ত্বকের যত্নে চাই এক্সপার্ট পরামর্শ! এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে সাজগোজ সম্প্রতি আড্ডায় মেতেছিল রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচির সাথে। তাহলে আর দেরি কেন? শীতে ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক, বিন্দিয়া’স এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ার বাই শারমিন কচির কর্ণধারের কাছ থেকে।
সাজগোজ: “কেমন আছেন শারমিন আপু?”
শারমিন কচি: ভালো আছি। যদিও গতকাল থেকে জ্বর এসেছে, গলাটাও ব্যথা। তবুও ভালো আছি।“
সাজগোজ: “ আপনার শরীর ভালো না, তবুও বলছেন – ভালো আছি, এই পজিটিভিটি টা কোথা থেকে আসে?”
শারমিন কচি: (হাসি) আমি ভীষণ পজিটিভ একজন মানুষ। চেষ্টা করি করি যেকোন পরিস্থিতিকেই হাসিমুখে সামলিয়ে উঠতে।
সাজগোজ: “এ বছর তো ব্যাপক শীত পড়লো, এই শীতে স্কিনের জন্য কোন কোন দিকগুলোর দিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে বলে আপনি মনে করেন?”
[picture]
শারমিন কচি: সবার আগে নিজের স্কিনকে পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কারণ মেকআপ মানুষের সৌন্দর্যকে কিছুটা পলিশড করে তোলে। কিন্তু যদি স্কিনের যত্ন ঠিকমত না নেয়া হয়, তাহলে কিন্তু মেকআপ ও স্কিনে ঠিকমত বসে না। নিজের স্কিন টাইপ অনুযায়ী ভালো মানের ফেসওয়াশ এবং ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে হবে। এবং সানট্যান থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
সাজগোজ: “শীতে অনেকেরই অভিযোগ থাকে যে স্কিনটা মলিন দেখাচ্ছে, নির্জীব দেখাচ্ছে, অনুজ্জ্বল দেখাচ্ছে। এটা কেন হয়?”
শারমিন কচি: আমাদের ত্বকের উপরিভাগে ডেডসেলস তৈরি হয়, যা নিয়মিত স্ক্রাবিং এর মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। এই ডেডসেলসের কারণেই মূলত স্কিনটাকে নির্জীব আর মলিন দেখায়। নিয়মিত স্ক্রাবিং আর ডীপ ক্লেঞ্জিং এর মাধ্যমে কিন্তু এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সুজি বা চালের গুঁড়ো, চিনি এগুলো খুব ভালো প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করে। আর ডীপ ক্লেঞ্জিং এর জন্য কোকোনাট মিল্ক ব্যবহার করতে পারেন। একটা কটন প্যাড কোকোনাট মিল্কে ভিজিয়ে পুরো মুখ মুছে নিলেই কিন্তু ডীপ ক্লেঞ্জিং হয়ে যাবে এবং স্কিন ওভারড্রাই ও হবে না।
সাজগোজ: “ আমরা তো সবসময় মুখের স্কিনের দিকে বেশি গুরুত্ব দেই, হাত পায়ের যত্ন কম নেই। শীতকালে সহজে কিভাবে সহজে হাত আর পায়ের যত্ন নেয়া যায়?”
শারমিন কচি: ঘরে বসে প্রতি সপ্তাহে একবার, আর মাসে অন্ততপক্ষে একবার পার্লারে গিয়ে ম্যানিকিউর আর পেডিকিউরটা করানো উচিৎ। আর অবশ্যই ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। কোকোনাট মিল্কের সাহায্যে সহজেই ফুল বডির ডীপ ময়েশ্চারাইজেশন সম্ভব। ডেড সেলের স্তরে ভেতর গিয়ে ত্বককে কোমল মোলায়েম করতে পারে এমন লোশন ব্যবহার করা উচিত। চাইলে প্যাক বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। টমেটোর রস, কোকোনাট মিল্ক আর একটুখানি চন্দন গুঁড়ো কিন্তু চমৎকার ব্রাইটেনিং প্যাক হিসেবে কাজ করে। রোদে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন, ছাতা ব্যবহার করবেন আর ফুল স্লীভ জামা, পা ঢাকা জুতা ব্যবহার করবেন। তাহলেই কিন্তু এই শীতেও হাত পা উজ্জ্বল রাখা সম্ভব।
সাজগোজ: “ এবার যে শীত পড়লো, চুলের অবস্থা তো একেবারে খারাপ অনেকেরই। এ সময় চুলের যত্নে কি করা উচিৎ?”
শারমিন কচি: নিয়মিত একদিন অন্তর হট অয়েল ম্যাসাজ, অবশ্যই নারকেল তেল দিয়ে। সাথে সামান্য ক্যাস্টর অয়েল মিক্স করতে পারেন। আর সপ্তাহে একদিন প্রোটিন প্যাক ব্যবহার করুন। একটা ডিম, আধবাটি টকদই, ২ চা চামচ মেথি দিয়ে একটা প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। আর পার্লারে সম্ভব হলে প্রতি ১৫ দিনে একবার, না হলেও মাসে অন্ততপক্ষে একবার হেয়ার ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন। আর সেই সাথে নিয়মিত ২-৩ লিটার পানি পান, আধঘণ্টা হাঁটা আর ব্যালেন্সড ডায়েট খুব জরুরী।
“সাজগোজের বন্ধুদের সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।“
সাজগোজকেও ধন্যবাদ।