মন্দির হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়। আমাদের দেশে হিন্দুদের উপাসনা করার জন্য অনেকগুলো মন্দির রয়েছে। হিন্দুধর্মাবলম্বী ছাড়াও ভ্রমনপিপাসু পর্যটকরা এইসব মন্দিরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটির দিনগুলোতে ঘুরে আসে। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো জামালপুর জেলা শহরের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী মন্দির দয়াময়ী মন্দির সম্পর্কে। চলুন তাহলে জেনে নেই ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির সম্পর্কে বিস্তারিত।
দয়াময়ী মন্দির পরিচিতি
১৬৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জামালপুর জেলা শহরের জিরো পয়েন্টে প্রায় ৬৫ শতাংশ জমির উপর নির্মিত হয় ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির। নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর আমলে শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরি এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি প্রায় ৩২১ বছর পুরোনো মন্দির। এই মন্দিরে প্রতিদিনই বিভিন্ন পূজা অর্চণার আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং প্রতি বছর অষ্টমী মেলায় আগত হিন্দুধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন দেবতার উদ্দেশ্যে মান্নত করে থাকেন। দয়াময়ী মন্দিরে আলাদাভাবে শিব, নাটমন্দির, কালি এবং মনসা দেবীর মন্দির স্থাপনা করা হয়েছে। এই মন্দিরে রয়েছে শতবর্ষ পুরনো কারুকার্য খচিত বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম। এই চিত্রকর্ম এবং মন্দিরের অপার সৌন্দর্য দেখতে হাজার হাজার পর্যটক প্রতিবছর এই মন্দিরে আসেন। এই পর্যটকদের জন্য এই ঐতিহাসিক মন্দিরটি সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ভ্রমনপিপাসুদের জন্য খুবই আকর্ষনীয় জায়গা এই দয়াময়ী মন্দির।
কিভাবে যাবেন
দয়াময়ী মন্দির যেতে চাইলে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে প্রথমেই জামালপুর যেতে হবে। জামালপুর ট্রেন কিংবা বাস দিয়ে যেতে হবে। ঢাকা থেকে জামালপুর যেতেও বাস কিংবা ট্রেন করে যেতে হবে। তবে ট্রেনে করে যাওয়াই সবচেয়ে সুবিধাজনক। এক্ষেত্রে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তিস্তা, যমুনা, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস এবং ব্রহ্মপুত্র ট্রেনে করে জামালপুর যেতে পারবেন।
বাস করে যেতে চাইলে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে এনা, মহানগর কিংবা রাজীব পরিবহণে করে যেতে পারেন।
জামালপুর যাওয়ার পর সেখানে রিক্সা কিংবা ইজিবাইক পেয়ে যাবেন। এইসব রিক্সা কিংবা ইজিবাইক ভাড়া করে সরাসরি পৌর শহরের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত ঐতিহাসিক দয়াময়ী মন্দিরে পৌঁছে যাবেন।
কোথায় থাকবেন
পৌর শহরে থাকার তেমন কোন ব্যবস্থা না থাকলেও জামালপুরে বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। জিরো পয়েন্টে অবস্থিত ঐতিহাসিক দয়াময়ী মন্দির ঘুরে এসে আপনি চাইলে জামালপুরে অবস্থিত আবাসিক হোটেলে থাকতে পারেন। এছাড়াও শহরে ডাকবাংলো রয়েছে চাইলে অনুমতি নিয়ে সেসব ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন।
কোথায় খাবেন
জামালপুর কিছু ভালো মানের খাবারের হোটেল, কফিশপ এবং রেস্টুরেন্ট রয়েছে। পৌর শহরে মন্দির দেখে এসে আপনি চাইলে এইসব হোটেল, কফিশপ কিংবা রেস্টুরেন্টে গিয়েও খেতে পারেন। এছাড়াও লোকাল কিছু হোটেল রয়েছে, এইসব হোটেলে খাবারের মান খুব ভালো না হলেও চাইলে খেতে পারেন।
সামনে পূজা, এই পূজায় পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির।
ছবি- সংগৃহীত: অধিকার.নিউজ