মোটামুটি সব মেয়েদেরই মেকআপের প্রতি দুর্বলতা আছে। চোখে একটু কাজল দেওয়া, ঠোঁটে লিপস্টিক, গালে হালকা করে ব্লাশ লাগানো! একটু মেকআপ করলে মনটাও ভালো হয়ে যায়, তাই না? বিগেইনারদের জন্য মেকআপ প্রোডাক্ট সিলেক্ট করাটা একটু টাফ! কমপ্লিট মেকআপ লুকের জন্য কী কী প্রোডাক্টস না হলেই নয়, সেটা অনেকেই জানতে চান। রিজনেবল প্রাইসে মেকআপ আইটেমস খুঁজছেন? সাধ্যের মধ্যেই বেস্ট কোয়ালিটির অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্টস কোথায় পাওয়া যাবে, সেটাই ভাবছেন তাই তো? মেকআপের একদম বেসিক স্টেপস নিয়ে আজকের আর্টিকেল, সেই সাথে স্টুডেন্ট বাজেটে কোথায় পাবেন মেকআপ প্রোডাক্টস সেটাও জানা হয়ে যাবে।
মেকআপ করতে কী কী লাগে?
সেলফ মেকআপ স্কিল ডেভেলপ হয় প্র্যাকটিস করতে করতে। সেই সাথে প্রোডাক্ট সিলেকশন এবং সেগুলোর ঠিকঠাক ব্যবহারও খুবই ইম্পরট্যান্ট। অনেকের জন্যই বাজেট একটা বিগ ইস্যু, হাই এন্ড প্রোডাক্ট এফোর্ট করা সব সময় পসিবল হয় না। চিন্তার কিছু নেই, সাধ্যের মধ্যেই বেস্ট কোয়ালিটির অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্টের সাজেশন থাকছে আজ। মেকআপের আগে প্রথমেই স্কিন প্রিপেয়ার করে নিন, এই ধাপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই ভালোভাবে ফেইস ক্লিন করে নিন আপনার রেগুলার ফেইস ওয়াশ দিয়ে। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিন। দিনের বেলা হলে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট। এরপর সরাসরি মেকআপের স্টেপে চলে যান!
সাধ্যের মধ্যেই বেস্ট কোয়ালিটির অথেনটিক মেকআপ আইটেমস
১) মেকআপের প্রথম স্টেপে প্রাইমার
প্রাইমার মেকআপের বেইজকে ফ্ললেস ও লং লাস্টিং করে তুলতে অনেকটাই হেল্প করে। আপনার স্কিন যদি অয়েলি হয়, তাহলে ম্যাটিফাইয়িং প্রাইমার ইউজ করতে হবে। আর ওপেন পোরসের প্রবলেম থাকলে পোর মিনিমাইজিং প্রাইমার আপনার জন্য বেস্ট অপশন। Technic Smoothing Primer, Wet n Wild photofocus face primer matte বাজেট ফ্রেন্ডলি প্রাইমার চাইলে এগুলো ট্রাই করতে পারেন।
২) স্কিন টাইপ অনুযায়ী ফাউন্ডেশন
আপনার স্কিনের ধরন অনুযায়ী ম্যাট কিংবা ডিউয়ি ফাউন্ডেশন বেছে নিন। তবে শেইড যেন পারফেক্টলি ম্যাচ করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। ড্রাই স্কিনের জন্য ক্রিমি ফর্মুলার ফাউন্ডেশন সিলেক্ট করতে হবে যেটা আপনাকে ডিউয়ি ও ময়েশ্চারাইজড লুক দিবে। আর অয়েলি স্কিন হলে লাইট পিগমেন্টের ও ম্যাট লুক দেয় এমন ফাউন্ডেশন সিলেক্ট করা বেটার। অল টাইপ স্কিনের জন্য স্টুডেন্ট বাজেটে ভালো কোয়ালিটির ফাউন্ডেশন কিনতে চাইলে Street Wear Foundation, W7 12 Hour Hd Foundation ট্রাই করতে পারেন। আপনার স্কিন যদি অয়েলি হয় তাহলে L.A. Girl PRO Matte Foundation, Wet n Wild Photo Focus Matte Foundation বেশ ভালো অপশন।
৩) কনসিলার ও কালার কারেক্টর
বিগেনার লেভেলে কনসিলার ও কালার কারেক্টরের ব্যবহার নিয়ে তেমন একটা ধারণা থাকে না। ডার্ক সার্কেল হাইড করতে অরেঞ্জ কালার কারেক্টর, পিম্পল ও স্পটস হাইড করতে গ্রিন কালার কারেক্টর বেশ কাজে দেয়। আর চেহারার হাইলাইটেড এরিয়াতে স্কিনটোনের চেয়ে হালকা শেইডের কনসিলার ব্যবহার করুন, কনট্যুর এরিয়াতে ডিপ শেইডের কনসিলার ব্যবহার করুন। এতে ফেইসের ফিচারগুলো শার্প দেখাবে। রিজনেবল প্রাইসে L.A. Girl Pro Concealer ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট অপশন, অনেকগুলো শেইডস পেয়ে যাবেন। আপনার পছন্দ অনুযায়ী শেইড সিলেক্ট করে নিন।
৪) স্কিনটোন অনুযায়ী প্রেস পাউডার
ফ্ললেস ও স্মুথ বেইজ মেকআপ পেতে প্রেস পাউডার খুবই অ্যাসেনশিয়াল। এটি বেইজ মেকআপকে সেট করে, স্কিনের আনইভেনটোনকে ফিক্স করে পারেফক্ট লুক দেয়। রিসেন্টলি ট্রাই করলাম Nirvana Color Mattifying and Poreless Pressed Powder। ৩টা ডিফারেন্ট শেইডস আছে, আপনার স্কিনটোন অনুযায়ী যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। এটি স্কিনের ডিসকালারেশন ফিক্স করে, পোরসের অ্যাপেয়ারেন্স কমিয়ে মেকআপ লুককে ন্যাচারাল ফিনিশ দেয়। রেগুলার ইউজের জন্য পারফেক্ট, ফাউন্ডেশন ছাড়াও বেশ ভালো কভারেজ পাবেন এই প্রেস পাউডার দিয়ে।
৫) ব্রোঞ্জার, হাইলাইটার ও ব্লাশ
একটি প্যালেটে যদি ব্রোঞ্জার, হাইলাইটার ও ব্লাশ একইসাথে পাওয়া যায়, তাহলে তো ভালোই হয়, তাই না? বিগেনারদের জন্য তো বটে, সবার জন্যই এটা বেশ ভালো অপশন। বলছি Nirvana Color Face Palette – Windy Monsoon এর কথা! জানি, আমার মতো অনেকেই এই ফেইস প্যালেটটার ফ্যান। স্পেশালি এর হাইলাইটার শেইডস দু’টো আমার খুবই পছন্দের। ব্লাশের শেইডগুলো এশিয়ান স্কিনটোনে দারুণ মানিয়ে যায়। কনট্যুর করার জন্যও ডিফারেন্ট দু’টো শেইডস আছে। এক কথায়, অল ইন ওয়ান!
আই মেকআপের জন্য কী কী দরকার?
১) আইশ্যাডো প্যালেট
কমপ্লিট আইলুকের জন্য আইশ্যাডো প্যালেট না হলেই নয়। Nirvana Color Eye Shadow Palette – You Go Girl আর Nirvana Color Eye Shadow Palette – Touch Me Not, এই দু’টো প্যালেট কিন্তু মাস্ট হ্যাভ। রিজনেবল প্রাইসে বেস্ট আইশ্যাডো প্যালেট বলা যায়! ১০টি হাইলি পিগমেন্টেড কালার ভ্যারিয়েশন থাকছে প্রতিটি প্যালেটে। নিউট্রাল, গোল্ডেন, ব্রাউনিশ টোনের কালার পছন্দ হলে বেছে নিতে পারেন নিরভানার Touch Me Not প্যালেটটি। পিংকিশ, সফট ও ন্যাচারাল শেইডসের জন্য নিরভানার You Go Girl প্যালেটটি বেস্ট অপশন। ম্যাট, গ্লিটারি, শিমারি- সব ধরনের আইশ্যাডো আছে এতে।
২) কাজল ও আইলাইনার
কাজল বা আইলাইনার ছাড়া মেকআপ লুক ইনকমপ্লিট থেকে যায়। Nirvana Color Liquid Matte Eyeliner দেয় ম্যাট ফিনিশ উইথ আল্টিমেট পারফেকশন। সেই সাথে এটি লং লাস্টিং ও ওয়াটার রেজিস্ট্যান্ট। ডিপ ব্ল্যাক ও লিকুইড Nirvana Color Waterproof Liquid Eyeliner Deep Black একবার অ্যাপ্লাই করলেই পেয়ে যাবেন স্ম্যাজ প্রুফ ও লং লাস্টিং ফিনিশ! এই দু’টো আইলাইনারের দামটাও একেবারে সাধ্যের মধ্যে। আর বাজেট ফ্রেন্ডলি কাজল কিনতে চাইলে আপনার জন্য বেস্ট অপশন হচ্ছে Nirvana Color KOHL Eyeliner Pencil। এতে শার্পনারও দেওয়া আছে।
৩) মাশকারা
মাশকারা অ্যাপ্লাই করলে আইলুকে ড্রামাটিক চেঞ্জ আসে। যেকোনো আইলুককে পারফেক্টলি ফুটিয়ে তুলতে মাশকারা অ্যাপ্লাই না করলেই নয়। Technic Mega Lash Water Resistant Mascara, Wet n Wild Mega Protein Waterproof Mascara, Technic Mega Lash Volumising Mascara বাজেট ফ্রেন্ডলি প্রাইসে এগুলো পেয়ে যাবেন। ডাবল কোটিং করলে আইল্যাশে বেশ ভলিউম আসবে, সেক্ষেত্রে ফেইক আইল্যাশ ইউজ না করলেও চলবে।
লিপস্টিক
ফেইস আর আইমেকআপ তো কমপ্লিট হলো, এবার আসি লিপস্টিকে। Nirvana Color Liquid Matte Lipstick এর ৮টি ডিফারেন্ট শেইডস আছে, এশিয়ান স্কিনটোনে এই কালারগুলো ইজিলি মানিয়ে যায়। এগুলো ট্রান্সফার প্রুফ, ম্যাট ও লং লাস্টিং। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে দামটাও হাতের নাগালে, স্টুডেন্টরাও পারচেজ করতে পারবে।এছাড়া wet n wild MegaLast Liquid Catsuit Matte Lipstick এর শেইডগুলোও আমার বেশ পছন্দের।
এই তো গেলো বেসিক মেকআপ স্টেপস। এছাড়াও মেকআপ সেটিং স্প্রে, গ্লিটার আইলাইনার, ফেইক আইল্যাশ, লুজ পাউডার, মেকআপ ব্রাশ, বিউটি ব্লেন্ডার এমন আরও অনেক কিছুই আছে। সেগুলো নিয়ে অন্য একদিন লিখবো! মেকআপ সম্পর্কে বেসিক একটা আইডিয়া পেলেন আশা করি।
সাধ্যের মধ্যেই বেস্ট কোয়ালিটির অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্টস পেয়ে যাবেন সাজগোজে। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ