জ্বর বা ব্যথা উপশমের জন্য আমাদের দেশের সর্বাধিক প্রচলিত যে ওষুধ তার নাম প্যারাসিটামল। বিভিন্ন ফারমাসিউটিক্যাল এটিকে বিভিন্নভাবে নামকরণ করে। কেউ নাপা, কেউবা এইস আবার কেউ পাইরালজিন। জ্বর ও ব্যথার ওষুধ প্যারাসিটামল সম্পর্কে আমাদের জানার পরিধি আরও কিছুটা বাড়ালে সবার উপকার হবে।
প্যারাসিটামল মাথাব্যথা, জ্বর, মাইগ্রেন, দাঁতে ব্যথা, মাসেল পেইনের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু যদি অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করা হয় তাহলে লিভারের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দেখা দেয়। প্যারাসিটামল মূলত কাজ করে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন তৈরীতে বাঁধা দানের মাধ্যমে এবং এটি শরীর ঠাণ্ডা করে।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সব ওষুধে থাকে তাই বলে তো ওষুধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকা যায় না। তাই প্রয়োজনে পরিমিত পরিমাণে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্যারাসিটামলের ডোজ ৫০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট একটি, কখনো প্রয়োজনে ২ টি। ২৪ ঘন্টায় ৪ গ্রাম বা ৪০০০ মিলিগ্রামের বেশি খাওয়া যাবে না।
শিশুদের ক্ষেত্রে বয়স এবং ওজন অনুযায়ী প্যারাসিটামল সিরাপ দিতে হবে। ৪ গ্রাম হচ্ছে সর্বোচ্চ মাত্রা। ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন পরামর্শ দিয়েছে যদি শিশুর জ্বর ১০১.৩ ফারেনহাইটের বেশি থাকে তবেই শুধু প্যারাসিটামলের সাহায্য নিবেন। ২০১০ সাল পর্যন্ত এটা ভাবা হতো যে গর্ভবতী মায়েদের জন্য প্যারাসিটামল নিরাপদ। সাম্প্রতিককালে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগস প্যারাসিটামলের সাথে কোডিন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে। কারণ এতে মৃত্যুর আশংকা আরও বেড়ে যায়।
কিছু scientist রিপোর্ট করেছেন প্যারাসিটামলের সাথে ক্যাফেইন গ্রহণ শরীরে বিষাক্ততার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে লিভার ড্যামেজ করে দেয়। প্যারাসিটামল বা ব্যথানাশক যথাসম্ভব ব্যবহার না করা উচিত যেসব ক্ষেত্রে তা হলো-
– গর্ভাবস্থা
– শিশুকে বুকের দুধ দেন এমন মায়েরা
– রক্ত পাতলা করার ওষুধ খেতে থাকলে
– গ্যাস্ট্রিক বা আলসার থাকলে
ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করা উচিত। আমাদের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব অনেকটা আমাদের ওপর। এজন্য স্বনির্বাচিত ওষুধ গ্রহণে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
লিখেছেনঃ রোজেন