়া, গ্যাস প্রতিরোধক। অ্যাসিডিটি থেকে তাৎক্ষনিক মুক্তি পেতে এক কাপ গরম পানিতে হাফ চা চামচ আদা কুঁচি মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন।

    ১৬. দারুচিনি

    হাতের কাছে দারুচিনি থাকলে, তা পানিতে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা হলে সে পানিটা খেয়ে নিন।

    নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস আর স্বাস্থ্যকর খাবার এসিডিটি থেকে মুক্তির প্রধান উপায়। তরমুজ, বাদাম, দই, লেবু আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখুন। ধুমপান আর অ্যালকোহল পরিহার করুন। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ অ্যাসিডিটির অন্যতম কারণ। সময় থাকতেই অ্যাসিডিটি সমস্যা এর প্রতি সচেতন হন। কারণ এই অল্প কষ্ট একদিন হয়ত প্রকট আকারে ধরা দেবে।

     

    ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ

    11 I like it
    1 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort