আপনার বাসায় কি একজন বাড়ন্ত শিশু রয়েছে? যদি থেকে থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই জানেন তার সুস্থভাবে বেড়ে উঠা কতটা প্রয়োজন, তাই না? তার সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনাকে কত কিছুই না করতে হয়। পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো, সঠিক উপায়ে যত্ন, প্রোপার রুটিন ফলো করা, আরো কত কী! কিন্তু মাত্র একটি উপাদান আপনার শিশুর সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ করতে পারে। তাহলে বলি উপদানটির নাম শুনলে আরও বেশি অবাক হবেন। এ উপাদানটি হলো “মধু”!!! আসুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই নিয়মিত বাচ্চাদের জন্য মধুর ব্যবহার করলে কী কী উপকার হতে পারে।
বাচ্চাদের জন্য মধুর ব্যবহার যেভাবে করতে পারেন
১) শিশুর এনার্জি বাড়ায়
আপনার শিশুকে সারাদিন অ্যাকটিভ রাখতে তাদের যথাযথ এনার্জির দরকার। মাত্র ১ চা চামচ মধু পারে আপনার চ্যাম্পকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এনার্জেটিক রাখতে। মধুতে আছে ফ্রুক্টোজ, যা বডিতে অনেকক্ষন থাকে এবং সারাদিন এনার্জির যোগান দেয়। প্রতিদিন সকালে ১চা চামচ মধু এমনি এমনি বা পানির সাথে মিশিয়ে আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
২) সর্দি-কাশি, ঠান্ডা কমাতে মধু
ছোট বেলায় আমাদের যখন সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা লাগতো, তখন মা মধু ও লেবু মেশানো চা খেতে দিত। এখন এর সায়েন্টিফিক প্রমাণও আছে, যে মধু পারে আপনার শিশুর জ্বর, সর্দি-কাশি, ঠান্ডা সকল প্রকার অসুখকে দূরে রাখতে। আপনার শিশুর জ্বর, সর্দি-কাশি, ঠান্ডা এরকম কিছু হলে, রাতে ঘুমানোর আগে ১ গ্লাস গরম দুধে বা পানিতে মধু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। অথবা ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে তুলসি পাতার রস বা লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ালে বিশেষ উপকার পেতে পারেন।
৩) ক্ষত নিরাময় করতে মধু
বাচ্চারাই তো খেলাধুলা করবে। আর খেলার সময় চোট বা ব্যথা পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। আপনার শিশুর শরীরে কোথাও কেটে গেলে বা ছিলে গেলে, ওই জায়গায় মধু অ্যাপ্লাই করে দিতে পারেন। মধুর অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল প্রোপার্টি দ্রুত ক্ষত সারিয়ে দেয়। অবশ্যই এটা খেয়াল রাখা প্রয়োজন যেন বাচ্চার বয়স ১ বছরের বেশি হয়। এর চেয়ে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মধু ব্যবহার না করাই ভালো।
৪) ত্বকের যত্নে মধু
শীতে আমাদের সবার স্কিনই অনেক রাফ অ্যান্ড ড্রাই হয়ে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি পরিমাণে হয়। তাই আপনার বেবির স্কিনকে সফট ও হেলদি করতে গোসলের আগে আমন্ড অয়েল এর সাথে মধু মিশিয়ে ম্যাসাজ করে নিতে পারেন। আমন্ড ত্বককে করে মসৃণ আর মধু ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এতে ত্বক থাকে সফট আর ময়েশ্চারাইজড।
প্রয়োজনীয় যে নিউট্রিশন সার্ভ করে
আমরা জানি, মধুতে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোস ছাড়াও আছে উপকারী ভিটামিনস অ্যান্ড মিনারেলস, যা আপনার শিশুর গ্রোথকে ত্বরান্বিত করে। আপনার শিশুর ডেইলি ফুডের সাথে মধু অ্যাড করুন। তবে মাথায় রাখুন নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস না থাকলে একটু একটু করে তার খাবারের মধ্যে মধু যোগ করুন। প্রতিদিনের খাবার যেমন সিরিয়াল বা ওটমিল বা ফলের সাথে মিশিয়ে দিতে পারেন মধু। আপনার বাচ্চার সুস্বাস্থ্যের জন্য ১ চা চামচ করে মধুও উপকারী। প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে বিভিন্নভাবে মধু অ্যাড করতে পারেন। যেমনঃ
• ব্রেডের সাথে ১চা চামচ মধু স্প্রেড করে
• কর্ণফ্লেক্স ও দুধের সাথে ১চা চামচ মধু মিক্স করে
• প্যানকেকের উপরে ১চা চামচ মধু স্প্রেড করে
এতে খাবারের টেস্ট বৃদ্ধি পাবে। আবার আপনার শিশু হেলদিও থাকবে। দেখলেনতো এক মধুর-ই কত গুন! তাই আপনার বাচ্চার নিয়মিত মধু খাওায়ার অভ্যাস গরে তুলুন। কিন্তু মধু কেনার সময় ভালো ব্র্যান্ড বা ভালো মানের মধু নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, বাজারে খোলা মধুতে বিভিন্ন ধরনের ধুলাবালি থাকতে পারে অথবা তা হতে পারে আনহাইজেনিক। তাই খোলা বা আনহাইজেনিক মধু কেনা থেকে বিরত থাকুন এবং বেছে নিন ভালো ব্র্যান্ডের মধু।
আপনি চাইলে ভালো ব্র্যান্ডের মধু কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে।
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক