আমাদের মোটামুটি সবারই একটা বিউটি রুটিন রয়েছে যা অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিয়ে থাকি। সময়ের সাথে সাথে সেই রুটিনের কিছু জিনিস পরিবর্তন হয় আবার কিছু জিনিস বাদ পরে যায় একেবারেই। তবে মাঝে মাঝে নিজেদের অজান্তেই কিছু খারাপ অভ্যাস ঢুকে পড়ে এবং কিছু ভালো অভ্যাস বাদ পড়ে যায় এই রুটিন থেকে, যার ফলাফল মোটেই শুভ নয়। আজ আপনাদের জানাবো তেমনই ৭ টি বদভ্যাস সম্পর্কে যা যত দ্রুত সম্ভব ত্যাগ করাই শ্রেয়।
০১। অতিরিক্ত এক্সফলিয়েট করা:
আমরা মোটামুটি সকলেই এক্সফলিয়েটর বা স্ক্রাব ব্যবহারের গুরুত্ব জানি। স্ক্রাব ত্বকের মরা কোষ দূর করে ত্বক নরম ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল করে তুলতে সাহায্য করে। কিন্তু সুন্দর ত্বকের আশায় যদি আবার অতিরিক্ত স্ক্রাব ব্যবহার করেন তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। অতিরিক্ত স্ক্রাবিং এর ফলে ত্বক লালচে হয়ে যায়, আর যাদের ত্বক সেনসিটিভ তারা আরো খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পারেন। এছাড়াও প্রয়োজনের অতিরিক্ত স্ক্রাব করলে ত্বকে ছোট ছোট হোয়াইট হেডস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যেগুলো সহজে ত্বক থেকে যায় না। সপ্তাহে ২ বারের বেশি স্ক্রাব ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
২। সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা:
সানস্ক্রিন হচ্ছে বিউটি রুটিনের অত্যাবশ্যক একটি প্রসাধনী। প্রতিদিন বাইরে যাওয়ার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহারের মাধ্যমে সানবার্ন, বলিরেখা এমনকি স্কিন ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তবে অনেকেই আছে যারা সানস্ক্রিন ব্যবহারটাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না যার ফলে মুখে বিভিন্ন স্পট এবং বয়সের ছাপ তাড়াতাড়ি ফুটে উঠে। সানস্ক্রিন ব্যবহারে আরেকটি ব্যাপার লক্ষ্য রাখা জরুরী। আজকাল বিভিন্ন প্রসাধনী SPF সহ কিনতে পাওয়া যায় যা অবশ্যই ভালো কিন্তু তাই বলে কিন্তু এটা ভাবলে চলবে না যে সেগুলো ব্যবহার করলে আর সানস্ক্রিন ব্যবহার করা লাগবে না। মেকাপের আগে অবশ্যই আলাদাভাবে সানস্ক্রিন লাগাবেন এবং অন্যান্য প্রসাধনীতে যদি SPF থাকে তাহলে সেটা বোনাস হিসেবেই দেখুন।
৩। মেকাপ ব্রাশ পরিষ্কার না করা:
মেকাপ ব্রাশ যদি নিয়মিত পরিষ্কার করা না হয় তাহলে তা দিয়ে তো মনের মত মেকাপ ফিনিশ পাবেনই না সাথে সাথে সেই অপরিষ্কার ব্রাশ থেকে স্কিনে ব্রণ এবং ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার একটু সময় নিয়ে মেকাপ ব্রাশগুলো পরিষ্কার করে নিন।
৪। মেকাপ নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া:
সারাদিন অফিস করে বা রাতে পার্টি থেকে ঘরে ফিরে আলসেমির কারণে আর মেকাপ তুলতে ইচ্ছে করছে না? ইচ্ছে না করলেও এই ভুলটি কখনোই করবেন না। মেকাপ না তুলে ঘুমাতে যাওয়া খুবই খারাপ একটি অভ্যাস। ঘুমানোর সময় যদি স্কিনে মেকাপ থাকে তবে তা বালিশের চাপে স্কিনের আরো ভিতরে প্রবেশ করে যার ফলাফল হচ্ছে ব্রণ এবং রুক্ষ ও প্রাণশূন্য ত্বক। তাই বাসায় ফিরে যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব মেকাপ তুলে ফেলুন।
৫। ময়েশ্চারাইজার বাদ দেয়া:
আমাদের অনেকেরই একটি ধারণা রয়েছে যে তৈলাক্ত ত্বকে কোন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা লাগে না। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ড্রাই, সেনসিটিভ বা তৈলাক্ত সব ধরনের ত্বকেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অপরিহার্য। তবে অবশ্যই তা ব্যবহার করা চাই ত্বকের ধরন বুঝে। ত্বক যদি বেশি অয়েলি হয় তাহলে লাইট এবং ওয়াটার বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এছাড়াও ড্রাই এবং সেনসিটিভ ত্বকের জন্য আলাদা যে ময়েশ্চারাইজার রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করুন।
৬। হিট প্রটেক্টর ব্যবহার না করা:
চুলের ড্যামেজ এবং চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে হেয়ার স্টাইলিং এর সময় হিট প্রটেক্টর ব্যবহার না করা। অথচ বেশির ভাগ মানুষই এই প্রয়োজনীয় জিনিসটি বাদ দিয়ে বিভিন্ন হিট স্টাইলার ব্যবহার করে থাকে যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ। তবে যতটা সম্ভব এসব হিট স্টাইলার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং যখনই করবেন হিট প্রটেক্টর ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন।
৭। মুখ ভালো মত না ধোওয়া:
আমরা অনেকেই আছি যারা মুখের ময়লা বা মেকাপ তোলার ক্ষেত্রে শুধু ক্লিনজিং ওয়াইপস বা নরমাল ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়েই নিশ্চিন্তে থাকি। অথচ এগুলো শুধু ময়লা এবং মেকাপের একাংশ তুলে থাকে, অবশিষ্টাংশ যা থাকে সেটা দেখা না গেলেও ফলাফলটা কিন্তু ঠিকই দেখতে পাবেন। ত্বকের ময়লা যদি ভিতর থেকে ভালো মত পরিষ্কার না করা হয় তবে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায় যার ফলে ব্রণ এবং র্যাশের সংক্রমণ বেড়ে যায়। তাই বাইরে থেকে এসে অবশ্যই ভালো মত মুখটা ধুয়ে নেবেন। প্রথমে ক্লিনজিং ওয়াইপস বা মেকাপ রিমুভার দিয়ে মুখ মুছে এরপর ভালো কোন ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করে মুখ ধুয়ে নিবেন।
ছবি- শিনোওস.কম
লিখেছেন- নাহার