ছেলেটার জন্মের সাথে সাথে যেন আমার ও নতুন করে জন্ম হলো। প্রথমবার মা হলাম। সে এক রোলার কোস্টার রাইড আমার জন্য! একজন এই পরামর্শ দিচ্ছে, আরেকজন সেই বাণী দিচ্ছে। ছেলেটার স্কিনটাও সেনসিটিভ। কিছুই লাগানো যায় না। স্কিনে র্যাশের মতো বের হয়ে গেলো। আমার স্কুল ফ্রেন্ড ডার্মাটোলজিস্ট। ওর কাছে ছেলেকে নিয়ে গেলাম দেখাতে। র্যাশ দূর করার মেডিসিন আর অয়েন্টমেন্ট দিল। আর ক্লোজেটের ভিতর থেকে অ্যাভিনো টুয়েন্টি ফোর আওয়ার ময়েশ্চার লোশনটা দিয়ে বললো, বাবুর গায়ে এইটা ইউজ করতে। তারপর থেকে ছেলের জন্য এই লোশনটাই ব্যবহার করছি। আর ওর সাথে সাথে আমিও আমার স্কিনে এটাই ইউজ করছি। সেনসিটিভ ড্রাই স্কিনের জন্য one of the best products এটি।
অ্যাভিনো ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কিনকেয়ার এবং হেয়ারকেয়ার ব্র্যান্ড, যার ফাউন্ডার আমেরিকান বেইজড ইনভেস্টর ও ফিলানথ্রপিস্ট দু’ভাই অ্যালবার্ট এবং সিডনী মুশার। এবং তারা প্রাকৃতিক উপাদানের উপর বেইজ করে তাদের প্রোডাক্টগুলো তৈরি করে থাকে। Avena Sativa হচ্ছে ওটসের ল্যাটিন নাম, যেখান থেকে মূলত অ্যাভিনো ব্র্যান্ডটার নাম আসে।
[picture]
প্যাকেজিং
৩৫৪ এম এল এর অফ হোয়াইট রঙের বোতলে, আকাশি রঙের পাম্প ডিজাইনড মুখে আসে লোশনটি, মেড ইন ক্যানাডা। এতে লেখা আছে যে এটা ফ্র্যাগরেন্স ফ্রি, প্যারাবেন ফ্রি, প্ল্যাথালেট ফ্রি, এবং ডিমেথিকোন স্কিন প্রোটেক্ট্যান্ট সমৃদ্ধ, যাতে ন্যাচারাল কলোইডাল ওটমিল আছে। এবং একজেমাসহ ড্রাই স্কিনের জন্য এই ফর্মুলাটা ভীষণ উপযোগী। প্যাকেজিং এ বলা আছে যে এটা ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত স্কিনকে ময়েশ্চারাইজড রাখে।
কনসিস্টেন্সি
কনসিস্টেন্সি বেশ থিক। যার জন্য অল্প একটু লোশন নিয়ে আমার বেবির সারা গায়ে ম্যাসাজ করলে সারাদিন স্কিন ময়েশ্চারাইজড থাকে। আমি এখন রাতে ঘুমানোর আগে একবার ছেলেকে লোশন লাগিয়ে দেই, আর বেলা ১১টায় গোসলের পরপর।
প্রোডাক্টটির যে যে দিকগুলো ভালো লেগেছে –
- ফ্র্যাগরেন্স ফ্রি। আমি পারসোনালি নিজের স্কিনের জন্যই সুগন্ধিযুক্ত প্রোডাক্ট পছন্দ করি না। আর এটা তো আমার বাচ্চার স্কিন। এই লোশনে কোন সুগন্ধি দেয়া নেই যেটা আমার ভীষণ পছন্দ হবার একটি কারণ।
- প্যারাবেন ফ্রি। পত্রপত্রিকা আর ফেসবুকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে নিশ্চয়ই জানেনই যে প্যারাবেন স্কিনের জন্য কতটা হার্মফুল। বাচ্চাদের তুলতুলে স্কিনে নিশ্চয়ই প্যারাবেন সমৃদ্ধ কোন কিছু আপনি ব্যবহার করতে চাইবেন না।
- অ্যালকোহল ফ্রি।
- স্টেরয়েড ফ্রি।
- প্ল্যাথালেট ফ্রি। এইটাও লং টার্মে স্কিনে ইউজড হলে বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে। এই লোশনে সেটা নেই।
- ড্রাই স্কিনের জন্য অনেক বেশি ময়েশ্চারাইজিং, বেশ থিক ফর্মুলা লোশনটার।
- নন-গ্রীজি ফর্মুলা, মাখলে চটচটে হয়ে থাকে না।
- দ্রুত স্কিনে অ্যাবসর্ব করে নেয়।
- বাচ্চাদের স্কিনে একবার লাগালে প্রায় সারাদিনই রি-অ্যাপ্লিকেশনের প্রয়োজন হয় না। তবে আমার স্কিনে লাগালে যেহেতু আমি অ্যাডাল্ট, এসিতে থাকা হয় অলমোস্ট সারাদিন, এবং সেই সাথে সারাদিনে অনেকবার হাত ধোয়া হয়, আমাকে রি অ্যাপ্লাই করতে হয়।
- সেনসিটিভ স্কিনের জন্য খুবই ভালো একটা প্রোডাক্ট।
- মাল্টিপারপাস এবিলিটি। আমার নিজের স্কিন ও খুব সেনসিটিভ, আমাকে আমার জন্য আলাদা করে লোশন কিনতে হয় না। আমি আর আমার ছেলে একই লোশন ব্যবহার করি। মাঝেমাঝে আমার নারকেল তেল শেষ হয়ে গেলে এইটা দিয়ে মেকআপ ও তুলে ফেলি, কোন অসুবিধে হয় না।
প্রোডাক্টটির যে যে দিকগুলো ভালো লাগেনি –
- অনেকের কাছে প্রাইস টা বেশি মনে হতে পারে।
- প্রোডাক্টটি বাংলাদেশে খুব কম জায়গাতেই পাওয়া যায়।
মূল্য, রেটিং এবং প্রাপ্তিস্থান
বাংলাদেশি টাকায় ৩৫৪ এম এল এর বোতলের দাম ১,৬০০/- টাকা এবং ৫৩২ এমএল-এর দাম ১৯৫০/- টাকা।
আমি একে ব্যক্তিগতভাবে রেটিং দিবো ৯/১০।
আমার ডার্মাটোলজিস্ট সেই ফ্রেন্ডের দেয়া সেই বোতলটি শেষ হবার পর থেকে আমি যমুনা ফিউচার পার্কের শপ.সাজগোজ.কম থেকে এই লোশনটা কিনি। তাদের যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার-এর শাখায়ও এটা পাওয়া যায়। তাছাড়াও আরো কিছু অনলাইন শপ এবং কিছু বড় ফার্মেসিতে এখন এই প্রোডাক্ট-টা পাওয়া যাচ্ছে।
আমার ছেলের স্কিন যেরকম সেনসিটিভ এবং সেই সাথে ড্রাই, আমি অবশ্যই বারবার এই লোশনটাই কিনবো।
ছবি – কৌশিক ইকবাল