লিপস্টিক শপিং গাইড - Shajgoj

লিপস্টিক শপিং গাইড

lipstick shopping

মেকআপ করতে যারা ভালোবাসেন বা যারা বিগিনিয়ার, লিপস্টিক কেনার সময় কনফিউজড হয়ে যাওয়া, কোনটা কিনবেন বুঝতে না পারাটা তাদের জন্য খুবই কমন সমস্যা।আমি নিজেও লিপস্টিক কিনতে যেয়ে কোনটা নেব আর কোনটা নেবনা এই ব্যাপারে কনফিউজড হয়ে যাই। ছবিতে হয়ত প্রিয় কোন সেলিব্রিটির ঠোঁটে হালকা গোলাপি রঙা কোন লিপস্টিক দেখে আপনারও ইচ্ছে হল ঐ রঙের লিপস্টিক দেওয়ার। ঘুরে ঘুরে হয়ত কিনেও ফেললেন, কিন্তু বাড়িতে এসে ঠোঁটে লাগানোর পরে দেখলেন রংটা আপনার ঠোঁটে একদম ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে, স্যুট করছেনা মোটেও। অগত্যা মন খারাপ করা ছাড়া আর কিছু করার থাকেনা। অন্যের দেখাদেখি লিপস্টিক কিনে পরে আফসোস করেননি এরকম কাউকেই হয়ত পাওয়া যাবেনা। নিজের স্কিন টোন, ঠোঁটের শেপ, লিপস্টিকের পিগমেন্টেশন আর কোয়ালিটি সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা থাকলে নিজের জন্য মানানসই লিপস্টিক কেনা বেশ সহজ হয়ে যায়। আজ আপনাদের এই ব্যাপারে ধারণা দেওয়ার জন্যই এই আর্টিকেল লেখা।

প্রথমেই আসি লিপস্টিকের টেক্সচারের ওপর। লিপস্টিক কয়েক ধরনের হয়

Sale • Pigmentation, Skin cafe, Face Primer

         -ফুল ম্যাট

         -সেমি ম্যাট/ক্রিমি

         -গ্লসি/লিকুইড

         -ফ্রস্টেড

         -স্যাটিন

         -শিয়ার

    আমি যখন লিপস্টিক ব্যবহার করা শুরু করি, নিজের  স্কিনের সাথে ম্যাচ করবে কিনা চিন্তা না করেই যে রঙ ভালো লাগত চোখ বুজে তাই কিনে ফেলতাম। পরে সেগুলো আর ইউজ করা হতো না মানানসই না হওয়ার কারণে।  ঠোঁটের আকার, ত্বকের ধরনের ওপর ভিত্তি করে লিপস্টিক কেনা উচিত। যাদের স্কিন অয়েলি তারা যদি গ্লসি লিপস্টিক ব্যবহার করেন তবে পুরো মুখেই একটা অয়েলি লুক এসে যায় যা মেকাপ করার পরেও দেখতে ভালো না লাগার কারণ।  তাই অয়েলি স্কিনের জন্য ম্যাট বা সেমি ম্যাট লিপস্টিকই ভালো। আর ড্রাই স্কিনের অধিকারীরা গ্লসি, শিমারি বা ফ্রস্টেড টেক্সচারের লিপস্টিক গুলো অনায়াসেই ব্যবহার করতে পারেন। নরমাল স্কিন যাদের, তাদের সবচেয়ে সুবিধা কারণ সব রকম লিপস্টিকই তারা লুক চেঞ্জ করার জন্য ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। জেনে নিন কোন ধরনের লিপস্টিক কোন ত্বকের জন্য মানানসই –

         ফুল ম্যাট – এপ্লাই করার সময় বা এপ্লাইয়ের পরপরই একদম ড্রাই হয়ে ম্যাট লুক দেয়। অনেক বেশি পিগমেনটেড হয়ে থাকে। তবে ইউজ করার  ৩-৪ ঘণ্টা পরে ঠোঁটে ক্র্যাক হয়ে যায় তাই ইউজ করার পূর্বে ঠোঁটে সামান্য লিপবাম বা ভ্যাসলিন দিয়ে নিতে হয়। অয়েলি স্কিনের জন্য বেস্ট কারণ ঘেমে লিপস্টিক ছড়িয়ে যায়না।

         সেমি ম্যাট/ক্রিমি–এটাও ম্যাট, তবে ময়েশ্চারাইজার যুক্ত থাকে বলে আলাদা করে লিপ বাম দেওয়ার প্রয়োজন হয়না। ক্রিমি টেক্সচারের লিপস্টিক শুষ্ক ত্বক বা ঠোঁটের অধিকারীদের জন্য ভালো। অয়েলি স্কিন যাদের তারাও ইউজ করতে পারেন তবে পুরু ঠোঁট হলে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

         গ্লসি/লিকুইড–অনেক বেশি শাইনি অথবা গ্লিটারি আর পাতলা টেক্সচারের হয়ে থাকে।    রাতের গ্ল্যামারাস কোন লুকে আলাদা দ্যুতি আনতে দিতে চাইলে অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন। কাল ভেদে অয়েলি স্কিনেও ইউজ করা যেতে পারে, তবে ড্রাই বা নরমাল স্কিনে রেগুলার ইউজ করতে পারেন গ্লসি বা লিকুইড লিপস্টিক।

         ফ্রস্টেড – শিমার আর শাইনিং ফিনিশের লিপস্টিক। মেটালিক গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জের প্রাধান্য দেখা যায় এসব লিপস্টিকে। পাতলা বা চিকন ঠোঁটের অধিকারীদের জন্য আদর্শ কারণ ব্যবহারে আপাত দৃষ্টিতে ঠোঁটকে একটু ভরাট দেখাতে সাহায্য করে।

         স্যাটিনপিগমেনটেড আর স্মুদ টেক্সচারের হয়। পুরোপুরি ম্যাট লুক দেয়না, খুব সামান্য ক্রিমি লুক আসে। নরমাল স্কিন যাদের বা যারা ফুল ম্যাট লিপ এড়িয়ে যেতে চান তারা ইউজ করতে পারেন।

         শিয়ার- ময়েশ্চারাইজার যুক্ত; খুব হালকা আর স্বচ্ছ রঙা কাভারেজ দেয়, টিনটেড লিপ বামের কাজ করে। যাদের ঠোঁট সারা বছর শুষ্ক থাকে বা ফেটে যায়, তাদের জন্য ভালো।

    কোন ত্বকে কোন রঙঃ

    কোন স্কিন টোনের জন্য কোন রঙের লিপস্টিক ভালো লাগবে? সবচেয়ে কমন প্রশ্ন। কোন রঙ মানাবে সেটা বলতে গেলে প্রথমেই আসতে হবে স্কিনের আন্ডার টোনের কথায়। ওয়ার্ম আন্ডার টোনের অধিকারীদের কমলা বা লালচে রঙ ঘেষা গোল্ডেন, ব্রাউন, অরেঞ্জ টোনের লিপস্টিক গুলোতে চমৎকার দেখায়। আর কুল আন্ডার টোনের অধিকারীদের সিলভার, ব্লু, পার্পল টোনের লিপস্টিকে দারুণ মানায়।

    lipstick 02ছবিতে দেখুন একই রঙের লিপস্টিক আলাদা আলাদা স্কিন টোনে কেমন দেখায়।

    এবার আসি স্কিন টোনের কথায়। শ্যামলা ত্বকে যেই শেডটা আপনি ন্যাচারাল ন্যুড কালার হিসেবে ইউজ করছেন, ফর্সা ত্বকে তা মিডিয়াম ব্রাউন কালার বলে মনে হবে। আবার মিডিয়াম টোনে ফুশিয়া কালার সুন্দর ফুটে উঠলেও একটু চাপা গায়ের রঙে সেটা অনেক বেশি কটকটে মনে হবে। নিচের এই চার্টটা দেখলেই বুঝতে পারবেন ন্যুড, সফট, বোল্ড কালার হিসেবে আপনার স্কিন টোন অনুযায়ী কোন রঙ বেছে নেবেন।

    lipstick 03

    র্সা ত্বকের জন্যঃ লাইট বেইজ, পিচি শেডের পিঙ্ক, অরেঞ্জ রেড

    উজ্জ্বল শ্যামলা ত্বকের জন্যঃ লাইট ব্রাউন, ম্যাজেন্টা, অরেঞ্জ

    শ্যামলা ত্বকের জন্যঃ মিডিয়াম ব্রাউন, কোরাল, ডার্ক রেড

    গাঢ় বা চাপা রঙের জন্যঃ চকলেট ব্রাউন, পার্পল টোনড পিঙ্ক, ডিপ মেরুন

    লিপস্টিক কেনার সময়ঃ

    ভালো ব্র্যান্ডের লিপস্টিক কিনতে চাইলে চলে আসতে পারেন যমুনা ফিউচার পার্কের স্যাফায়ার এ। এছাড়া অনলাইন শপগুলোতেও ঢুঁ মারতে পারেন। আর দেশে সহজ লভ্য লিপস্টিকের মধ্যে জর্ডানা, লা ফেম, আয়োনি; এই ব্র্যান্ড গুলো জনপ্রিয়।

    অনেকেই হাতে লিপস্টিক সোয়াচ করেন। হাতে দেওয়ার পর হয়ত কালারটা বেশ ভালো লাগবে, তবে আপনার হাত আর ঠোঁটের রঙ তো আর এক নাও হতে পারে। আপনি যদি ইয়ালো আন্ডার টোনের হন আর হাতের ত্বকে সোয়াচ করা কমলা রঙা লিপস্টিক খুবই ভালো লাগবে। তবে ঠোঁটে যদি কালচে হয় সেই কমলা রঙা লিপস্টিকই আপনার সাজের বারোটা বাজিয়ে দেবে! অতএব হাতে বা অন্য কোনখানে নয় বরং ঠোঁটেই লিপস্টিক লাগিয়ে দেখুন।

    কোন লিপস্টিক কেনার সময় যদি লিপস্টিকের সিল ওপেন করা থাকে (টেস্টার ছাড়া) অথবা তা থেকে যদি কোন রকম গন্ধ আসে তাহলে বুঝবেন সেটা এক্সপায়ারি ডেট পার হয়ে গেছে। ভুলেও কিনবেন না সেটা। লিপস্টিকের মেয়াদ থাকে ১-১.৫ বছরের মতো। এরপরে আর ইউজ করবেন না।

    আজকাল প্রায় সব বড় কসমেটিকস শপে টেস্টার থাকে। ঠোঁটে লাগানোর পূর্বে টিস্যু পেপার দিয়ে লিপস্টিকটা মুছে নিন, এতে ব্যাকটেরিয়া বা ঠোঁটে কোন রকম ইনফেকশন হবার ভয় থাকবেনা। এরপর ঠোঁটে লাগিয়ে দেখুন মানাচ্ছে কিনা। এরপরই সেটা কেনার সিদ্ধান্ত নিন।

    লিপস্টিকের ব্যবহারের ক্ষেত্রেঃ

    অনেকের ঠোঁটে কালো দাগ থাকার কারণে লিপস্টিকের আসল রঙটা ফুটে ওঠেনা। তারা ত্বকের বেইজ করার সময় ঠোঁটের ওপর ফাউনডেশন আর কন্সিলার দিয়ে দাগ ঢেকে নিন।

    অনেক সময় ঠোঁটের মরা চামড়া ওঠে যার কারণে লিপস্টিক ঠিক মত বসে চায়না বা ঠোঁট ফেটে যায়। সেক্ষেত্রে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস, অলিভ অয়েল আর একটু চিনি দিয়ে হালকা করে স্ক্রাব করে নিন। এরপর ভ্যাসলিন লাগিয়ে তারপর লিপস্টিক দিন। নিয়মিত স্ক্রাব করলে ঠোঁটের কালো দাগও অনেকটা হালকা হয়ে যায়।

    আরও একটা কথা না বললেই নয়, আর সেটা হল অনেকেরই ধারণা তাকে বোল্ড কালারে মানায়না বা ন্যুড কালারে ফ্যাকাসে দেখায়। কেউ কেউ এমনও বলেন যে শুধু মাত্র ফর্সা ত্বকেই সব রঙই মানায়। ধারণাগুলো সম্পূর্ণ ভুল। ফরসা ত্বকে সব রঙ হয়ত ফুটে ওঠে কিন্তু তাই বলে সব রঙই মানায় এমনটি কিন্তু একদম নয়। আর এই আর্টিকেল পড়ার পরে আপনি যদি আপনার জন্য সঠিক শেডটি বেছে নিতে পারেন আর কালারগুলো ক্যারি করতে পারেন, তবে গাঢ় থেকে হালকা সব ধরনের রঙই আপনার জন্য! ভালো থাকবেন সবাই।

    লিখেছেনঃ চৌধুরী তাহাসিন জামান

    ছবিঃ টুফেসড ডটকম, জেমামিলার ডটকম, পিঙ্কপিওনিজ

    11 I like it
    0 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort