আন্ডার আই ডার্ক সার্কেল অথবা চোখের নিচের কালো দাগ কথাটার সাথে মোটামুটি আমরা সবাই পরিচিত তাই না? এই ডার্ক সার্কেল ঢাকতে আমাদের কত প্রোডাক্টই না ব্যবহার করতে হয়। খুব সহজেই কনসিলার বা ইয়েলো কারেক্টর দিয়ে সেটা ঢেকে ফেলা যায়। কিন্তু কেন হয় এই ডার্ক সার্কেল তা কি কখনো চিন্তা করে দেখেছি? চলুন আজকে না হয় এই সমস্যা নিয়ে একটু গভীরে আলোচনা করি!
ডার্ক সার্কেল আসলে কী?
আমাদের চোখের আশপাশে রক্তের ছোট ছোট কৌশিকনালী বা ক্যাপিলারিস আছে, যা আমাদের চোখের চারপাশের কোষগুলোকে অক্সিজেন সরবরাহ করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই ক্যাপিলারিগুলো ফেটে যেতে পারে। আর এই ক্যাপিলারি ব্লিডিং এর জন্যই চোখের চারপাশে ডার্ক দেখায়।
চলুন এবার দেখে নেই কী কী কারণে এই ক্যাপিলারি ফেটে যেতে পারে!
ডার্ক সার্কেল হবার কারণ
১) আয়রন ডিফিশিয়েন্সি
যাদের রক্তে আয়রনের পরিমাণ কম, তাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন একটুতেই ভেঙ্গে যায়। যেহেতু হিমোগ্লোবিনের কাজ ক্যাপিলারির মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেন পৌঁছে দেয়া, তাই হিমোগ্লোবিন ভেঙ্গে গেলে চোখের চারদিকে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। ফলাফল স্বরূপ চোখের আশপাশের চামড়া কালচে দেখায়।
২) স্ট্রেস
ছোটবেলায় এমন কতবার হয়েছে, খেলতে গিয়ে ব্যথা পেয়ে কালশিটে পড়ে যায় নি! ধরে নেন স্ট্রেস আমাদের মনের ব্যথার মতই। যখনি আপনি স্ট্রেসে থাকেন তখন আপনার শরীরের ভাইটাল অর্থাৎ মেইন অর্গানগুলোতে রক্ত প্রবাহ বেশি থাকে। আপনার ফেইস থেকে রক্ত প্রবাহ কিছুটা হলেও কমে যায়। স্ট্রেসের কারণেও চোখের ক্যাপিলারি ফেটে গিয়ে স্কিনের নিচে রক্তক্ষরণ হতে পারে। আর তখনি বেগুনি বা নীলাভ রঙ দেখা যায়, যেটাকে প্রচলিত ভাষায় আমরা ডার্ক সার্কেল বলি। তাই মানসিক চাপ বা স্ট্রেস একটু কম নিয়ে চেষ্টা করুন সময়টাকে উপভোগ করার।
৩) জোরে চোখ ঘষা
মেকআপ তুলতে গিয়ে হোক আর যেকোন কারণেই হোক অসাবধানতাবশত চোখে খুব বেশি প্রেশার দিয়ে ফেললে চোখের কৌশিকনালিকাগুলো ভেঙ্গে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আর সেই রক্ত অক্সিডাইজ হয়ে কালচে হয়ে গেলেই দেখা যায় ডার্ক সার্কেল।
৪) চশমার ফ্রেম
অনেক ক্ষেত্রে অনেক লম্বা সময় ধরে চশমা পরে থাকলে ফ্রেমের ভারের জন্য ক্যাপিলারি ভেঙ্গে যায়। ফলাফল ডার্ক সার্কেল। তাই চেষ্টা করুন হালকা চশমার ফ্রেম ব্যবহার করতে। আর সারাদিন টানা চশমা না ব্যবহার করে মাঝে মাঝে একটু খুলে রাখুন।
৫) ক্লান্তি
যারা ডার্ক সার্কেল এর জন্য ঘুম হারাম করে ফেললেন, তারা এবার একটু ঘুমের দিকে নজর দিন। রাত জেগে আর টিভি শো না হয় না-ই দেখলেন, গেমিং-টাও না হয় ৮টার মধ্যে শেষ করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘন্টা না ঘুমালে চোখের কালি নিয়ে চিন্তা করে লাভ হবে না।
৬) সান ড্যামেজ
সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রে নিয়ে তো কম আর্টিকেল পড়েন নি! এই সূর্য রশ্মি স্কিনের জন্য যেমন ভয়াবহ ঠিক তেমনি চোখের জন্যও। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি আপনার চোখের আশপাশের পাতলা স্কিনের জন্য বেশ ক্ষতিকর। তাই চেষ্টা করুন সানগ্লাস ব্যাবহার করতে।
আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো প্রোডাক্ট কিনতে পারেন অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে। আবার যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার এ অবস্থিত সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ থেকেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি!
তো এই ছিল ডার্ক সার্কেল হবার পেছনের গল্প! আশা করি উপরের ব্যাপারগুলো খেয়াল রাখলে কিছুটা হলেও হেল্প হবে।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; সাটারস্টক