দুধ একটি পুষ্টিকর খাবার। এমনিতে এতে ক্যালসিয়াম-এর অভাব পুরোপুরি পূরণ না হলেও দুধে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যা আপনার শরীরের গঠন এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে। তবে নানা কারণেই অনেকে এমনিতে দুধ খেতে চান না। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়সী মানুষের মাঝেই শুধু দুধ পানে অনীহা দেখা যায়। কারো বিস্বাদ লাগে, কেউ গন্ধের জন্য খেতে চান না, কারো বা এমনিতেই খেতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উৎস হিসেবে দুধ তো আপনাকে কম বেশি খেতেই হবে! তাই যদি এমনিতে দুধ খেতে ইচ্ছে না করে, তাহলে সেটাকে অন্য কিছু বানিয়ে খান, দুধের স্বাদ বৃদ্ধি করে নিন। আজকের লেখায় আমরা দুধের স্বাদ বৃদ্ধি করে এটিকে সকলের জন্য সুস্বাদু খাবার আইটেম বানানোর কৌশল শিখে নিবো। আজকে শিখে নিবো কিভাবে তৈরি করবেন কাজুবাদামের মিল্কশেক ২টি পদ্ধতিতে। এতে স্বাদের পাশাপাশি রয়েছে দুধের পুষ্টিগুণও। তো চলুন দেখে নেই কিভাবে তৈরি করবেন মজাদার কাজুবাদামের মিল্কশেক ।
কাজুবাদামের মিল্কশেক বানানোর পদ্ধতি
১ম পদ্ধতি
উপকরণ-
প্রস্তুত প্রণালীঃ
(১) প্রথমে কাজুবাদামগুলোকে অন্তত ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে বাদামগুলো নরম হবে। এরপর বাদাম থেকে পানি শুকিয়ে নিন।
(২) বাদাম শুকিয়ে নেয়ার পর ব্লেন্ডারে ৪ কাপ পানি দিন, তারপর বাদামগুলো ঢেলে দিয়ে এর সাথে আধা চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স যোগ করুন।
(৩) তারপর ব্লেন্ডারে বাদাম, ভ্যানিলা এসেন্স ভালোমত ব্লেন্ড করে নিন। এতে উপাদানগুলো একে অন্যের সাথে ভালো করে মিশে যাবে। যদি স্বাদ বর্ধন করতে চান তবে এর সাথে মধু কিংবা চিনি প্রয়োজন অনুসারে যোগ করতে পারেন। এতে বাদামের মিশ্রণটি মিষ্টি হবে।
(৪) সাধারণত চার কাপ পানি আদর্শ পরিমাণ হিসেবে ধরা হয়। আপনি চাইলে বাদাম ও অন্যান্য উপাদানের পরিমাণ হিসেব করে পানি কম বেশি দিতে পারবেন।
(৫) এবার একটা মাঝারি আকারে বোলে দুধ ঢেলে নিন। তারপর বোলের মুখে একটি ছাঁকনি ধরুন। ছাঁকনি না হলে পরিষ্কার পাতলা কাপড় হলেও চলবে।
(৬) ব্লেন্ডার জগ থেকে বাদামের মিশ্রণ আস্তে আস্তে ছাঁকনিতে ঢালতে থাকুন। এতে মিশ্রণের তরল অংশ দুধের সাথে মিশবে, কিন্তু শক্ত অংশগুলো ছাঁকনিতে রয়ে যাবে।
(৭) তারপর হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে শক্ত অংশগুলো ভালো করে চিপে রস ছাঁকনির মধ্য দিয়ে ফেলে ভালো করে ছেঁকে দুধে মেশান।
(৮) এবার একটি কাঠের বা ধাতব পরিষ্কার চামচ দিয়ে দুধ আর বাদামের রস ভালো করে মিশিয়ে নিন। যদি চিনি প্রয়োজন হয়, আরেকটু চিনি মেশাতে পারেন।
হয়ে গেলো মজাদার মিল্কশেক। ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন, অথবা পরিষ্কার মুখ বন্ধ জগ কিংবা বোতলে ভরে সংরক্ষণ করুন।
২য় পদ্ধতি
উপকরণ-
- শুকনো কাজুবাদাম- ১ কাপ
- পানি- ৩ কাপ
- ভ্যানিলা এসেন্স- ১/২ চা চামচ
- শুকনো কোরানো নারকেল– ১/২ কাপ
- চিনি অথবা মধু- পরিমাণমত
প্রস্তুত প্রণালীঃ
(১) প্রথমে কাজুবাদামগুলো ভালোমতো পরিষ্কার করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
(২) তারপর ছুরি দিয়ে বাদামগুলোকে কুচি কুচি করে কেটে নিন। যত বেশি কুচি করা যায়, তত ভালো। এই বাদামকুচি প্লাস্টিকের মুখবন্ধ বয়ামে ভরে অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। যখন মিল্কশেক বানাতে চাইবেন, বয়াম থেকে বাদামকুচি নিয়ে দ্রুত বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
(৩) এখন মিল্কশেক বানাতে পরিমাণমতো বাদাম কুচি ব্লেন্ডার-এ দিন। সাথে পরিমাণমতো পানি, ভ্যানিলা এসেন্স এবং স্বাদ বৃদ্ধির জন্য কোরানো নারকেল দিন। মিষ্টির জন্য চিনি অথবা মধু ব্যবহার করুন।
(৪) এবার মিশ্রণটিকে ব্লেন্ডার-এ ভালোমতো ব্লেন্ড করে নিয়ে আগের পদ্ধতিতে দুধের সাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর সাথে সাথে পরিবেশন করুন কিংবা বোতলে ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
এইতো তৈরি হয়ে গেলো সুস্বাদু কাজু বাদামের মিল্কশেক। আপনি চাইলে জাফরান দিয়েও পরিবেশন করতে পারেন। এই মিল্কশেক বোতলে করে ফ্রিজে ৪ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত রাখা সম্ভব। তবে পরিবেশনের সময় বোতল ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন সকালে নাস্তার সাথে একগ্লাস কাজুবাদামের মিল্কশেক আপনার শরীরের পুষ্টি উপাদান যেমন পূরণ করবে, ঠিক তেমনি এর অসাধারণ স্বাদ আপনার দুধ খাওয়ার অনীহা দূর করবে।
ছবি- সংগৃহীত: ইউটিউব