গরমে অনেকেই ক্রিম ব্যবহার করতে চায় না, বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী যারা! আবার শুষ্ক ত্বকে গরমে এমন কিছু দরকার যা ত্বককে হেভি ফিল দেয় না আর ত্বকে যথেষ্ট পরিমাণে পানির অভাব পূরণ করবে। জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার গরমে স্কিনকে হাইড্রেশন প্রোভাইড করে থাকে, আবার অয়েলি স্কিনে ফেইসকে আরও অয়েলি না করে হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড করে রাখে। আবার স্কিনকে গরমে রিফ্রেশিং ফিল দেয়। তবে চলুন আজকে জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই, সেই সাথে কিছু জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার সম্পর্কেও জানাবো।
জেল ফর্মে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের উপকারিতা
১) অয়েলি স্কিন হোক বা ড্রাই স্কিন হোক, তেলতেলেভাব কারোরই পছন্দ না। বেশিরভাগ জেল ক্রিম হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, পানি এবং গ্লিসারিন দিয়ে তৈরি হয়। যার জন্য লাইট টেক্সচারের হওয়ায় গরমের সময় জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকে চিটচিটে ফিল হয় না।
২) ফেইস থেকে যখন হেভি ক্রিম ক্লিন হয় তখন ফেইস কতটা হালকা আর রিফ্রেশিং লাগে, বলুন তো? জেল ময়েশ্চারাইজার ওয়াটার বেইজড হওয়ায় ফেইস একদম হালকা লাগে, মনে হয় না ফেইসে কিছু অ্যাপ্লাই করা হয়েছে। আর কুলিং ইফেক্ট থাকায় গরমে খুব রেফ্রেশিং ফিল হয়।
৩) ডিহাইড্রেটেড স্কিনে পানির প্রয়োজন এবং জেল ময়েশ্চারাইজার ওয়াটার বেইজড হওয়ায় ত্বকে হাইড্রেশন প্রোভাইড করে থাকে। আর হায়ালুরোনিক অ্যাসিড এমন ভাবেই তৈরি করা হয় যা স্কিনে পানির পরিমাণ লং টার্মের জন্য ধরে রাখে অর্থাৎ হাইড্রেটেড রাখে। ফলে স্কিন ন্যাচারালি সুন্দর দেখায়।
৪) রেগুলার জেল ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার স্কিনকে তারুণ্যময় করে তোলে কেননা এটা ত্বকের ময়েশ্চার লেভেল ঠিক রাখে। এতে ফাইন লাইনস, চোখের নিচের ভাঁজ কমে আসে।
৫) জেল ময়েশ্চারাইজার লাইট ওয়েট হওয়ার ফলে সহজেই স্কিন শোষণ করে নেয় এবং দ্রুত কাজ শুরু করে দিতে পারে।
৬) মেকআপ করার আগে নিখুঁত একটি বেইজ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন জেল ময়েশ্চারাইজার। তাহলে মেকআপ অয়েলি হওয়ার চান্স থাকবে না।
৭) এটা অয়েলি স্কিনকে একদমই অয়েলি করে না, আবার ড্রাই স্কিনকে হাইড্রেশন প্রোভাইড করে থাকে। সব সিজনেই বেসিক স্কিন কেয়ারে ময়েশ্চারাইজার রাখাটা মাস্ট। সামারে ব্যবহার করার জন্য জেল ময়েশ্চারাইজার খুব ভালো একটি চয়েস।
কাদের জন্য জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার?
জেল ময়েশ্চারাইজার সব টাইপের স্কিনের জন্যই স্যুইটেবল। কিন্তু অয়েলি স্কিনের জন্য জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার বেশ কার্যকরী। যদি ভেবে থাকেন সামারে আপনার অয়েলি স্কিনে কোনো রকম ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার দরকার নেই, তাহলে এই ধারণাটি একদম ভুল! তেল আর ময়েশ্চার এক জিনিস না। স্কিন ময়েশ্চারাইজড না থাকলে অয়েল গ্ল্যান্ড আরও অয়েল প্রোডিউস করে। ফলে দেখা দিতে পারে ব্রণ। জেল ময়েশ্চারাইজার পোরস ক্লগ করে না, তেলতেলে ভাবও থাকে না। তাহলে কি ড্রাই স্কিনের জন্য জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজারের দরকার নেই? ড্রাই স্কিনের জন্য একটি ইম্পরট্যান্ট এলিমেন্ট হচ্ছে হাইড্রেশন। জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার ড্রাই স্কিনকে হাইড্রেট রাখে কোনোরকম হেভি ফিল ছাড়াই।
কয়েকটি জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজার নিয়ে ছোট্ট রিভিউ শেয়ার করছি আপনাদের সাথে। আশা করি এতে আপনারা বুঝতে পারবেন যে কোন ময়েশ্চারাইজারটি আপনার জন্য পারফেক্ট চয়েজ হবে।
Neutrogena Hydro Boost Water Gel
যখন মনে হবে আপনার স্কিনের আপার ব্যারিয়ার দুর্বল হয়ে গেছে, স্কিনে পানি শূন্যতা দেখা যাচ্ছে, ফেইস দেখতে অনেক ক্লান্ত লাগছে, তখন আপনার স্কিনের হাইড্রেশনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন এই ময়েশ্চারাইজারটি।
১। স্কিনকে হাইড্রেট করার জন্য প্রধান উপাদান হচ্ছে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, যা স্কিনকে ইনস্ট্যান্ট হাইড্রেশন প্রোভাইড করে থাকে।
২। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড থাকায় স্কিন লং টার্মের জন্য সফট ও হাইড্রেটেড থাকে।
৩। স্কিনে খুব সুন্দরভাবে মানিয়ে যায়, স্কিনের টেক্সচার স্মুথ রাখে।
৪। অয়েল ফ্রি হওয়ায় স্কিনে পোর ব্লক করে না।
৫। লাইট ফর্মুলা তাই স্কিনে দ্রুত শোষণ করে নেয়।
Simple Water Boost Hydrating Gel Cream
ড্রাই ডিহাইড্রেটেড স্কিনের জন্য আরেকটি ভালো জেল ক্রিম হল সিম্পল ওয়াটার বুস্ট হাইড্রেটিং জেল ক্রিম। এই জেল ক্রিমটিতে কোনো হার্শ ক্যামিকেল, আর্টিফিশিয়াল কালার বা পারফিউম ব্যবহার করা হয় নি।
১। সিম্পল ওয়াটার বুস্ট হাইড্রেটিং জেল ক্রিমটি ডিহাইড্রেটেড স্কিনকে পুনরায় হাইড্রেট করে, সাথে স্কিনকে কোমল ও সতেজ করে।
২। লং লাস্টিং হাইড্রেশন প্রোভাইড করে স্কিনের ড্রাইনেস কমিয়ে আনে।
৩। স্কিনকে রিফ্রেশ রাখে এবং স্মুথ করে।
৪। স্কিনকে চিটচিটে বা স্টিকি করে না।
৫। প্ল্যান্ট এক্সট্র্যাক্ট এবং প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় এটা স্কিনের জন্য বেশ ভালো।
The Body Shop Seaweed Oil Control Gel Cream
যদি আপনার স্কিন সবসময়ই এক্সেস অয়েলি থাকে আর ফেইস থেকে এই তৈলাক্তভাব দূর করতে চান, তাহলে দি বডি শপ সি উইড অয়েল কন্ট্রোল জেল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এই জেল ক্রিমটি অয়েলি টু কম্বিনেশন স্কিনের জন্য উপযুক্ত।
১। এই জেল ক্রিমটি স্কিনের অয়েল ব্যালেন্স করে স্কিনকে রিফ্রেশড ফিলিং দেয়।
২। আয়ারল্যান্ডের সামুদ্রিক শৈবাল থেকে প্রচুর পরিমাণের মিনারেলস এতে ফর্মুলেটেড করা হয়েছে, যা স্কিনকে হাইড্রেট করতে দারুণ কাজ করে।
৩। স্কিনে ম্যাটিফাইং ফিনিশিং দিয়ে থাকে, ফলে অয়েলি স্কিনে কোনো রকম তেলতেলে ভাব থাকে না।
Nature Republic Vitapair C Gel Cream
স্কিনকে হাইড্রেট করার পাশাপাশি স্কিনকে ব্রাইট করতে চাইলে এই জেল ক্রিমটি উপযুক্ত। কারণ এই ক্রিমটিতে ২৬.৪% লেবুর নির্যাস বা ভিটামিন সি রয়েছে।
১। ভিটামিন সি থাকার ফলে স্কিনটোন উজ্জ্বল হয়।
২। Tranexamic Acid ও নিয়াসিনামাইড থাকার কারণে হাইপারপিগমেনটেশন কমে আসে, ফলে স্কিন ক্লিয়ার ও ব্রাইট দেখায়।
৩। সিকা এক্সট্র্যাক্ট এবং হায়ালুরোনিক অ্যাসিড থাকায় স্কিন হাইড্রেট থাকে দীর্ঘ সময় ধরে।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে স্কিন কেয়ারেও পরিবর্তন আসে। সিজন, ত্বকের ধরন, বয়স সবকিছু বুঝে তারপর প্রোডাক্ট সিলেক্ট করাটাই বেটার। সাজগোজে জেল বেইজড ময়েশ্চারাইজারগুলো পেয়ে যাবেন। অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে আমার সবসময়ই ভরসা শপ.সাজগোজ.কম। অনলাইনে অর্ডার করে ঘরে বসেই প্রোডাক্ট হাতে পেয়ে যায়। তাছাড়া সাসাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
তাহলে আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ছবি- সাজগোজ