চটজলদি ওজন কমাতে ডায়েট-এ যে ৫টি কাজ কখনই করবেন না!

চটজলদি ওজন কমাতে ডায়েট-এ যে ৫টি কাজ কখনই করবেন না!

ডায়েট মিসটেক করে আফসোস করছেন

জীবনে একবার দুইবার ডায়েট আমরা অনেকেই করেছি। আর যারা ওভারওয়েট তারা দেখা যায় বছরের বেশিরভাগ সময় একবার এই ডায়েট আবার সেই ডায়েট ফলো করতে করতেই কাটিয়ে দেন। বিশেষ করে চটজলদি ওজন কমাতে ডায়েট করতে দেখি অনেককেই। আর বিশেষ কোন উপলক্ষ্যে খোঁজ পড়ে এক সপ্তাহে ৫ কেজি, ১০ কেজি ওজন কমানোর ভয়াবহ ক্রাশ ডায়েটের। তারপর শুরু হয় চুল পড়া, মুখ আর শরীরের ত্বক কুঁচকে নির্জীব হয়ে যাওয়াসহ গ্যাস্ট্রিক, এসিডিটি টাইপের ঝুঁট ঝামেলা। তখন আবার শুরু হয় মাথায় ক্যাস্টর অয়েল আর মুখে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম মাখা আর ফেসিয়ালের হিড়িক। মাঝে মাঝেই দেখি সাজগোজের অনেক স্কিন আর হেয়ার কেয়ার পোস্টে এতো কিছু করে টাকার শ্রাদ্ধ করা কিছু অতৃপ্ত আত্মার কমেন্ট-

‘করে দেখসি, কোন কাজ হয় না,’…

Sale • Straight, SHOP BY HAIR TYPE, Talcum Powder

    কেউ কেউ তো আবার বলেই ফেলেন- ‘ফালতু’!

    চটজলদি ওজন কমাতে ডায়েট করছেন?

    স্কিন আর হেয়ারকেয়ার আপনার ত্বক আর চুলের স্বাভাবিক অবস্থা ধরে রাখতে আর তার অবস্থা আরেকটু ভালো করার জন্য করা যায়। তার উপরে, এটা খুবই ধৈর্যের কাজ। এখন একটু বলুন তো, আমি যদি নিজের ফুড হ্যাবিট কন্ট্রোল করতে না পেরে ৮-১০ কেজি ওজন বাড়িয়ে ফেলে তারপর চরম অধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে আবার ১ সপ্তাহে ১০ কেজি ওজন কমানোর চেষ্টা করি। আর এই চক্করে আমার শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো কোন খাবার না পেয়ে নির্জীব হয়ে যায়, আর আমি মাথার অর্ধেক চুল উঠে ন্যাড়া হয়ে যাই, দুনিয়ার কোন হেয়ার মাস্ক কী আমার চুলগুলো মাথায় লাগিয়ে দিতে পারবে?

    সত্যি কথা কি জানেন? আমরা সবাই ব্যাপারগুলো জানি, ছোটবেলায় আমাদের সবার মা বাবাই শাক সবজি, দুধ, ডিম বেশি বেশি খেতে বলেছে, তাই না? কিন্তু আমরা স্বীকার করতে চাই না যে নিজের ভুলেই নিজের এতো বড় সর্বনাশ আমরা করে চলেছি।

    চটজলদি ওজন কমাতে ডায়েট করতে গিয়ে যে ৫টি কাজ করবেন না

    আজ কিছু পয়েন্টের কথা আপনাদের আবার মনে করিয়ে দেব। যারা দীর্ঘসময় ধরে চটজলদি ওজন কমাতে ডায়েট এর কসরত করে চলেছেন তাদের জন্যই আজকের লেখা। অনেকেই হয়ত জানেন, কিন্তু যারা জানেন না তারা দেখে নিতে পারেন ডায়েটের কোন ভুলগুলো আজীবনের জন্য আপনার স্বাস্থ্য আর সৌন্দর্য নষ্ট করে দিতে পারে।

    ১) শর্করা একদম বাদ দেবেন না যেন

    শর্করা আমাদের দেহের সবচেয়ে দরকারি খাদ্যের একটি। আপনার যদি রেগুলার ভাত বা রুটি খেয়ে অভ্যাস থাকে তবে ক্রাশ ডায়েটের চক্করে একদিনেই সব খাওয়া বাদ দেবেন না যেন। তাহলে হঠাৎ করেই নিজেকে দুর্বল লাগতে থাকবে। সাথে সাথে ব্লাড প্রেশারে উঠানামাও হতে পারে। ডায়েটে গেলে রোজ এককাপ লাল চালের ভাত বা দুটি লাল আটার রুটি খান।

    ২) চিনিও দরকারি

    না না, চামচ ভর্তি করে চিনি খেতে বলছি না। আপনি কি জানেন আমাদের মস্তিষ্ক পুরোপুরি গ্লুকোজের ফুয়েলে চলে? আর গ্লুকোজ আমরা পাই চিনি বা অন্য কোন শর্করার সোর্স থেকে। আপনার মস্তিষ্ক যাতে ঠিকমত কাজ করতে পারে আর আপনার ডায়েট প্ল্যানও যাতে ধ্বংস না হয় সেজন্য বিভিন্ন ফল, মধু ইত্যাদি খাবারের তালিকায় রাখুন।

    ৩) কিছু না খেয়ে কয়েক বেলা কাটিয়ে দেবেন না

    এই বদ অভ্যাস আমার নিজের ছিল। এক বেলা না খেয়ে থেকে মনে করতাম নিশ্চয়ই ওজন এক কেজি কমে গেছে! কিন্তু আপনি যত কম খাবেন আপনার শরীর তত বেশি ফ্যাট জমা করবে, কারণ আপনার না খেয়ে থাকার অভ্যাসের জন্য আপনার শরীর বুঝতে পারবে না যে নেক্সট সে আবার কখন খাবার পাবে। সাথে সাথে কমবে মেটাবলিসম। যে কারণে অনেক ডায়েট করেও ওজন কমাতে পারবেন না। মেটাবলিসম হার ঠিক রাখার জন্য আপনার সারাদিনের খাবার সমান ভাগ করে দিনে ৬ ভাগে খান। ২-৩ ঘণ্টার বেশি কিছু না খেয়ে থাকবেন না।

    ৪) কথার ফাঁদে পা দেবেন না

    আজকাল অনেকেই শুনি স্লিমফাস্ট, স্লিমক্যাল আর বিভিন্ন স্লিমিং টি আর ক্যাপসুল খেয়ে ১ সপ্তাহ বা ১ মাসে ১০-১৫ কেজি ওজন কমানোর স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে এসবের বেশিরভাগই হয় কোন ধরনের লাক্সাটিভ (যা বার বার মলত্যাগে বাধ্য করে)। এতে আপনার শরীর আপনি যা খান তা থেকে দরকারি পুষ্টি পায় না। এতে করে খুব দ্রুত চুল পড়তে থাকে আর স্কিন নষ্ট হয়ে যায়। আর লং টার্ম সাইড ইফেক্টে বন্ধ্যাত্ব আর কিডনি ফেইলিওর হওয়া খুবই কমন। তাই আরেকবার ভাবুন,

    ১ সপ্তাহে ওজন কমানোর জন্য আপনি কি আপনার কিডনি দিতে পারবেন? জানি ফিল্মি শোনাচ্ছে কিন্তু যারা কিছু না জেনে মনের আনন্দে টাকা দিয়ে বিষ কিনে খাচ্ছে তাদের আর কোন ভাবে কিছু বোঝানো যায় না।

    ৫) চোখ বন্ধ করে ডায়েট প্ল্যান ফলো করবেন না

    অনেকে আছেন ফেসবুকে যেখানে যে ডায়েট প্ল্যান পান সাথে সাথে সেটা ফলো করেন। মনে রাখবেন একেক জনের শরীর একেক ধরনের। এজন্য আমরা সাজগোজে কোন ডায়েট প্ল্যা দিলে বারবার ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেবার কথা মনে করিয়ে দেই। আচ্ছা বলুনতো আপনার শরীরে কী সমস্যা এটা ফেসবুকে কমেন্ট করে প্রশ্ন করলে কীভাবে সেখানে কেউ সিরিয়াসলি উত্তর দেবে?

    আমার যা মনে আসে তাই যদি আমি বলি আর আপনি যদি তাই ফলো করে বিশাল কোন সমস্যায় পড়েন তাহলে? “অমুকের কাছে শুনে এই ডায়েট করছি” বা “তমুকে বলেছে এটায় নাকি কাজ হয়” এসব পথে চিন্তা বাদ দিন। আপনার শরীর আপনার চেয়ে ভালো কেউ চেনে না। আমরা সাজেসট করতে পারি মাত্র। কিন্তু ফাইনাল ডিসিশন আপনার।

    তাই আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে, কোন ডায়েটেশিয়ান, নিউট্রিশনিসট বা ডাক্তারের সাথে সামনাসামনি কথা বলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। আর গুগল করে ডায়েট প্ল্যান সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন। এতে ফেসবুকে একে ওকে প্রশ্ন করে ভুল আর তমুকের কাছে শুনেছি টাইপের উপদেশ থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

    উপরের পয়েন্ট গুলো আমরা সবাই কমবেশি শুনেছি। কিন্তু আবার বলার উদ্দেশ্য সবাইকে মনে করিয়ে দেয়া যে আপনার স্বাস্থ্য একান্তই আপনার একার। সুতরাং ছোট ছোট ভুল করে যদি নিজের ক্ষতি আমরা করি অন্তত তার রেস্পন্সিবিলিটি নিয়ে ভুলগুলো শোধরাবার একটু চেষ্টা করি। চটজলদি ওজন কমাতে ডায়েট করতে গিয়ে নিজের ক্ষতিটা করে বসবেন না।

    লিখেছেন – মীম তাবাসসুম

    ছবি – লিস্টক্রাক্স.কম, সাটারস্টক

     

     

    36 I like it
    8 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort