স্কিনকেয়ার ইন্ড্রাস্ট্রিতে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড এখন বেশ ট্রেন্ডি। এটি কিন্তু নতুন না, বেশ কয়েক বছর ধরেই এর হাইপ চলছে। ত্বকের যত্নে এর বেশ কার্যকরী প্রভাব আছে যা আজকে ফিচারে তুলে ধরা হবে। কাদের জন্য এটি স্যুইটেবল, এর মেইন বেনিফিট কী, কেন স্কিনকেয়ার রুটিনে এটি অ্যাড করবেন, এগুলো নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। বিশেষ করে স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে যারা একদমই বিগেইনার, তাদের তো এই ধরনের অনেক প্রশ্নই থাকে। স্কিনকেয়ারে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড অ্যাড করলে কী কী সতর্কতা মানতে হবে, সেটা জানাও জরুরি। চলুন শুরু করা যাক তাহলে।
বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড কী?
BHA হচ্ছে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড এর শর্ট ফর্ম। সাধারণত এই উপাদানটি কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে BHA এর জনপ্রিয় যে ফর্মটি ফেইস ওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার ও অন্যান্য স্কিনকেয়ার রেঞ্জে ব্যবহার হতে দেখা যায়, সেটি হলো স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। স্যালিসাইলিক অ্যাসিডের নাম তো কম বেশি সবারই জানা আছে, কিন্তু এটাই যে BHA সেটি কিন্তু অনেকেই জানেন না! একনে প্রন, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বিশেষভাবে রেকমেন্ড করা হয় এই উপাদানটি।
এটি স্কিনের জন্য কতটুকু সেইফ?
অ্যাসিড শব্দটি শুনে ঘাবড়ে যাবেন না, অ্যাসিড নামটি মূলত এর রাসায়নিক গঠনগত কারণে এসেছে। স্কিনকেয়ারে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড একদম নিরাপদ। U.S. Food and Drug Administration দ্বারা এটি স্বীকৃত। ফ্যাট সল্যুবল হওয়াতে খুব সহজেই আমাদের স্কিনে পেনিট্রেট হতে পারে এবং স্পেসিফিক স্কিন কনসার্ন টার্গেট করে কাজ করতে পারে।
স্কিনকেয়ারে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড এর অ্যামেজিং বেনিফিটস
১) BHA এর রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপারটিজ। অর্থাৎ এটি প্রদাহজনিত সমস্যা থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়।
২) মূলত BHA আমাদের স্কিনকে এক্সফোলিয়েট করে। নিউ সেলস জেনারেশনে হেল্প করে। এটি স্কিনের এক্সেস সেবাম, ডেড সেলস রিমুভ করে ত্বকের ভেতরে থাকা নতুন কোষকে উপরিভাগে নিয়ে আসে। যার ফলে স্কিন আগের থেকে ব্রাইট ও স্মুথ মনে হয় এবং একনে প্রবলেম অনেকটাই কমে আসে।
৩) আমাদের নাকে, থুতনিতে অনেক সময় ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডসের সমস্যা দেখা যায়। স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহারে এই স্কিন প্রবলেমগুলো সহজেই প্রিভেন্ট করা যায়। এটি পোরসকে ডিপলি ক্লিন করতে হেল্প করে। লিপিড সল্যুবল হওয়ার কারণে এটি খুব সহজেই ত্বকের গভীরে যেতে পারে।
কাদের জন্য স্যুইটেবল?
বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড অয়েলি টু কম্বিনেশন স্কিনের জন্য বেশ কার্যকরী। একনে প্রন স্কিনের যত্নে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড কাজ করে ঠিক ম্যাজিকের মতো। ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক না হলে এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। ২০+ বছর হলে স্কিনকেয়ারে সিরাম ও কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর রাখতে পারেন, কিন্তু এর আগে নয়।
সেইফ রেঞ্জ কত?
সাধারণত স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টসে ০.৫ থেকে ২% পর্যন্ত স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। বিগেইনারদের একদম লোয়ার কনসেন্ট্রেশন দিয়ে শুরু করা উচিত। পি এইচ ৩ থেকে ৪ এর মধ্যে এই উপাদানটি সবচেয়ে বেশি ইফেক্টিভ, তাই প্রোডাক্টের পি এইচ লেভেলও এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে।
কী কী সতর্কতা মানতে হবে?
১) প্রতিদিন এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করা যাবে না। সপ্তাহে ১-২ বার বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডযুক্ত কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করাই এনাফ। বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের সাথে সেইম টাইমে রেটিনল ব্যবহার করা যাবে না। অল্টারনেট করে ইউজ করতে হবে।
২) যদি একনে প্রবলেমের সল্যুশনে আপনি স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করেন, তাহলে একদিন পর পর ব্যবহার করা ভালো। অন্যদিন যেকোনো মাইল্ড ক্লেনজার ইউজ করতে পারেন। এতে স্কিন ওভার ড্রাই হওয়ার চান্স থাকে না, আবার স্কিন কনসার্নেরও সল্যুশন পাওয়া যায়। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ক্লেনজার ব্যবহারের পর হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। কারণ হায়ালুরোনিক অ্যাসিড স্কিনের ময়েশ্চার ও ওয়াটার ব্যালেন্স ঠিক রাখে।
৩) যদি স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে এরপর কিন্তু সেইম অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের সিরাম বা অন্য স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করা ঠিক হবে না।
৪) ডে টাইম স্কিনকেয়ারে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট। ২-৩ ঘন্টা পর পর সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করতে হবে। অন্তত SPF 30 আছে এমন সানস্ক্রিন চুজ করতে হবে।
প্যাচ টেস্ট কিন্তু মাস্ট
যেকোনো নতুন প্রোডাক্ট স্কিনকেয়ারে অ্যাড করার আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিন। যদি লং টাইম ইরিটেশন, বার্নিং সেনসেশন কিংবা র্যাশ হয়, তাহলে সেটি ব্যবহার করা বন্ধ করুন।
স্কিনকেয়ারে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড অ্যাড করার বেনিফিট তো জানা হলো! তাহলে স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী রাইট স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট সিলেক্ট করে নিন। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক