নাবিলা ঘুম থেকে উঠেই দেখে তার মুখে একটি ব্রণ হয়েছে। সকাল সকাল মনটাই নাবিলার খারাপ হয়ে গেল। এই অ্যাকনে প্রবলেম নিয়ে সে অনেক ভোগে। স্কিনে ব্রণ থাকলে সাজগোজও করা যায় না। নাবিলার মতো যারা ত্বকের পিম্পল সমস্যায় আছেন, তাদের জন্য আজ বলবো ব্রণ নিরাময়ে টোনার ব্যবহার করা নিয়ে। চলুন তবে জেনে নেই ব্রণ আসলে কী, কেন হয় এবং ব্রণের জন্য ঘরোয়া উপায়ে টোনার কিভাবে ব্যবহার করবেন?
ব্রণ নিরাময়ে টোনার ব্যবহার নিয়ে যত কথা
ব্রণের জন্য টোনার ব্যবহার করতে পারেন। টোনার স্কিনের অয়েলি ভাব দূর করে স্কিনকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। তাই আমরা ব্রণ দূর করতে টোনার ব্যবহার করতে পারি। আসুন তার আগে আমরা জেনে নেই ব্রণ কী এবং কেন হয়?
ব্রণ কী ও কেন হয়?
আমাদের ত্বকে ব্রণ হয় ত্বকের নিচে সেবাম গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত তৈলাক্ত পদার্থ থেকে। ব্রণ সাধারনত মুখ, বুকের উপরের অংশ এবং পিঠে হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে ব্রণ হয়ে থাকে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, দুশ্চিন্তা, বিষন্নতা, হরমোনাল ইত্যাদি কারণে ব্রণ হয়ে থাকে। কখনো ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার না করলে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে ব্রণ হতে পারে।
ব্রণ দূর করতে টোনার-এর ব্যবহার
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবনতা থাকে বেশি। টোনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের ময়লা জমে গিয়ে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে ব্রণ হতে পারে। টোনার ত্বকের ময়লা দূর করে লোমকূপ পরিষ্কার করে থাকে যার ফলে ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। তাই ব্রণ নিরাময়ে টোনার ব্যবহার প্রয়োজনীয়। ত্বকের যত্নে খুব সহজে আমরা ঘরে বসেই তৈরি করে নিতে পারি টোনার। আসুন জেনে নেই কিভাবে ঘরে বসে ৬টি টোনার তৈরি করতে হয়-
ঘরোয়া উপায়ে ৬টি টোনার তৈরি
১. লেবু
লেবুর রস টোনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তুলায় লেবুর রস লাগিয়ে ব্রণের লাগিয়ে সারারাত রাখলে ব্রণ শুকিয়ে যাবে। এক চা চামচ লেবুর রসের সাথে এক টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে তুলায় লাগিয়ে ব্রণের উপর লাগিয়ে সারারাত রাখলে ব্রণ শুকিয়ে যাবে। তো, ব্রণ নিরাময়ে টোনারটি একবার ব্যবহার করেই দেখুন!
২. শসা
ব্রণ নিরাময়ে টোনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে শসা ব্রণের জন্য খুব উপকারি। শসা খুব ভালো টোনারের কাজ করে থাকে। শসা স্লাইস করে কেটে ব্রণের উপর লাগালে ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর হবে।
৩. টমেটো
টমেটোও পিম্পল সারাতে খুব ভালো টোনার হিসেবে কাজ করে। টমেটো পেস্ট করে ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখলে ব্রণ শুকিয়ে যাবে এবং ব্রণের দাগ ও কমে যাবে।
৪. সরিষা ও মধু
সরিষা এবং মধু মিশিয়ে যে টোনার হয়, তা বেশ ভালো একটি অপশন। একটু সরিষা গুঁড়া সাথে মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই টোনারটি ব্রণ দূর করে এবং ব্রণের দাগ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করে।
৫. অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা যে স্কিনের জন্য অনেক ভালো তা আমরা সবাই কম-বেশি জানি। এই উপকরণটি পিম্পল দূর করতে যাদুর মতো কাজ করে থাকে। এর জন্য অ্যালোভেরা ব্লেন্ড করে সেই রস ব্রণের উপর লাগিয়ে লাগালে উপকার পাওয়া যাবে। এটি স্কিনের স্পট দূর করে স্কিনকে গ্লো করবে।
৬. গ্রিন টি
গ্রিন টি খেলে কত উপকার তা নিশ্চয়ই সবাই জানি, তাই না? কিন্তু গ্রিন টি যে ভালো টোনারের কাজ করে থাকে, তা কি জানি? হ্যাঁ, গ্রিন টি টোনার অনেক ভালো ব্রণ নিরাময়ের জন্য। এর জন্য গরম পানিতে গ্রিন টি-ব্যাগ রেখে ১৫ মিনিট পর তুলে ফেলতে হবে। তারপর তুলায় লাগিয়ে পুরো মুখে অথবা শুধু ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখলে ব্রণ খুব জলদি শুকিয়ে যাবে। চাইলে এর সাথে টি-ট্রি অয়েল মিশিয়েও লাগানো যাবে।
ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে খুব সহজে ঘরে বসে টোনার তৈরি করে ব্রণ দূর করা যাবে। তবে শেষ করার আগে গুরুত্বপূর্ন একটি টিপস দিচ্ছি- লেবু বা টমেটো যেহেতু অ্যাসিডিক (acidic), তাই এটি স্কিনের অ্যালার্জি প্রবলেম (allergy problem) করতে পারে। তাই, অ্যালার্জি টেস্ট করতে টমেটো এবং লেবুর রস ব্যবহারের আগে কানের পেছনে বা হাতে অল্প একটু লাগিয়ে ৫ মিনিট সময় নিয়ে দেখুন। স্কিনে যদি জ্বালা করে থাকে, তবে বুঝতে হবে লেবুর রস এবং টমেটো থেকে আপনার ত্বককে দূরে রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি অন্য কোনো টোনার ব্যবহার করতে পারেন। তো, সবসময় সুন্দর থাকুন আর থাকুন কনফিডেন্ট!
আর হ্যাঁ, আপনি যদি ঘরোয়া টোনার বানাতে ঝামেলা মনে করেন, তাহলে আপনি যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমন্ত স্কয়ার-এ সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ বা অনলাইন-এ শপ.সাজগোজ.কম থেকে টোনার কিনতে পারেন।
ছবি- সংগৃহীত: ipsy.com