হেভি মেকআপ লুক, লাইট মেকআপ, বা জাস্ট টাচ আপ এসব বিষয়ে ইজিলি কভার করে ফেলে ছোট্ট একটি মেকআপ টুল। আর তা হলো বিউটি ব্লেন্ডার। ভীষণ পপুলার এই বিউটি টুল এখন ব্যাগে থাকা মাস্ট আইটেম গুলোর মধ্যে একটি। একটা সময় যখন ছিল বিভিন্ন ধরনের মেকআপ ব্রাশ দিয়ে মেকআপ করা হতো। এখনও মেকআপ ব্রাশ ব্যবহার করলেও এই ব্লেন্ডার না থাকলে যেনো মেকআপ কমপ্লিট লুক পায় না। তাই আজকে আপনাদের জন্য থাকছে বিউটি ব্লেন্ডারের টুকিটাকি কিছু বিষয়।
বিউটি ব্লেন্ডার যে ধরনের শেইপের হয়ে থাকে
এখন বাজারে বিভিন্ন সাইজের বিউটি ব্লেন্ডার পাওয়া যায়। আমাদের কাছে সব এক মনে হলেও একেকটার কাজ একেক রকম। তবে এই শব্দটা শুনলে পিংক কালারের ওভাল বা টিয়ার ড্রপ শেইপটাই মনে হয়। অধিকাংশই এটি কিনতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে আপনি যদি বাকি বিভিন্ন শেইপের যে ব্লেন্ডার রয়েছে তা সম্পর্কে আইডিয়া রাখেন তাহলে একটি কমপ্লিট মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে পারবেন সহজেই।
ওভাল শেইপ
এই ক্লাসিক বা অরিজিনাল ব্লেন্ডারটি প্রাইমার, ফাউন্ডেশন বিশেষ করে লিকুইড প্রোডাক্টস স্কিনে ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হেল্প করে। আবার উপরের পয়েন্টেড সাইড দিয়ে স্কিনের স্মল এরিয়া যেমন নাকের পাশে, চোখের নিচেও কভার করা যায়।
পিয়ার শেইপ
এটিও অনেকটা ওভাল শেইপের মতন কিন্তু মাঝে একটু বাঁকা। এতে করে ইজিলি হাতে ধরে রেখে মেকআপ করা যায়। এর নিচের ওয়াইড এরিয়া দিয়ে হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করা সহজ হয়। পাশাপাশি উপরের সূচলো অংশ দিয়ে চোখের নিচে, নাকের দুই পাশে মেকআপ করা যায়।
ওলিভ শেইপ
দেখতে একটু অদ্ভুত লাগলেও আপনার ফেইসের যত স্মল এরিয়া আছে সেগুলোকে পারফেক্টলি কভার করার জন্য বেস্ট এটি। পাশাপাশি হাইলাইটার, ব্রোঞ্জার, কনটোরিংও করতে পারবেন।
ওয়েইজ শেইপ
অনেকটা ট্রায়াঙ্গুলার শেইপের বা ত্রিভুজ আকৃতির এই ব্লেন্ডার মোটামুটি একটা টাচ আপ লুকের জন্য বেস্ট বলা চলে। অল্প সময়ের ভিতরে ফাউন্ডেশন এবং কনসিলার অ্যাপ্লাই করতে পারবেন। আর পয়েন্টেড সাইড থাকার কারণে যেসব এরিয়াতে মেকআপ করা যায় না সেগুলোও কভার করতে পারবেন।
প্রিটি পাফ মেকআপ স্পঞ্জ
যারা অরিজিনাল বিউটি ব্লেন্ডার পছন্দ করে তাদের জন্য এই শেইপের পাফ বেশ কাজে দিবে। এটি হলো ওভাল শেইপের কিন্তু সাইডে বা নিচের দিকে থাকে ফ্ল্যাট সারফেস। এতে করে প্রাইমার থেকে শুরু করে পাউডার সব অ্যাপ্লাই করা যায়।
ফ্ল্যাট শেইপ বিউটি ব্লেন্ডার
এগুলো একদম পাতলা, আঙ্গুলের সাথে এটাচড করে অ্যাপ্লাই করা যায়। সাধারণত মেকআপের পর ফেইসের ওয়েল অ্যাবজর্বে হেল্প করে। জাস্ট প্যাট করে মেকআপ আরও স্মুথ করতে পারবেন। এটি শুকনো অবস্থায় ব্যবহার করতে হয়। আবার চাইলে চোখের নিচে এবং নাকের পাশেরও ব্যবহার করতে পারবেন।
বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহারের নিয়ম
১) প্রথমত এটি পানিতে ভিজিয়ে নিন তারপর চেপে যতটা সম্ভব পানি বের করে নিন।
২) একটি টিস্যু পেপারের সাহায্যে চেপে নিন যাতে ব্লেন্ডারটি ড্যাম্প হয়ে যায়।
৩) তারপর মেকআপ নিয়ে জেন্টলি ব্লেন্ড করুন।
৪) প্রত্যেকটা ব্লেন্ডারেরই সাধারনত তিনটা সাইড থাকে, উপরের দিকে পয়েন্টেড, সাইডে কার্ভ এবং নিচের রাউন্ড শেইপ। তাই এক সাইড বারবার ব্যবহার না করে বিভিন্ন সাইড দিয়ে মেকআপ অ্যাপ্লাই করুন।
ব্লেন্ডার ব্যবহারের সুবিধা
- খুব সহজে ব্যবহার করা যায় এবং যেকোনো মেকআপ প্রোডাক্টস অ্যাপ্লাই করতে পারবেন এই একটি টুল দিয়ে।
- ইজিলি ক্যারি করা যায় কারণ এটি ট্রাভেল ফ্রেন্ডলি।
- অল্প সময়ের মাঝে মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে পারবেন।
- এটি একটি বাজেট ফ্রেন্ডলি টুল।
বিউটি ব্লেন্ডার ক্লিনিং প্রসেস
১) এটি ক্লিন করা যায় খুব সহজে। যেকোনো লিকুইড সোপ হাতে নিয়ে হালকা রাব করে এটি ক্লিন করতে পারবেন। তবে বেশি জোরে ঘষাঘষি করবেন না। অনেকেই সব মেকআপ উঠাতে গিয়ে এতো প্রেসার দেন যে মাঝে দিয়ে ছিড়ে যায়।
২) একটি বোলে হালকা কুসুম গরম পানিতে লিকুইড সোপ দিয়ে তাতে ২/৩ মিনিটের মতন ব্লেন্ডার ভিজিয়ে রাখলে মেকআপ ক্লিন হয়। তারপর পানি দিয়ে আরও এক বা দুইবার ধুয়ে নিলেই মোটামুটি ক্লিন হয়ে যায়।
৩) মাইক্রোওয়েভ ওভেনে আপনার ভেজানো ব্লেন্ডার একটি কাপে বা বোলে পানি দিয়ে ৫০ সেকেন্ডের মতন রেখে দিন। তারপর বের করে ঠান্ডা হবার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪) কোকোনাট অয়েল যেমন আমরা ফেইসে দিয়ে মেকআপ ক্লিন করি, ব্লেন্ডারও ঠিক সেভাবে ক্লিন করা যায়। হাতের তালুতে কিছুটা তেল নিয়ে রাব করুন যাতে মেকআপ উঠে আসে। তারপর নরমাল নিয়মে সোপ ওয়াটার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫) ব্লেন্ডার ওয়াশ করার পর অবশ্যই শুকনো পরিস্কার জায়গায় রেখে ড্রাই করে নিবেন। না হলে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে।
আর হ্যাঁ চেষ্টা করবেন মেকআপ অ্যাপ্লাই করার পরে আপনার ব্লেন্ডার ক্লিন করে ফেলতে। যদি মেকআপ করে ক্লিন না করে পরবর্তীতে সেই ব্লেন্ডার ব্যবহার করেন তাহলে জমে থাকা মেকআপ প্রোডাক্টসের জন্য মেকআপ তো বসবেই না তার উপরে ময়লা ব্লেন্ডারের কারণে আপনার ফেইসে ইরিটেশন এমনকি ইনফেকশনও হতে পারে। যেকোনো ব্লেন্ডার তিন মাসের বেশি ব্যবহার করা উচিত না।
এই ছিল আজকের বিউটি ব্লেন্ডার নিয়ে লেখা। যদি আপনার কাছে এটি না থেকে থাকে তাহলে মাল্টি পারপাস এই বিউটি টুল আজই কালেক্ট করে ফেলুন। আশা করি, আজকের ফিচারটি আপনাদের জন্য হেল্পফুল ছিলো। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক।