এই প্রচণ্ড গরমে আমরা যারা অয়েলি স্কিনের অধিকারী/অধিকারিণী, তাদের চেয়ে বাজে অবস্থা কি আর কারও আছে? সারাদিনই মনে হয় স্কিনের প্রতিটা পোর দিয়ে তেল বের হচ্ছে এবং বাইরের ধুলা ময়লা সব টেনে স্কিনের উপরে একটা লেয়ার তৈরি করছে! কী একটা গা ঘিনঘিনে অবস্থা, তাই না? মুখ যতবারই ফেইস ওয়াশ দিয়ে ক্লিন করি না কেন, ১-২ ঘণ্টা পরই আবার যেই তেলের খনি সেই তেলের খনি!! তাই খুঁজছিলাম একটা ভালো অয়েল কনট্রোলিং ডিপ ক্লিঞ্জিং ফেইস ওয়াশ! কিন্তু বাজারের সব অয়েলি স্কিনের ফেইস ওয়াশ আমার আগেই ট্রাই করা! নতুন কী কিনব বুঝতে পারছিলাম না! এরপর সাজগোজ গ্রুপেরই এক মেম্বার আপু সাজেস্ট করলো এই নতুন বায়োরে ডিপ পোর ক্লিনজার প্রোডাক্টটি! সেটা আরও মোটামুটি ৪০-৪৫ দিন আগের ঘটনা!
ভাবলাম, এই বায়োরে ডিপ পোর চারকোল ক্লিনজার (BIORE Deep Pore Charcoal Cleanser)-টা যেহেতু এখনও অনেকেই ট্রাই করে নি এবং এটা সম্পর্কে সবাই তেমন কিছু জানেও না, লিখেই ফেলি একটা রিভিউ।
আগে বায়োরে ডিপ পোর ক্লিনজার প্রোডাক্টটির দামটা জানিয়ে দেই?
২০০ মিলি ফেইস ওয়াশ-এর প্রাইস ৯০০/- টাকা। যা বডিশপ বা নিউট্রজিনার কমপ্যারিজন-এ বেশ সাশ্রয়ী মনে হয়েছে আমার কাছে। আমি যখন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অর্ডার দিয়েছি এটা তখন এটার উপরে কোনও সেল ছিল না। তাই সেল চলাকালীন সময়ে যারা এটা কিনে ফেলতে পারবেন তারা আরও সেভ করবেন! সেল-এ এখন ৭৯৯/- টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এবার আসি বায়োরে ডিপ পোর ক্লিনজার প্রোডাক্টটির প্যাকেজিং-এ
বোতলটা দেখতে ডার্ক মনে হলেও আসলে এটা একদম স্বচ্ছ। ভেতরের ফেইস ওয়াশ-টা আসলে ডার্ক ব্ল্যাক টাইপ। লিকুইড-এর ভেতরে ছোট ছোট চারকোলের দানা দেখা যায় বলে আমার ধারণা। এটা পাম্প বোতল হওয়ায় যে কোনোভাবে ব্যাগে ক্যারি করা ইজি। প্রোডাক্টের গায়েই এর ইনগ্রেডিয়েন্টস নিয়ে ডিটেইলস-এ লেখা আছে।
বায়োরে ডিপ পোর ক্লিনজার ইউজ করে কেমন লাগলো?
ফেইস ওয়াশ-টা হাতে নেয়ার পর আরও স্বচ্ছ মনে হয়। এটায় বেশ ভালোরকমের মেনথলের একটা রিফ্রেশিং স্মেল পাওয়া যায়। অনেকে এধরনের স্মেল পছন্দ করে না, কিন্তু আমার এই কুলিং স্মেল ভালোই লাগে।
কিন্তু এটা নরমাল সোপ বা ফোমিং ফেইস ওয়াশ-এর মতো অনেকখানি ফেনা তৈরি করে না। সামান্য বাবলেই স্কিন বেশ ভালোভাবে ক্লিন হয়ে যায়। তাই অযথা অনেকখানি ফেইস ওয়াশ নিয়ে হাত ভর্তি ফেনা তৈরি করার চেষ্টা করে লাভ নেই।
আমি ফেইস ওয়াশ ফোম দিয়ে ১ মিনিট মুখ হালকা হাতে ম্যাসাজ করি, তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলি। ধোয়ার পর মুখ খুব স্কুইকি ক্লিন মনে হয়! আর আমার সুপার অয়েলি স্কিনেও ৪-৫ ঘণ্টা একদম ম্যাট থাকে। এই প্রচণ্ড গরমে মুখ ধোঁয়ার পর যে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাবটা থাকে সেটাও খুবই এঞ্জয়েবল! কিন্তু আমার মনে হয় যেহেতু এই ফেইস ওয়াশ-টা চারকোল দিয়ে স্কিনের অয়েল একদম পরিস্কার করে ফেলে এটা হয়ত ড্রাই বা ডিহাইড্রেটেড স্কিনে তেমন ভালো কাজ করবে না!
যাদের স্কিন আমার মতো অনেক বেশি অয়েলি তাদের জন্য এই ফেইস ওয়াশ-টা বেস্ট হবে। এটা ইউজ করার পর থেকে আমার ছোট ছোট ব্রেকআউট আর হোয়াইটহেড প্রবলেম অনেক কমে গেছে তাই সেদিক থেকেও আমি একে দশে দশ মার্ক দেব!
ও আরেকটা কথা! এটা কিন্তু একটা নরমাল ফেইস ওয়াশ, তাই মেকআপ রিমুভার কিন্তু আপনার আলাদাভাবে ইউজ করতে হবে! ফেইস ওয়াশ দিয়েই মেকআপ-টেকআপ সব পরিস্কার হবে ভাবলে ভুল করবেন।
তাই সব মিলিয়ে-
১. এটা খুবই এফিশিয়েন্ট একটা ডিপ ক্লিনজার, যা বেসিকালি স্কিন খুব ভালোভাবে ক্লিন করে, পোরের ভেতরের অয়েল শুষে বের করে দেয়। এর ফলে স্কিন ৪-৫ ঘণ্টা ইজিলি অয়েল ফ্রি থাকে।
২. ছোট ছোট ব্রেকআউট কনট্রোল করে।
৩. ঠাণ্ডা একটা সেনসেশন দেয় যা গরমে খুবই সুদিং!
৪. দামের তুলনায় পরিমাণে অনেক বেশি ফেইস ওয়াশ পাওয়া যায়, তাই ভ্যালু ফর মানি!
কিন্তু, এটা অয়েলি একনে প্রন স্কিনের জন্য যতটা ভালো হবে, স্কিন খুব ড্রাই আর ম্যাচিওর হলে হয়ত এতো ভালো রেজাল্ট আপনি নাও পেতে পারেন। এটাই আমার হিসাব বলে।
তো এই ছিল আমার ইউজ করা লেটেস্ট বাজেট ফ্রেন্ডলি অয়েল কনট্রোলিং ফেইস ওয়াশ-এর রিভিউ… ভবিষ্যতে হয়ত এধরনের বাজেট ফ্রেন্ডলি প্রোডাক্ট নিয়ে আরও লিখব। আজ এটুকুই।।
ছবি- সাজগোজ