অ্যারোমা ফেসিয়ালের কথা আমরা কে না শুনেছি? প্রায়ই পার্লারে গিয়ে হাজার হাজার টাকা ব্যয় করছি আমরা এই ফেসিয়ালের পেছনে। তবে আমরা যদি জেনে নেই কীভাবে ঘরে বসে আমরা অ্যারোমা ফেসিয়াল করব তাতে আমাদের টাকা ও অতিরিক্ত সময় দুটোই বেঁচে যাবে।
অ্যারোমা ফেসিয়াল বেশি উপযোগী বিয়ের কনেদের জন্য। অর্থাৎ যারা কিছু দিন পর বিয়ের কনে সাজতে যাচ্ছেন তাদের জন্য এই ফেসিয়াল উপযোগী এবং এই ফেসিয়াল সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী।
এখানে বলে রাখা ভালো, অ্যারোমা ফেসিয়াল করতে হলে কিছু অ্যাসেনসিয়াল অয়েল দরকার পড়ে যেগুলো না হলেই নয়। এই অয়েলগুলো অবশ্যই ভালো মানের ও ব্র্যান্ড-এর হতে হবে। এই অয়েলগুলো ৪০০-৮০০ টাকার মধ্যে। এখন আপনি হয়ত ভাবতে পারেন এত টাকা দিয়ে কেন কিনবেন? চিন্তা করুন একবার কিনে ফেললে আপনি অনেক দিন এই অয়েল ব্যবহার করতে পারবেন এবং শুধু ফেসিয়াল নয়, যেকোন রূপচর্চায় এটি আপনাকে সাহায্য করবে।
উপকরণঃ
• ক্লিনজার
• স্ক্রাব
• ফেসিয়াল অয়েল
• দুধ
• চন্দন গুঁড়া
• কাঠবাদাম গুঁড়া
• ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম
• রোজ ওয়াটার
• জিরেনিয়াম অয়েল
• ল্যাভেন্ডার অয়েল
• লেমন অয়েল
• সারপ্রেস অয়েল
• টক দই
অ্যারোমা ফেসিয়াল- এর ৫ টি ধাপ
(১) ফেইস ক্লিন করা
ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়ার পূর্বে প্রথমে গরম ভাপ নিয়ে নিন। এটি আপনার মুখের রন্ধ্র খুলে দিতে সাহায্য করবে। এর জন্য আপনি একটি তোয়ালে এক বাটি হার্বাল চায়ের মধ্যে ভিজিয়ে তা আপনার মুখে ও গলার উপর দিয়ে রাখুন এবং ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
(২) স্ক্রাব করা
এবার স্ক্রাব দিয়ে মুখ আলতো ভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘষুন। তারপর উষ্ণ তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন। মুখে কোন তেল থেকে থাকলে তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। যদি আপনি ভারী মেক-আপ নিতে চান আপনি চাইলে আবার মুখ ক্লিন করে নিতে পারেন।
(৩) টোনার ব্যবহার
এই পর্যায়ে টোনিং করে নিতে হবে। টোনিং খুবই গুরত্বপূর্ণ ধাপ ফেসিয়ালের। তুলা দিয়ে টোনার মুখে লাগান কিন্তু ভুলেও ঘষবেন না। চোখের কাছে লাগাবেন না। আপনার ত্বক এখন ময়েশ্চারাইজিং এর জন্য প্রস্তুত।
(৪) ময়েশ্চারাইজ করা
এবার অ্যারোমেটিক ফেসিয়াল অয়েল দিয়ে মুখে ময়েশ্চারাইজ করতে পারেন। এই তেলে কিছু উপাদান আছে যা মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এখানে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখবেন টোনার লাগাবার পর মুখ কিছুটা আর্দ্র থাকা অবস্থায় তেল লাগাতে হবে। পুরোপুরি শুকনো হলে চলবেনা। যদি ত্বকের কোন জায়গা শুষ্ক থাকে তবে সেক্ষেত্রে দুবার ময়েশ্চারাইজ করবেন। কিন্তু প্রথম বার আর দ্বিতীয় বারের মাঝে ২-৩ মিনিট বিরতি রাখবেন এবং দ্বিতীয় বার কিছুটা পানি অথবা টোনার দিয়ে নিবেন।
(৫) ফেইস-প্যাক অ্যাপ্লাই করা
৩ রকম ফেইস-প্যাক অ্যাপ্লাই করতে পারেন
১. প্রথমে ফেইস-প্যাক তৈরি করতে ১ টেবিল চামচ দুধ, চন্দন গুঁড়া, কাঠ বাদামের গুঁড়া নিতে হবে। তারপর একটি পাত্রে সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট করে তা মুখে আর গলায় লাগিয়ে নিবেন।
২. কাঠ বাদামের গুঁড়া, আধা টেবিল চামচ মধু এবং ১ ফোঁটা রোজ ওয়াটার দিয়ে একটি পেস্ট প্রস্তুত করুন এবং তা মুখে ও গলায় লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। রোজ অয়েলের মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা ত্বকের জন্য উপকারী। এটি ত্বককে করে তোলে উজ্জ্বল।
৩. ৪ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল, ৪ ফোঁটা রোজ অয়েল এবং ২ ফোঁটা জিরেনিয়াম অয়েল নিয়ে মেশাবেন আপনার ফেসিয়াল মাস্কে। তবে এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য। তৈলাক্ত এবং স্বাভাবিক ত্বকের জন্য ২ চা চামচ টক দই, ২ ফোঁটা লেমন অয়েল, ২ ফোটা সাইপ্রেস অয়েল মেশাবেন আপনার ফেসিয়াল মাস্কের সাথে। অ্যারোমা ফেসিয়াল প্যাক আপনি যে কোন মার্কেট থেকে কিনে নিতে পারেন।
অ্যারোমা ফেসিয়াল যেমন জনপ্রিয় তেমন উপকারী। এতে আপনার কোন অ্যালার্জি সমস্যা হবেনা যদি আপনি সঠিক ভাবে অ্যাসেন্সিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। আর হ্যাঁ বলে রাখি সব ধরনের ফেসিয়াল এর পর ফেইস ক্লিন করে পছন্দ মতো ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম নিয়ে তার সাথে এক ফোঁটা রোজ অয়েল ও এক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে ধীরে ধীরে মুখে লাগাতে হবে। এতে করে ফেইস সফট এবং গ্লোয়িং দেখাবে।
ছবিঃ সংগৃহীত – সাটারস্টক