বৌয়ের বিয়ের সাজ, অন্তত তিনখানা তো হবেই তাই না? গায়ে হলুদ, বিয়ে আর বৌভাত, এই তিন মূল অনুষ্ঠান নিয়েই বাঙ্গালি বিয়ে। কারো কারো পানচিনি বা বাগদানের মতো আয়োজনগুলোও আলাদা করে হয়। সেক্ষেত্রে উপলক্ষ আরো বাড়ে। বিয়ে এমনই এক উৎসব যা নিয়ে একদম কিচ্ছুটি না ভাবা মেয়ের মনেও ভাবনা খেলে যাবে, কেমন দেখাবে তাকে বিয়েতে!
[picture]
চলছে শীতকাল। বিয়ের ভরা মৌসুম। নিজের না হলেও আত্মীয় বা বন্ধু কারো বিয়ে লেগে যেতেই পারে এইবার। প্রস্থুতি নিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন, তাও হতে পারে। হবু কনে, তা সে নিজে হন বা অন্য কেউই হোক, তার সাজ নিয়ে কপালে ভাঁজ ফেলার আগে একটু ভেবে দেখুন দেখি আসলে কী চাচ্ছেন! তিনটা অনুষ্ঠানেই প্রায় এক রকম সাজ হবে, না তিনদিনে ভিন্ন ভিন্ন সাজে নজরকাড়া হবে বৌ? রঙের ক্ষেত্রে লাল বা গোলাপির ধারেকাছেই ঘোরাঘুরি করা হবে, নাকি আলাদা কোনো রঙেও হতে পারে একটা অনুষ্ঠানের সাজ? কনের ইচ্ছাই সবচেয়ে জরুরী। কিন্ত নানা জনের নানা মতের ভীড়ে কনে নিজের চাওয়া নিয়েই দ্বিধায় পড়তে পারে! লাল টুকটুকে বৌ, তার আগে হলদে-লাল হলুদ ছোঁয়ার সাজ, আর পরে গোলাপি বা রানি রঙের সাজে বৌভাত, এমন ছকবাঁধা কোনো সাজ মাথায় থাকলে ঝামেলা অনেক কম। কিন্তু যদি প্রতিটা অনুষ্ঠানে সাজে ভিন্নতা আনার ইচ্ছা থাকে, তবে খানিক গুছিয়ে প্রস্তুতি নেয়া চাই। ভিন্নতা আনতে গিয়ে সবকিছুর শেষে যদি বিয়ের অ্যালবাম দেখে সব সাজ একই রকম লাগে, তার চেয়ে দুঃখের আর কিছুই হবে না!
বিভিন্ন দিনের সাজে ভিন্নতা আনা নিয়েই আলাপ হবে আজকে। ভাবুন তো, সাজে ভিন্নতা বলতেই প্রথমে মাথায় কী আসে? পোশাকের কোন বিষয়টা তাকে অন্যটার থেকে আলাদা করে শুরুতেই? পোশাকের ধরণ, এটাই আসলে প্রথম কথা। এক অনুষ্টানে কনে লেহেঙ্গা পরলে এমনিতেই বড়সড় সাজবদল হয়ে যাচ্ছে। বিয়ের দিন পরার জন্য অনেকেই ভারী কাজের লেহেঙ্গা বেছে নিচ্ছে আজকাল। চাইলে সেটা করা যায়। আর তখন গায়ে হলুদ এবং বৌভাতের আয়োজনে কেবল দুই রঙের শাড়ি পরলেই তিনদিনের তিনটা সাজ বেশ আলাদা রকম হয়ে যাবে।
রঙ হচ্ছে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কথা সাজপোশাকের। কেমন রঙ বেছে নেয়া হচ্ছে কনের পোশাকে সেটা খেয়াল রাখা চাই। লাল রঙটা বরাবরই নতুন বৌয়ের দুর্বলতা, তাই বিয়ের শাড়ির সাথে অন্য অনুষ্ঠানের শাড়িও লালঘেঁষা হয়ে যায় অনেকের। সেটি করা চলবে না কিন্তু সাজে বৈচিত্র্য চাইলে! বিয়েতে লাল তো হলুদের সাজে সবুজ, সাথে হলুদ কিংবা গোলাপি রাখা যায়, আর তাহলে বৌভাতের সাজ হোক নীল বা সাদার মাঝে। আলাদা আলাদা দিনকে সম্পূর্ণ ভিন্ন রঙে মাথায় রাখুন। তাহলেই এক সাজের থেকে আরেক সাজ ভিন্ন হবে। একেকটা দিন একেক রূপে থাকবে নতুন বৌ।
মেকআপ আর যাই হোক না কেন, চেষ্টা করুন লিপকালারে বৈচিত্র্য রাখতে। সব কয়দিন হালকা রঙ বা ন্যুড কালার অথবা সবদিনই গাঢ় রঙ, সাজগুলোকে অনেকটাই এক করে দেবে। তাই একেকটি অনুষ্ঠানের সাজ সম্পূর্ণ করতে একেক রঙের লিপকালার বেছে নেয়া প্রয়োজন।
চুলের সাজ অর্থাৎ কেশবিন্যাস বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে যে কারো সাজের বেলায়। কেশবিন্যাসে সামান্য কৌশল করেই বদলে দেয়া যায় একজনের চেহারা। কনেরাও নিজেদের কেশসজ্জায় মনযোগী হন। গায়ে হলুদে এলোকেশী থাকলে বিয়েতে পরিপাটি খোঁপা চলুক, বৌভাতে একপাশে ঢেউ খেলানো চুল। সাজে অনেকটাই বৈচিত্র্য আসবে এতে।
ছবি – অদ্রিতা কায়সার
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব