‘কনসিলার ও ফাউন্ডেশন তো অ্যাপ্লাই করেছি। তবু মেকআপ এমন কেকি হয়ে যাচ্ছে কেন? আবার একনে স্পটও ভিজিবল হয়ে আছে!’ আপনিও কি এই সমস্যা ফেইস করেছেন? তাহলে হতে পারে আপনার কনসিলার অ্যাপ্লাই করার মেথড কারেক্ট ছিল না। স্কিনের ডার্ক স্পটস, ব্লেমিশ হাইড করার জন্য কনসিলার ইউজ করা হয় এটা তো কমবেশি আমরা সবাই জানি। ফ্ললেস মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার জন্য সঠিকভাবে এটি অ্যাপ্লাই করা খুবই জরুরি। কারণ ভুলভাবে কনসিলার অ্যাপ্লাই করলে অল্প সময়েই মেকআপ কেকি হয়ে যেতে পারে। কী সেই ভুলগুলো? আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো কনসিলার মিসটেকস নিয়েই।
ভুলভাবে কনসিলার অ্যাপ্লাই করছেন না তো?
মেকআপ করার সময় কনসিলার তো অ্যাপ্লাই করছেন, কিন্তু কোনো ভুল হচ্ছে না তো? কী কী কনসিলার মিসটেক হতে পারে চলুন তাহলে এ বিষয়েই জেনে নেয়া যাক-
থিক লেয়ারে অ্যাপ্লাই করা
কনসিলার থিক লেয়ারে অ্যাপ্লাই করছেন? আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা যে পরিমাণে ফাউন্ডেশন নেন, ঠিক সেই পরিমাণেই কনসিলারও নেন! আচ্ছা ভাবুন তো, যদি এটাই করা হতো তাহলে দুটো বোতলের শেইপ ডিফারেন্ট কেন? কেনই বা এগুলোর পরিমাণে কমবেশি থাকে? এর কারণ হচ্ছে কনসিলার অ্যাপ্লাই করতে হয় অল্প পরিমাণে এবং প্রবলেম বুঝে নির্দিষ্ট কিছু জায়গায়। কনসিলার বেশ পিগমেন্টেড হয়, এগুলোর শেইডে ভ্যারিয়েশন থাকে, ফর্মুলেশন লাইট ও টেক্সচার বেশ থিক হয়। তাই এটিকে কখনোই ফাউন্ডেশনের মতো বেশি পরিমাণে অ্যাপ্লাই করা যাবে না।
সঠিক শেইড চুজ না করা
ডার্ক সার্কেল ও ব্লেমিশ হাইড করার জন্য কনসিলার হেল্প তো করে, কিন্তু যদি শেইডই কারেক্ট না হয় তাহলে? আর এই ভুলটাই সবাই করে। সঠিক শেইডের কনসিলার আপনার স্কিনে খুব ভালোভাবে ব্লেন্ড হয়ে যাবে। আন্ডার আই ডার্ক সার্কেল ঢাকার জন্য স্কিন টোনের চেয়ে এক শেইড লাইট এবং ব্লেমিশ কভার করার জন্য স্কিনের টোনের সাথে এক্সাক্ট ম্যাচ করে এমন কনসিলার চুজ করতে হবে।
কালার কারেক্টিং কনসিলার ইউজ না করা
অনেকের ফেইসে একনে, স্পট বা হাইপারপিগমেন্টেশন একটু বেশি। তারা ভাবেন শুধু স্কিন টোন অনুযায়ী ফাউন্ডেশন বা কনসিলার অ্যাপ্লাই করলেই এগুলো হাইড হয়ে যাবে। এমনটি তো হয়ই না, বরং ফেইসের পিগমেন্টেড এরিয়াতে বা চোখের নিচে মেকআপ ভেসে ভেসে থাকে। অনেক সময় একনে স্পটও ভিজিবল হয়ে যায়। কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ে এটাও একটি ভুল। কারণ এসব ক্ষেত্রে ইউজ করতে হবে কালার কারেক্টিং কনসিলার। কোন প্রবলেমে কোন কারেক্টিং কনসিলার ইউজ করবেন চলুন জেনে নেই-
গ্রিন কালার কারেক্টর- একনে স্পট, র্যাশ বা বার্থ মার্ক হাইড করে স্কিন টোন ইভেন করতে
অরেঞ্জ ও পিচ কালার কারেক্টর- চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল, ঠোঁটের চারপাশের পিগমেন্টেশন বা ফেইসের কোনো এরিয়াতে ডিসকালারেশন ফিক্স করতে
ইয়েলো কালার কারেক্টর- স্কিনে কোনো কাটা দাগ বা ক্ষত থাকলে এবং ডার্ক সার্কেল হাইড করে আন্ডার আই এরিয়া ব্রাইট করতে
সঠিক ফর্মুলা সিলেক্ট না করা
কনসিলার মিসটেকসের মধ্যে আরও একটি কমন মিসটেক হচ্ছে সঠিক ফর্মুলা সিলেক্ট না করা। আমরা অনেকেই রাইট ফর্মুলা চুজ করতে পারি না বলে কনসিলার ক্রিজ হতে থাকে। যদি আপনার আন্ডার আই অনেক বেশি ড্রাই হয়, সেক্ষেত্রে হাইড্রেটিং কনসিলার খুব ভালো একটি অপশন। আবার অয়েলি স্কিনের জন্য ম্যাটিফাইয়িং কনসিলার চুজ করা বেটার। স্মুথ ও ক্রিজ ফ্রি কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের জন্য প্রথমে আন্ডার আই এরিয়া আই ক্রিম বা হাইড্রেটিং ক্রিম দিয়ে হাইড্রেট করে নিতে হবে। এতে লং টাইম পর্যন্ত কনসিলার সেট হয়ে থাকবে এবং ক্রিজ হবে না।
ফাউন্ডেশনের আগে অ্যাপ্লাই করা
কনসিলার কখন অ্যাপ্লাই করবেন? ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাইয়ের আগে না পরে? দুটো প্রোডাক্টের মধ্যে আগে অ্যাপ্লাই করতে হয় ফাউন্ডেশন, এরপর কনসিলার। ফাউন্ডেশন ফেইসে একটি ক্যানভাস ক্রিয়েট করবে। কনসিলার স্পট কারেক্ট করে এবং ডার্ক সার্কেল হাইড করে স্কিনে এক্সট্রা কভারেজ দিবে। কনসিলার মিসটেকস এড়াতে এ বিষয়টাও জানা জরুরি। তবে কালার কারেক্টর কিন্তু অ্যাপ্লাই করতে হবে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার আগে। অর্থাৎ শুরুতে অ্যাপ্লাই করতে হবে কালার কারেক্টর, এরপর ফাউন্ডেশন, এরপর কনসিলার।
প্রোপারলি সেট না করে নেয়া
কনসিলার অ্যাপ্লাই করা শেষ? এবার নিশ্চয়ই ফেইস পাউডার দিয়ে সেট করার কথা ভাবছেন? এই কমন মিসটেকটাও অনেকে করেন। কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের পর অনেকেই সরাসরি পাউডার দিয়ে সেট করার চেষ্টা করেন। এতেও কিন্তু ক্রিজিং হয়। এক্ষেত্রে পাউডার অ্যাপ্লাইয়ের পর কনসিলার বাফিং ব্রাশ দিয়ে জায়গাটুকু ইভেন করে লুজ পাউডার দিয়ে সেট করতে হবে। কমপ্যাক্ট পাউডারের তুলনায় লুজ পাউডার ফাইন ডাস্ট হওয়াতে যে কোনো ক্রিম বা লিকুইড প্রোডাক্ট ইজিলি সেট হয়ে যায়।
অতিরিক্ত কনসিলার ইউজ করা
এই ভুলটা কমবেশি আমরা সবাই করি। অনেকেরই কনসিলার দেয়ার পর মেকআপ লুক কেকি হয়ে যায় বা বেশি হেভি লাগে। যদি আপনার ক্ষেত্রেও তাই হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি অতিরিক্ত কনসিলার ইউজ করেছেন। এতে আনওয়ান্টেড ক্রিজিং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই নির্দিষ্ট জায়গায় অল্প পরিমাণে কনসিলার ইউজ করুন।
ব্লেন্ডিং এ কারেক্ট টুলস ইউজ না করা
ভুলভাবে কনসিলার অ্যাপ্লাই তে আরও একটি মিসটেক অনেকেই করেন। সেটি হচ্ছে ব্লেন্ডিং এর জন্য কারেক্ট টুলস চুজ না করা। কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের সময় ব্লেন্ডিং বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেপ। অতিরিক্ত রাব করা বা এনাফ মিক্সিং এর কারণে আনওয়ান্টেড লাইনস ক্রিয়েট হতে পারে। আর এই টেকনিক ঠিকঠাকভাবে কমপ্লিট করার জন্য প্রোপার টুলস ইউজ করতে হবে। কনসিলার ব্লেন্ডিং এর জন্য সব সময় স্পঞ্জ ইউজ করুন। অনেকে আঙুল দিয়ে ব্লেন্ড করার চেষ্টা করেন, তবে ব্লেন্ডিং এর জন্য এটি রাইট চয়েস নয়।
ভালোভাবে ব্লেন্ড না করা ভুলভাবে কনসিলার অ্যাপ্লাইয়ের আরও একটি পয়েন্ট। ব্লেমিশ হাইড করে স্কিন টোন যেন ইভেন দেখায় সেজন্য যেখানে যেখানে কনসিলার অ্যাপ্লাই করা হয়েছে তার চারপাশের এরিয়া খুব ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে।
কনসিলার মিসটেকস সম্পর্কে জেনে আপনারও কি মনে হচ্ছে এগুলো থেকে কোনো মিসটেক আপনিও রেগুলার করতেন? এবার নিশ্চয়ই আর মিসটেক হবে না। এখন থেকে প্রোপার ওয়েতে কনসিলার অ্যাপ্লাই করে মেকআপ লুককে করে তুলুন আরও ফ্ললেস। অথেনটিক মেকআপ, স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ণ মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।
ছবিঃ সাজগোজ