অনেকের শখ থাকে নানা রকম প্রসাধনী কেনা ও সংগ্রহে রাখা। কিন্তু যে পরিমাণে কেনা হয়, তত কিন্তু ব্যবহার করা হয় না। ফলে প্রসাধনী মেয়াদ উত্তীর্ন হয়ে যায়। অনেকেই মেয়াদ আছে কি নেই সেদিকে খেয়ালও করে না। বছরের পর বছর ব্যবহার করতে থাকেন। মেয়াদ উত্তীর্ন এসব প্রসাধনী ব্রণ, ডার্মাটাইটিস, র্যাশ সহ নানা রকম চর্মরোগের কারণ হয়। তাই প্রসাধনী ব্যবহার করা উচিত মেয়াদ থাকতেই।
অনেক পণ্যের গায়ে মেয়াদ উল্লেখ থাকে না আর থাকলেও আমাদের পণ্য ব্যবহারের ভুলত্রুটির উপর নির্ভর করে উল্লেখিত মেয়াদের চেয়ে পণ্যটি আরও কম সময় ব্যবহার করা উচিত। আসুন জেনে নিই কোন প্রসাধনীটি কতদিন ব্যবহার করা উচিত।
ফাউন্ডেশনঃ
-লিকুইড ফাউন্ডেশন-১ বছর।
-ক্রিম ফাউন্ডেশন-১ বছর।
-মিনারেল ফাউন্ডেশন-১ ১/২-২ বছর।
ব্লাশঃ
-পাউডার ব্লাশঃ ১ ১/২-২ বছর।
-ক্রিম ব্লাশঃ ১ বছর।
ফেসপাউডারঃ
-লুজ পাউডারঃ ২ বছর
-প্রেসড পাউডার- ২১/২ – ৩ বছর
কনসিলারঃ
-লিকুইড কন্সিলার-১ বছর
-পাউডার কন্সিলার- ১ ১/২ – ২ বছর
আই মেক-আপঃ
-লিকুইড আইলাইনারঃ ৪-৫ মাস
-মাসকারাঃ ৩মাস
-কাজলঃ ৩মাস
-পেন্সিল আইলাইনারঃ রিট্রাক্টেবল- ৫-৬ মাস, যেগুলো শার্প করতে হয়-যতদিন মেয়াদ থাকে।
আইশ্যাডোঃ
ক্রিম আইশ্যাডো-৭মাস
পাউডার আইশ্যাডো- ১- ১ ১/২ বছর।
লিপ মেক-আপঃ
লিপ লাইনারঃ ৬ মাস
লিপস্টিক/লিপগ্লসঃ ১ বছর
ফেস ক্রিম/বডি লোশনঃ ১ বছর
ফেসওয়াশঃ ১ বছর
মেক-আপ ব্যবহার করতে যেসব ব্রাশ বা স্পঞ্জ ব্যবহার করবেন সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন যাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে না পারে।
ফাউন্ডেশন ব্রাশঃ প্রতিবার ব্যবহারের পর পরিষ্কার করুন।
আইশ্যাডো ব্রাশঃ যদি ক্রিম/জেল আইশ্যাডো ব্যবহার করেন তাহলে প্রতিবার ব্যবহারের পর পরিষ্কার করুন।
পাউডার আইশ্যাডোর ক্ষেত্রে সপ্তাহে ১ দিন পরিষ্কার করলেই চলবে।
ব্লাশ ব্রাশঃ সপ্তাহে ১ দিন।
লিপ/আইলাইনার ব্রাশঃ প্রতিবার ব্যবহারের পর।
এছাড়াও আপনার লিপস্টিক, ফেসপাউডার, ব্লাশ, ব্রোঞ্জারের উপরের অংশ টিস্যু দিয়ে হালকা ভাবে মুছে নিন। সম্ভব হলে মাসে একবার টিস্যুতে ৭০% অ্যালকোহল নিয়ে আপনার প্রসাধন সামগ্রী পরিষ্কার করুন। এতে প্রসাধনী ব্যাকটেরিয়া মুক্ত থাকবে ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
-যদি প্রসাধনীর রং, গন্ধ, কার্যকারিতায় কোন পরিবর্তন দেখেন বা উপরে সাদা, ধূসর কোন আস্তর পড়ে থাকে তাহলে সেটি আর ব্যবহার করবেন না।
-যত দামীই হোক না কেন মেয়াদ না থাকলে সেই প্রসাধনী ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনার ত্বক এগুলোর চাইতে অনেক বেশি দামী।
-চেষ্টা করুন নিজে দেখে প্রসাধনী কিনতে।
অনেক ক্ষেত্রে পন্যের গায়ে মেয়াদ উল্লেখ থাকে না বা সঠিক মেয়াদ ও পণ্যটির ব্যাচ নম্বর কত ও আর কতদিন ব্যবহার উপযোগী সেগুলো জানার প্রয়োজন হয়।
লক্ষ্য করলে দেখবেন সব পণ্যের গায়ে একটি কোড নম্বর উল্লেখ থাকে। কোড নম্বরের মাধ্যমে পণ্যটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানা সম্ভব। কীভাবে? সেজন্য রয়েছে কসমেটিক্স ক্যালকুলেটর। এটি মূলত একটি সফটওয়্যার। যার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনীর ব্যাচ কোড সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব।
আপনার পণ্যের গায়ে উল্লেখিত কোডটি কসমেটিক্স ক্যালকুলেটরে বসালেই পেয়ে যাবেন পণ্যের মেয়াদ ও এর ভ্যালিডিটি। প্রসাধনী ব্যবহারে সতর্ক হোন। সুস্থ থাকুক আপনার ত্বক।
লিখেছেনঃ মৌসুমী তানিয়া
ছবিঃ আইলিপফেইস.কম